ঝাড়খন্ডে প্রবল বৃষ্টিপাতের জের, মাইথন, পাঞ্চেতে বাড়ছে জলস্তর, জল ছাড়তে শুরু করল ডিভিসি

দুর্গাপুর, ১৬ সেপ্টেম্বর (হি.স.): নিম্নচাপের দরুন প্রবল বৃষ্টিপাত আসানসোল, ঝাড়খন্ডে। আর তার জেরে হু হু করে জলস্তর বাড়ছে মাইথন, পাঞ্চেত জলাধারে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন করে জল ছাড়া শুরু করল ডিভিসি। ফুলে উঠেছে দামোদর। ফলে আবারও বন্যার ভ্রুকুটি নিম্ন দামোদর উপতক্যায়। জল ঢুকতে শুরু করেছে দামোদর তীরবর্তী মানাচরে চাষ জমিতে।  প্রসঙ্গত, গভীর নিম্নচাপ ও সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখার জোড়া ফলায় প্রভাব পড়েছে বাংলা। তার দরুন টানা তিনদিন ধরে চলছে দফায় দফায় বৃষ্টি। দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই একনাগাড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আর এই নিম্নচাপের দরুন রবিবার রাত থেকে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে ঝাড়খন্ডে। জানা গেছে, রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর ২ টা পর্যন্ত মাইথন জলাধারে ২১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, পাঞ্চেতে ১৯১ মিলিমিটার, রঘুনাথপুরে মরশুমে এদিন সর্বোচ্চো বৃষ্টি হয়েছে ২৩১ মিলিমিটার, আসানসোল কালিপাহাড়ি ১৫৬ মিলিমিটার, দিশেরগড় ১৪১ মিলিমিটার, রানীগঞ্জ ৮২ মিলিমিটার, অন্ডাল ৮৪ মিলিমিটার, দুর্গাপুরে ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও সোমবার সকাল পর্যন্ত গত তিন দিনে আসানসোলে মোট ৩৩০ মিলিমিটার, বাঁকুড়ায় প্রায় ৩০০ মিলিমিটার এবং দুর্গাপুরে ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।  একনাগাড়ে বৃষ্টির দরুন মাইথন, পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়া শুরু করেছে ডিভিসি। ডিভিসি সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুর পর্যন্ত মাইথন জলাধারে ১০ হাজার ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। পাঞ্চেত জলাধারে ৪০৪ ফুট পর্যন্ত জলস্তর রয়েছে। মাইথনে ৪৮৬ ফুট জলস্তর রয়েছে। অন্যদিকে তেনুঘাট উপত্যকায় প্রবল বৃষ্টি শুরু হওয়ায়, সেখানে জল ছাড়া শুরু করেছে ১৯ হাজার কিউসেক। ওই জল পাঞ্চেেত জলাধারে ঢুকলে, আবার সেখান থেকে আরও   বেশি   জল ছাড়া শুরু হবে। আবার মাইথন পাঞ্চেতের ওই জল ঢুকবে দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারেজে। যদিও এদিন দুপুর দুটো   পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারেজে প্রায় ৮৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।সন্ধ্যা পর্যন্ত সেটা ১লক্ষ কিউসেক ছাড়িয়ে যাবে।  ইতিমধ্যে নিম্ন দামোদর তীরবর্তী সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তারসঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওই মাইথন ও পাঞ্চেত দুই জলাধারের নিম্নে বেশ কিছু বেনিয়ন্ত্রিত নদী, নালা রয়েছে। ওইসব গাড়ুই, নুনী, তামলা, সিঙ্গারন, নদী নালার জল দামোদরে মিশছে। সব মিলিয়ে দামোদর ফুলে উঠতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে দামোদর উপরিভাগে তীরবর্তি দুর্গাপুর লাগোয়া বাঁকুড়ার সোনাইচন্ডীপুর গ্রামের চাষজমি জলমগ্ন। প্রায় ৩৫ টি পরিবার রয়েছে গ্রামে। দামোদর ফুলে ওঠায় প্লাবনের আতঙ্কে গ্রামবাসীরা। একই সঙ্গে চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দামোদর চরে প্রায় ৫০০ একরের ওপর কৃষিজমি রয়েছে জলমগ্ন। সারা বছরই ওইসব এলাকসয় বিভিন্ন রকম ফসলের চাষ হয়। আলু, পেঁয়াজ, মটর, ফুলকপি, বাঁধাকপি ছাড়াও বেগুন পটল, ভুট্টা চাষ হয়। পুজোর মুখে চরম লোকসানের মুখে চাষীরা। ডিভিআরআরসির সদস্য সচিব শশী রাকেশ বলেন,” প্রাকৃতিক দুর্যোগ। মাইথন, পাঞ্চেতে উপত্যকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। একইসঙ্গে তেনুঘাট থেকে জল ছাড়া শুরু করেছে। তারজন্য পাঞ্চেত জলাধারে জল ছাড়তে হচ্ছে। তেনুঘাটের জল পাঞ্চেতে এসে ঢুকবে। গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *