নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ সেপ্ঢেম্বর ৷৷ সাম্পতিক ভারী বর্ষণের ফলে আমাদের রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়৷ বন্যায় রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা ধবংসস্তুপে পরিণত হয়েছে৷ রাজ্যের ইতিহাসে এরকম বন্যা পরিস্থিতি কখনও সৃষ্টি হয়নি৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রাজ্যের বিপন্ন মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন৷ বিপন্ন মানুষের সহায়তায় রাজ্যের মানুষ ইতিহাস সৃষ্টি করেছে৷ আজ আগরতলা জেকশন গেইটস্থিত একদন্ত সামাজিক সংস্থা আয়োজিত স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতায় রাজ্য সরকার এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷
অনুষ্ঠানে মুখ্যমী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্পর্ণ অবগত আছেন৷ ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় আন্তঃমণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল রাজ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন৷ প্রতিনিধিদলটি দিল্লিতে গিয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে রিপোর্ট করবে৷ এনডিআরএফ তহবিল থেকে রাজ্যকে ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রাথমিকভাবে ৪০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে৷ মুখ্যমী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন, আরক্ষা দপ্তর, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, আপদা মিত্র, সিভিল ডিফেন্সের স্বেচ্ছাসেবক, সামাজিক প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি ত্রাণ সরবরাহ ও বিপন্ন মানুষের উদ্ধারে নিরলসভাবে কাজ করেছে৷
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রক্তদান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রক্তদানের কোনও বিকল্প নেই৷ রক্ত পৃথকীকরণের মাধ্যমে একজন রক্তদাতা ৪ জন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে সক্ষম৷ রক্তদান এবং রক্ত মজতের ক্ষেত্রে ভারসাম্য যাতে বজায় থাকে সেই বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একদন্ত সামাজিক সংস্থার এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী রক্তদান শিবির পরিদর্শন করেন ও রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন৷ রক্তদান শিবিরে ২২ জন স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন৷
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আগরতলা পুরনিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজমদার৷ উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান বলাই গোস্বামী, কর্পোরেটর রত্না দত্ত, টিসিএ সভাপতি তপন লোধ, ত্রিপুরা হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিহ্বল নন্দী মজমদার, ত্রিপুরা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের পেট্রন রতন সাহা, সমাজসেবী নাগাধিরাজ দত্ত প্রমুখ৷
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে একদন্ত সামাজিক সংস্থার পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকা, আগরতলা বুক সেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার ১১১ টাকা, দুর্গাচৌমুহনী ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ১৫ হাজার টাকা, নিউস্টার ক্লাবের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা, সোসাইটি অব ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে ৫ হাজার ১ টাকার চেক প্রদান করা হয়৷ এছাড়াও একদন্ত সামাজিক সংস্থার উদ্যোগে বস্ত্রদান কর্মসূচিও সংগঠিত হয়৷ মুখ্যমী ও উপস্থিত অতিথিগণ দুঃস্থদের মধ্যে বস্ত্রদান করেন৷
2024-09-02