BRAKING NEWS

রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিষেবা: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১ জুলাই: রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের ফলে শিশু মৃত্যুর হার ও মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমেছে। যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক হ্রাস পেয়েছে। আজ আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক স্টপ ডায়রিয়া ক্যাম্পেইনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। 

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিরোধই হচ্ছে স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রধান হাতিয়ার। স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে জনগণের সচেতনতাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডায়রিয়া মূলতঃ পেটের রোগ। এই রোগ প্রতিরোধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সকলকে সচেতন হতে হবে। ডায়রিয়া রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষা রাখতে গেলে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যবিধির উপর বিশেষ নজর দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকার সচেতনতার লক্ষ্যে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে রাজ্যে বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করছে। গ্রামীণ এলাকার জনগণের কাছে স্বাস্থ্য সচেতনতার বিষয়টি পৌঁছে দেওয়ার জন্য অঙ্গনওয়াড়িকর্মী ও আশাকর্মীদের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে। রাজ্যে শিশুদের বিভিন্ন মারণব্যাধির হাত থেকে রক্ষা করতে নিয়মিত টিকাকরণ কর্মসূচি চলছে।

তিনি বলেন, গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্য শিবিরে ম্যালেরিয়া, ব্লাড সুগার, ব্লাড প্রেসার সনাক্ত করা হচ্ছে এবং রোগীদের বিনামূল্য ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া সরকারী হাসপাতালে বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসার বিষয়েও সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ম্যালেরিয়া রোধে ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক স্প্রে করা ও মেডিকেটেড মশারি দেওয়া হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় বাল শিশু স্বাস্থ্য কার্যক্রম কর্মসূচিতে শূন্য থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্মগত শারীরিক ত্রুটি, দেরীতে বেড়ে ওঠা, হৃদরোগ ইত্যাদি রোগের বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়।

এদিন তিনি দাবি করেন, গত ১০ মে চেন্নাই-এ অবস্থিত অ্যাপোলো হাসপাতালের সাথে রাজ্য সরকারের একটি মউ সাক্ষরিত হয়েছে। এই মউ অনুসারে হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুদের ওই হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামুল্যে অস্ত্রোপচার করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ এলাকায় উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে প্রতিমাসেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে স্বাস্থ্য মেলার আয়োজনও করা হচ্ছে। সেখানে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক ইত্যাদি অসংক্রামক রোগ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরা এবং চিকিৎসা শুরু করার বিষয়ে রোগীদের চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। সারা রাজ্যে যক্ষ্মা রোগ দূরীকরণ প্রকল্পের আওতায় সকল যক্ষ্মা রোগীদের পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের জন্য চিকিৎসা চলাকালীন প্রতিমাসে নিক্ষয় পোষণ যোজনায় ৫০০ টাকা করে সরাসরি রোগীর ব্যাংক একাউন্টে দেওয়া হচ্ছে।

তাঁর কথায়,  বিগত পাঁচ বছর ধরে ভারতবর্ষের ৫০ লক্ষের নীচে বসবাসকারী রাজ্যগুলির মধ্যে আমাদের রাজ্য যক্ষ্মা দূরীকরণ কর্মসূচি রূপায়ণে সেরা পরাফরমেন্সের পুরষ্কার পেয়েছে।

 মুখ্যমন্ত্রী বলেন এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখন জটিল অস্ত্রোপচার রাজ্যেই সম্ভব হচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্যকর্মী ও আশাকর্মীরা নিরন্তর প্রয়াস জারি রেখেছেন। খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করার জন্য ইতিমধ্যে মোবাইল ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরি চালু করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *