নিজস্ব প্রতিনিধি, কৈলাসহর, ২২ জুলাই: সোমবার দুপুরে পানিসাগর থানার অন্তর্গত জলাবাসা দামছড়া প্রধান সড়কের জনজাতি অধ্যুষিত ভাল্লুকছড়াস্থিত সড়কের কালভার্টের ভিতর থেকে উদ্ধার হয় এক ব্যক্তির পচাগলা মৃতদেহ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, ঊনকোটি জেলার ইরানী থানাধীন যুবরাজনগর গ্রামে বাসিন্দা পেশায় ঠিকেদার মারুপ আলী বিগত ১৫ই জুলাই তারিখ থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ। এরপর থেকে ঐ ঠিকেদারকে হন্যে হয়ে খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে দু তিন দিন পর কৈলাসহরস্থিত ইরানী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে পরিবারের লোকজন।
জানা গেছে বিগত ১৫ই জুলাই সকালে মারুপ নাকি ওর সাথে করে গাড়ি চালক মহিম উদ্দিন,আপন ভাতিজা হাজিউল আহমেদ এবং জীবন দাস কে সাথে নিয়ে ধর্মনগর স্হিত আই,সি,আই,সি,আই ব্যাংক এ আসে এবং প্রয়োজনের তাগিদে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা তুলে। দীর্ঘদিন যাবৎ ওর একাউন্ট থেকে টাকা খোয়া যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংক কতৃপক্ষ থানাতে জি,ডি,এন্ট্রি করে প্রত্যায়িত নকল কপি আনার পরামর্শ প্রদান করেন।
এখানে উল্লেখ বিগত বেশ কিছুদিন যাবৎ মারুপের সরলতার সুযোগ নিয়ে আকাশ নামের একটি ছেলে সহ উপরিউক্ত সকলেই মারুপের এ,টি,এম,চুরি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে অবিরত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক কতৃপক্ষের নিকট ব্যাংক ডিটেইল চাইলে সাথে থাকা অভিযুক্তরা নিজেদের টাকা চুরি কান্ড থেকে আড়াল করতে মারুপকে পৃথিবী থেকে সড়িয়ে ফেলার ফন্দি আঁটে।
আর ঠিক এদিনই সন্ধ্যায় কৈলাসহরে ফিরার পথে ঊনকোটি সংলগ্ন এলাকায় নির্জনতার সুযোগ বুঝে তিনজনে মিলে মারুপকে গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে গাড়িতে করে আনন্দবাজার হয়ে তিলথৈ হয়ে চামটিলা জলাবাসা হয়ে ভাল্লুক ছড়াতে এসে সুপরিকল্পিতভাবে মৃতদেহ গুম করতে কালভার্টের ভীতর ফেলে চম্পট দেয়।
মারুপের আত্মীয় পরিজনদের সন্দেহবশত ঐ তিনজনের বিরুদ্ধে ইরানী থানায় অভিযোগ জানালে শুরু হয় দফায় দফায় পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ। দীর্ঘ এক সপ্তাহ পেরিয়ে যেতে না যেতেই বেরিয়ে আসে হত্যাকান্ডের আসল রহস্য। বেরিয়ে আসে আরো দুই অভিযুক্তের নাম এরা হলেন সামিম মুল্লা এবং নিস্ফা আলী।ইরানী থানার পুলিশ অভিযুক্ত পাঁচ জনকেই জালে তুলতে সক্ষম হয়।
এই মর্মে আজ সকালে ইরানী থানার পুলিশ এবং পানিসাগর পুলিশের যৌথ উদ্দ্যোগে গাড়িচালক মহিম উদ্দিনকে সাথে নিয়ে ভাল্লুক ছড়া এলাকায় এসে মৃতদেহের সন্ধান পায়।মৃতদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনা স্হলে পৌছায় কৈলাশহর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জয়েন্ত কর্মকার এবং পানিসাগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৌম্য দেব্বর্মা,পানিসাগর মহকুমা শাসক কার্যালয়ের ডেপুটি কালেক্টর সুকুমার রিয়াং,জলাবাসা প্রাথমিক স্বাস্হ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডঃমনোজিৎ ভৌমিক,পানিসাগর আরক্ষা প্রশাসনের অফিসার ইনচার্জ সুমন্ত ভট্টাচার্য,কৈলাশহর স্থিত ফরেন্সিক টিমের আধিকারিকগন সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।মৃত দেহে পচন ধরে যাওয়াতে মৃতদেহ ময়না তদন্তের কাজ যথা স্থানেই সম্পন্ন করা হয়।
মৃতদেহ উদ্ধারের পর শনাক্ত করেন মৃতের ছোট ভাই আজিজুর রহমান।তিনি বড় ভাইয়ের খুন কান্ডে অভিযুক্ত পাঁচ অভিযুক্তের সঠিক শাস্তি বিধানের আর্জি সহ কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি বিধানের আর্জি জানান।