ত্রিপুরা রাজ্যে সাধারণ মানুষের অধিকার যেমন ক্ষুন্ন হচ্ছে, তেমনি জনপ্রতিনিধিদেরও অধিকার খর্ব করা হচ্ছে: বিরোধী দলনেতা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ জুলাই: গন্ডাছড়ায় ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হলেন বামফ্রন্টের এক প্রতিনিধি দল। বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এক প্রতিনিধি দল সোমবার গন্ডা ছড়ায় গিয়ে প্রশাসনিক বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে একরাশ খুব উগড়ে দিয়েছেন বিরোধী দল নেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী।

তিনি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে সাধারণ মানুষের অধিকার যেমন ক্ষুন্ন করা হচ্ছে। তেমনি অন্যান্য দলের জনপ্রতিনিধিদের অধিকারও ক্ষুন্ন করা হচ্ছে। বিধানসভার সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে দেখা করতে বাধা প্রদান করছে প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ১৬৩ ধারার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিরোধীদের আটকানো হচ্ছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে এদিন প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ১২ জুলাই রাত থেকে দুষ্কৃতিদের তান্ডবে উত্তপ্ত গন্ডাছড়া এলাকা। স্থানীয় যুবক পরমেশ্বর রিয়াং এর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তারপরে সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহু সাধারণ নাগরিক। বাড়ি ঘর ছেড়ে একপ্রকার শরণার্থীর জীবনযাপন করছেন প্রায় শতাধিক জনগণ। জিতেন্দ্র চৌধুরী জানান, এই ঘটনার পর গত ১৮ জুলাই তিনি  জেলাশাসক সাজু ওয়াহিদ এর সঙ্গে কথা বলে গন্ডাছড়া যাওয়ার বিষয়ে জানেন। কিন্তু জেলাশাসক তখন কয়েকদিন পরে আসার জন্য অনুরোধ করেন। সেই অনুযায়ী গতকাল অর্থাৎ ২১ শে জুলাই জিতেন্দ্র চৌধুরী ধলাই জেলাশাসককে জানিয়েছেন ২২ শে জুলাই অর্থাৎ সোমবার সকালে ৬ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল গন্ডাছড়া সফরে আসছেন। জেলাশাসক তখন অনুমতি দিলেও আজ সকাল হতেই শুরু হয় তালবাহানা। প্রথমেই জিতেন্দ্র চৌধুরীর এসকট কে বিভিন্ন আইনী প্রটোকল দেখিয়ে বাধা প্রদান করা হয়। তারপর যখন জিতেন্দ্র চৌধুরী নেতৃত্বে বামেদের ৬ জন প্রতিনিধি গন্ডাছড়া পৌঁছায় তখন প্রচুর প্রশাসনিক আধিকারিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে তাদের গণ্ডাছড়ায় প্রবেশে বাধা প্রদান করেন। এমনটাই জানিয়েছেন জিতেন্দ্র চৌধুরী।

তিনি আরো বলেন, পুলিশের বক্তব্য সেখানে ১৬৩ ধারা জারি রয়েছে তাই ৬ জন সেখানে প্রবেশ করা যাবে না। বিরোধী দলনেতা জানান তিনজন করে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে তারা গণ্ডাছড়া সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং কিছুক্ষণ পরেই সেখান থেকে আগরতলার জন্য বেরিয়ে যাবেন। কিন্তু তাতেও রাজি হয়নি প্রশাসন। সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেওয়া হয়। গন্ডাছড়া সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে তাদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। পুলিশের বক্তব্য সেখানে সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। তবুও কেন বিরোধী দলের  নেতৃত্বদের সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হলো না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা।

এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘটনায় প্রশাসনিক ভূমিকা নিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিরোধী নেতৃত্বরা। বিরোধী দলনেতা বলেন, রাজ্যে সাধারণ মানুষের অধিকার যেমন ক্ষুন্ন করা হচ্ছে তেমনি জনপ্রতিনিধিদেরও ন্যূনতম অধিকার রক্ষা করার কোন সুযোগ প্রদান করছে না শাসক দল বিজেপি। শাসক দলের নেতৃত্বরা ১৬৩ ধারার মধ্যে গন্ডাছড়ায় যেতে পারলেও বিরোধীদের সেখানে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে প্রশাসন। উল্লেখ্য এদিন কংগ্রেস দলের নেতৃত্বদেরও গন্ডাছড়া প্রবেশে একইভাবে বাধা প্রদান করেছে প্রশাসন।