আগরতলা, ৩ জুলাই: প্রবল বৃষ্টির জেরে মাটির ঘর ভেঙে মৃত্যু হল স্বামী-স্ত্রীর। ঘটনায় আহত হয়েছে ঘরে থাকা দুই কন্যা সন্তান। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মেখলিপাড়া এলাকার ধর্মটিলায়। ঘটনায় মৃত স্বামী – স্ত্রী হলেন ঝুমা তাঁতি(২৬), প্রাণেশ তাঁতি(৩৫)। ওই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক(ডা.) মানিক সাহা। দিয়েছেন আর্থিক সহায়তা।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রতিদিনকার মত মঙ্গলবার রাতেও খাওয়া-দাওয়া শেষে নিজ ঘরে ঘুমাতে যান প্রাণেশ তাঁতি ও তার পরিবার। রাত প্রায় ১টা নাগাদ একটি বিকট আওয়াজ শুনতে পায় পরিবারের সদস্যরা। তড়িঘড়ি ছুটি গিয়ে দেখতে পান মাটির ঘর ভেঙে ঘরের ভেতরে চাপা পড়ে গেছেন পরিবারের চার সদস্য। সঙ্গে সঙ্গে অগ্নি নির্বাপক দপ্তরের কর্মীদের খবর দেওয়া হলেও তারা ফোন তোলেননি বলে অভিযোগ। এলাকাবাসীরা তড়িঘড়ি উদ্ধার কাজ শুরু করেন। ঘরের ভেতরে প্রাণেশ তাঁতি, তার স্ত্রী এবং দুই কন্যা সন্তান চাপা পড়ে। তাদের মধ্যে একটি তিন মাসের শিশু এবং অপর কন্যা সন্তানকে ১২ বছরের বলে জানা গেছে। তাদের চারজনকেই উদ্ধার করে প্রথমে রানির বাজার হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আগরতলার জিবিপি হাসপাতালে রেফার করা হয়।
হাসপাতালে আসার পরেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন ঝুমা তাঁতি মারা গেছেন। প্রায় এক দেড় ঘন্টা পর চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হয় প্রাণেশ তাঁতিরও। এদিকে তিন মাসের শিশু সন্তানটি গুরুতর আহত হয়েছে। দুই শিশুসন্তানই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার সকালে জিবিপি হাসপাতালে ছুটে গেছেন এলাকার বিধায়ক রতন চক্রবর্তী। তিনি আহত শিশুদের খোঁজ খবর নেন। পাশাপাশি এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, অতিরিক্ত বর্ষণের ফলে ভূমিধ্বসে একটি দূর্ভাগ্যপূর্ণ ঘটনায় প্রাণ হারায় খয়েরপুর মেখলিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের একই পরিবারের প্রাণেশ ও ঝুমা তাঁতি। তাঁদের ৪ মাস ও ৯ বছর বয়সী দুটি কন্যা সন্তান চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত। ইতোমধ্যেই রাজ্য সরকার ও প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে । আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি সর্বোতোভাবে এই পরিবারটির পাশে থাকবে আমাদের সরকার।
এদিকে, প্রয়াত স্বামী-স্ত্রীর মৃতদেহ বাড়িতে পৌছতেই কান্নার রোল পড়েছে। মেঘলিপাড়া গিয়ে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের খোঁজ নিয়েছেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসক বিশাল কুমার। তিনি বলেন, রাতে বসতঘর ভেঙ্গে পরে স্বামী-স্ত্রী দুইজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। ত্রিপুরা প্রশাসন মৃতের পরিবারের সহায়তায় পাশে রয়েছে। ওই ঘটনায় তাঁদের দুই সন্তান আহত হয়েছে। দুজনের জি বি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।