বিশ্রামগঞ্জ বাজারে সিপিআইএম দলের মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিনিধি, বিশ্রামগঞ্জ, ১১ আগস্ট: বিশ্রামগঞ্জ বাজারে সিপিআইএম দলের মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত হয় রবিবার। লোকসভা নির্বাচনের পরে সর্বপ্রথম বিশ্রামগঞ্জ বাজারে বেশ বড় আকারে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মিছিল ও পথসভা সংঘটিত করল সিপিআইএম দল।রবিবার দিন ছিল বিশ্রামগঞ্জে সাপ্তাহিক বাজার। রবিবার  বিশ্রামগঞ্জের সাপ্তাহিক বাজারে দূরদূরান্ত থেকে প্রচুর পরিমাণে উপজাতি অংশের মানুষ বাজার করতে আসে। তাই রবিবার দিন বিশ্রামগঞ্জ বাজারে সিপিআইএম দল মিছিল ও পথসভা সংগঠিত করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বেলা বারোটায় বিশ্রামগঞ্জ বাজার স্ট্যান্ডে জাতীয় সড়কের উল্টোদিকে অবস্থিত সিপিআইএম সিপাহীজলা জেলা কমিটি এবং বিশ্রামগঞ্জ অঞ্চল কমিটির অফিস থেকে বিভিন্ন দাবি সনদ হাতে নিয়ে এবং গলায়  প্লেকার্ড ঝুলিয়ে কর্মী সমর্থকরা একটি মিছিল বের করে। প্রতিটি দলীয় কর্মী সমর্থকদের হাতে ছিল পতাকা এবং বিভিন্ন দাবি সনদ। জাঁকজমকপূর্ণ এই মিছিলটি প্রত্যেকটি কর্মী সমর্থকদের স্লোগানে মুখরিত ছিল।কর্পোরেট তুমি ভারত ছাড়, সি এ অতি দ্রুত বাতিল, ১২৫ তম সংশোধনী চলতি অধিবেশনে বাস্তবায়িত করতে হবে, বনাধিকার আইন অবিলম্বে বাস্তবায়িত করতে হবে এবং কৃষি উৎপাদন বাণিজ্য থেকে বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে দূরে থাকতে হবে এই শ্লোগানে মুখরিত ছিল মিছিলটি। মিছিল শেষে বিশ্রামগঞ্জ বাজার স্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয় এক পথসভা।মেলাঘর এলাকার দীর্ঘদিনের বাম নেতা গৌরাঙ্গ ঠাকুরতাকে সভাপতি করে শুরু হয় পথসভা। পথসভায় আলোচনা করতে গিয়ে সিপিআইএম সিপাহীজলা জেলা কমিটির সম্পাদক ভানুলাল সাহা বলেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে শাসক দলের প্রার্থীরা ভোটে হেরেছে। কৃষক সমাজ তাদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে শুধু আন্দোলনই করছে না তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছে।  যার ফলে দেখা গেছে তৃতীয়বার দেশের ক্ষমতায় সরকার এসেছে, কিন্তু তাদের আসন সংখ্যা কমে গেছে। ৩৫৩ থেকে ২৯২ হয়েছে।  একা বিজেপি দলের ৩০৩ থেকে ২৪০ নেমে এসেছে। তাই বিজেপি দল শাসনে আর নেই। তারা জনগণের  বিরুদ্ধে কর্পোরেটদের স্বার্থে কাজ করেছে বলে মানুষ তাদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। তবে এই লড়াই জারি রাখতে হবে। ১৯৪২ সালের ৯ ই আগস্ট তারিখটা সবাইকে মনে রাখার জন্য আবেদন জানান প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা। তিনি বলেন ,গান্ধীজীর নেতৃত্বে ঐদিন কংগ্রেসের প্ল্যাটফর্ম থেকে সমস্ত ধর্মাবলম্বী অংশের মানুষ একজোট হয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের স্লোগান দিয়েছিল। এই স্লোগান দেখে সেদিন ব্রিটিশরা বুঝতে পেরেছিল ভারতে আর শাসন করা যাবে না। তাই পাঁচ বছর পর তারা দেশকে ভাগ করে দেশবাসীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে এই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। সময় এসেছে এই দেশের জনগণ বিজেপিকেও ক্ষমতা থেকে সরাবে।এছাড়াও এই মিছিল এবং পথসভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম বিশালগড় মহকুমা কমিটির সম্পাদক পার্থপ্রতিম মজুমদার এবং সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সদস্য সিদ্দিকুর রহমান এবং উপজাতি গণমুক্তি পরিষদের নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক কেশব দেববর্মা, পলাশ দেববর্মা সহ আরো অনেকে।মিছিল এবং পথসভা শেষে সিপিআইএম নেতৃত্ব এবং কর্মী সমর্থকরা কেরালায় বন্যায় দুর্গতদের জন্য প্রত্যেকটি দোকান থেকে আর্থিক সাহায্য তুলেছেন। সাধ্যমত বাজারের ব্যবসায়ী থেকে পথচারীরা কেরালায় বন্যায়  দুর্গতদের জন্য  আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়েছেন। তবে দীর্ঘদিন পর সিপিআইএম দলের বিশ্রামগঞ্জ বাজারে  বড় আকারে সংঘটিত হওয়া মিছিল ও পথসভাকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা কল্পনা।