![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2024/07/IMG-20240706-WA0023.jpg)
খোয়াই, ৬ জুলাই: খোয়াইয়ের সড়ক ও রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। প্রতিকারের দাবীতে জেলা শাসকের কাছে ডেপুটেশন প্রদান করে সি পি আই( এম)-র। পরর্বতী সময়ে জেলাশাসক জানিয়েছেন এ বিষয়ে প্রশাসন উদ্যোগ নিয়েছে।
খোয়াই মহকুমা জুড়ে সড়ক ও রাস্তাঘাটের বেহাল দশা।চরমে উঠেছে জনদুর্ভোগ।সংস্কারের উদ্যোগ নেই। পূর্ত দপ্তর উদাসীন। মানুষের ভোগান্তি আর দুর্দশা সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছে। জেলা শহরের পুর এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থাও একইরকম। অথচ পুর পরিষদের সামান্যতম কোন হেলদোল নেই। একই অবস্থা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের। গ্রামে গ্রামে রাস্তাঘাটের জীর্ণদশা আর ভগ্নদশা মানুষের ভোগান্তি প্রতিদিন বাড়িয়ে চললেও কোন নড়াচড়া নেই জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি বা পঞ্চায়েতগুলোর।
একই অবস্থা এ ডি সি এলাকার। নির্বাচিত জন প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থাগুলোর কারোরই কোন তৎপরতা নেই। বর্ষার এই ভরা মরশুমে রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় মানুষের জীবনে এখন এক দুর্বিষহ অবস্থা। যান চলাচল বন্ধ হওয়ার পথে। যাত্রী পরিষেবা প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। টানা বর্ষণে সড়ক তলিয়ে যায় জলের তলায়। জনজীবনের এই দূর্বিসহ অবস্থায় সি পি আই ( এম)-র খোয়াই মহকুমা কমিটির পক্ষ থেকে শনিবার এই অভিযোগগুলো তুলে খোয়াই জেলা শাসকের কাছে ডেপুটেশন প্রদান করেছে।জেলা শাসক চান্দনী চন্দ্রনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি।
পাঁচজনের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সিপিআই(এম) মহকুমা কমিটির সম্পাদক পদ্ম কুমার দেববর্মা, রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস, জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ ভৌমিক, মহকুমা কমিটির সদস্য গৌতম পাল ও মনোজ দাস। স্মারকলিপি হাতে নিয়ে জেলা শাসক চান্দনী চন্দ্রন নিজেও খোয়াই জেলা শহরের পুর এলাকা সহ মহকুমার বিভিন্ন অঞ্চলের সড়ক ও রাস্তা ঘাটের বেহাল দশার কথা তার অবগতির মধ্যে রয়েছে বলে জানান।
তিনি নিজেও মহকুমার সড়ক ও রাস্তা ঘাটের জরাজীর্ণ ও ভগ্নদশার কথা স্বীকার করেন। সড়ক ও রাস্তাঘাটের হাল ফেরানোর ক্ষেত্রে তিনি প্রশাসনিক উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণ করার আশ্বাস দেন সি পি আই ( এম)– র প্রতিনিধিদলকে। জেলা শাসকের হাতে স্মারকলিপি তুলে দিয়ে সি পি আই ( এম)-র প্রতিনিধিদল জেলা শাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, জেলা শহরের দূর্গানগরের ভারত কল্যান সংঘ থেকে সিঙ্গিছড়া হয়ে জাতীয় সড়কের চেরমা পয়েন্ট ও পহরমুড়া বাজার থেকে জাতীয় সড়কের ধলাবিল পয়েন্ট পর্য্যন্ত রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী।এছাড়াও জাতীয় সড়কের বিভিন্ন অংশের রাস্তাঘাটের অবস্থা এককথায় অবর্ণনীয়।উদাহরণ হিসেবে প্রতিনিধিরা জেলা শাসককে জানান যে, জাম্বুরা থেকে চাম্পাহাওর, টি-কে ডি-কে রোডের লালছড়া রামকৃষ্ণ আশ্রমের নিকটস্থ সড়ক রীতিমতো বিপজ্জনক অবস্থায় এসে উপনীত হয়েছে।প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে জেলা শাসককে জানানো হয় যে, খোয়াই জেলা শহর সহ মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তের বেহাল দশার সড়ক ও ভাঙাচোরা রাস্তাঘাটের কারণে মহকুমার স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্য্যস্ত হয়ে পড়েছে। দ্বিচক্রযান চলাচলের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে।এমনকি এসব রাস্তাঘাট দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাফেরা করাও এখন প্রায় অসম্ভব।প্রতিনিধিরা মহকুমার সড়ক ও রাস্তা ঘাটের হাল ফেরানোর ক্ষেত্রে জেলা শাসককে বিশেষভাবে তৎপর হয়ে কার্য্যকরী ব্যাবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। জেলা শাসক প্রতিনিধিদলকে জানান যে, দূর্গানগর থেকে সিঙ্গিছড়া হয়ে চেরমা পর্য্যন্ত সড়কের সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাস্তার মেরামতির জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে পূর্ত দপ্তর।কিন্তু পহরমুড়া থেকে ধলাবিল পর্য্যন্ত রাস্তার ক্ষেত্রে কোন আশার কথা শোনাতে পারেননি জেলা শাসক। তবে তিনি তার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের প্রতিশ্রুতি দেন।
জেলা শাসক জানান, জাতীয় সড়কের নির্মাণকারী সংস্থাকে এসব বেহাল দশার রাস্তাঘাটের সংস্কারের জন্য বারবার বলা হলেও তারা কর্ণপাত করছে না। এই অবস্থায় পূর্ত দপ্তরকে দিয়ে কাজ করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে জেলা শাসকের কথায় বুঝা গেল যে, পহরমুড়া- ধলাবিল রাস্তার হাল ফেরানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদী। কবে নাগাদ যে সড়কের হাল ফিরবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই।