কলকাতা, ১৪ সেপ্টেম্বর (হি.স.): “কমরেড কলতান দাশগুপ্তের বেআইনি ও আক্রোশমূলক গ্রেপ্তারের ঘটনার আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করছি।” শনিবার সিপিআই (এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদক মহম্মদ সেলিম এক প্রেস বিবৃতিতে এ কথা জানান।
তিনি লিখেছেন, “যে ঘটনাক্রমের মধ্য দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাতে ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’-এর দাবিতে ঘটমান গণআন্দোলনকে বদনাম করার অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। এই ঘটনা দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলনের বদনাম করার জন্য বিজেপি সরকারের পূর্বে ব্যবহৃত কৌশলগুলির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, এবং ভীমা কোরেগাঁও মামলা বা দিল্লি দাঙ্গা মামলার মতো নকল ও জাল ইলেকট্রনিক ‘প্রমাণের’ ভিত্তিতে আন্দোলনকারীদের মিথ্যা অভিযোগে কারারুদ্ধ করার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এই জাতীয় কৌশলগুলি আরএসএস’এর ঘৃণ্য পদ্ধতির সুপরিচিত অংশবিশেষ।
পশ্চিমবঙ্গের শাসকরা, একই পদ্ধতির ব্যবহার করছে, স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে আর জি কর হাসপাতালে হিংসাত্মক আক্রমণ এবং প্রমাণ ধ্বংসের সুযোগ করে দিয়েছিল অপরাধীদের। শাসক দলের আইটি সেল এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল একই ভাষায় কথা বলেছেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন যে ঐ ঘটনা একটি নির্দিষ্ট সংগঠন, অর্থাৎ ডিওয়াইএফআই দ্বারা সংগঠিত হয়েছিল।
আজ অবধি, এই বক্তব্যের কোনও প্রমাণ দেওয়া হয়নি, কোনও ক্ষমা চাওয়া হয়নি এবং তদন্তটিই সংবাদমাধ্যমের থেকে চেপে যাওয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষনেত্রী গণআন্দোলনের বিরুদ্ধে আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স অপব্যবহারের কথা বলছেন, অথচ তাঁর দলেরই আইটি সেল ডিপফেক এবং সাজানো ক্লিপ ব্যবহারে পারদর্শিতা দেখাচ্ছে!
এটা একজন দৃঢ়চেতা তরুণ রাজনৈতিক কর্মীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়রানি এবং সমগ্র আন্দোলনকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার মানহানি ছাড়া আর কিছুই নয়।
আমরা কমরেড কলতান দাশগুপ্তকে নিঃশর্তে মুক্তি দেওয়ার জন্য রাজ্য পুলিশের কাছে দাবি জানাচ্ছি, এবং এই ধরনের মিথ্যা জাল ‘প্রমাণ’ যারা তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য মামলা দায়ের করার দাবি জানাচ্ছি। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের অপসারণ করা হোক এই দাবিতেও আমরা অটল আছি।
ঐক্যবদ্ধ জনগণ সর্বদা বিজয়ী হবেই!লালবাজারের কাছে রাতভর অবস্থান থেকে ফেরার সময় ভোরবেলা কমরেড কলতান দাশগুপ্তকে তোলা হয়েছে। একজন তরুণ কর্মীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর এটা একটি স্পষ্ট ঘটনা। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় বিজেপি সরকার যে কাজ করেছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার সেই পথই অনুসরণ করছে।”

