বাংলাদেশকে ছুয়ে আগরতলা থেকে খুবই অল্প সময়ে ট্রেনে কলকাতা, বিলোনিয়া-ফেনি-চট্টগ্রাম,  গজ পরিবর্তন ও নতুন রেলপথের অনুমোদন বাংলাদেশ রেলওয়ে বোর্ডের

আগরতলা, ১৩ জুন : বাংলাদেশকে ছুয়ে আগরতলা থেকে খুবই অল্প সময়ে ট্রেনে কলকাতা পৌছে যাওয়ার অপেক্ষার স্থায়ী অবসান হতে চলেছে। সাথে বহু প্রতীক্ষিত বিলোনিয়া-ফেনি-চট্টগ্রাম রেলপথের অনুমোদন মিলেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ে বোর্ড ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রেল সংযোগের জন্য চূড়ান্ত স্থানের সমীক্ষা(এফএলএস)-র অনুমোদন দিয়েছে। বাংলাদেশের সাথে সংযোগী নতুন রেলওয়ে লাইনের জন্য চূড়ান্ত স্থান সমীক্ষার মোট দৈর্ঘ্য ৮৬১ কিমি। এছাড়া, উত্তর পূর্বাঞ্চলের দিকে প্রস্তাবিত বিকল্পমূলক পথের দৈর্ঘ্য হবে ২১২ কিমিঃ।

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে জানিয়েছেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে রেল সংযোগের এফএলএস-এর জন্য অনুমোদিত পথগুলি হলো বিলোনিয়া-ফেনি-চট্টগ্রাম। ওই পথের দৈর্ঘ্য হবে ১৩১ কিমিঃ, যার মধ্যে ৩৮ কিমিঃ নতুন রেল লাইন এবং ৯৩ কিমিঃ হবে গজ পরিবর্তন। এছাড়া, গেদে-দর্শনা-ইশ্বরদি-টঙ্গি-ভৈরব বাজার-আখাউরা-আগরতলা পথে ১০০ কিমিঃ গজ পরিবর্তন করা হবে। শুধু তাই নয়, প্রস্তাবিত পেট্রাপোল-বেনাপোল-নবহরণ-যশোর-রুপদিয়া-পদ্মবিল-লোহাগারা-কাশিআনি-শিবচর-মাবা-নিমতলা-গেন্দারিয়া-ঢাকা-টঙ্গি-ভৈরব বাজার-আখাউরা-আগরতলা পথে ১২০ কিমিঃ গজ পরিবর্তন করা প্রয়োজন হবে। তাঁর দাবি, ওই সমস্ত প্রস্তাবিত পথগুলি ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রেল সংযোগকে আরও শক্তিশালী করবে।

সাথে তিনি যোগ করেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের দিকে বিকল্পমূলক নতুন পথটি ফরবেশগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সেকশনের মধ্যে নির্মাণ করা হবে এবং এর দৈর্ঘ্য হবে ১৭.৬০ কিমিঃ। ঠাকুরগঞ্জ-চটেরহাট সেকশনের মধ্যে নতুন পথটির দৈর্ঘ্য হবে ২৪.৪০ কিমিঃ। কুমেদপুর-আমবাড়ি ফালাকাটা নতুন পথে ১৭০ কিমিঃ নতুন রেলওয়ে লাইন নির্মাণের প্রয়োজন হবে।

এদিকে, বালুরঘাট-হিলি-পার্বতীপুর-কোনিয়া-লালমণিরহাট-মোগলহাট-গিতালদহ সেকশন। এটি হবে ৩২ কিমিঃ, যার মধ্যে ১৪ কিমিঃ হবে নতুন রেলওয়ে লাইন এবং ১৮ কিমিঃ হবে গজ পরিবর্তন, তিনি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, প্রস্তাবিত বালুরঘাট-গিতালদহ-বামনহাট-সোনাহাট-গোলোকগঞ্জ- ধুবড়ি সেকশনের দৈর্ঘ্য হবে ৫৬ কিমিঃ, যার মধ্যে ৩৮ কিমিঃ হবে নতুন রেলওয়ে লাইন এবং ১৮ কিমিঃ হবে গজ পরিবর্তন। বালুরঘাট-হিলি-গাইবান্ধা-মহেন্দ্রগঞ্জ-তুরা-মেন্দিপাথার সেকশনটিতে ২৫০ কিমিঃ নতুন রেলওয়ে লাইন নির্মাণ করা হবে।

পাশাপাশি, প্রস্তাবিত মঙ্গুরজান-পিরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও-পাঁচগড়-হলদিবাড়ি পথে ৬০ কিমিঃ নতুন রেলওয়ে লাইন নির্মাণ করা হবে। প্রস্তাবিত ডালখোলা-পিরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও-পাঁচগড়-হলদিবাড়ি সেকশনে ৮০ কিমিঃ নতুন রেলওয়ে লাইন নির্মাণ করা হবে। সাথে রাধিকাপুর-বিরল-পার্বতিপুর-কৌনিয়া-গিতালদহ সেকশনের দৈর্ঘ্য হবে ৩২ কিমিঃ, যার মধ্যে ১৪ কিমিঃ নতুন রেল লাইন এবং ১৮ কিমিঃ গজ পরিবর্তন করা হবে, প্রস্তাবিত ওই পথ সম্পর্কে বলেন তিনি।

সব্যসাচী দে-র দাবি, ভারত ও নেপালের মধ্যে রেল সংযোগের চূড়ান্ত স্থান সমীক্ষার জন্য অনুমোদিত পথগুলি হলো বিরাটনগর-নিউ মাল জং. সেকশনের মধ্যে, এখানে ১৯০ কিমিঃ নতুন রেলওয়ে লাইন নির্মাণের প্রয়োজন হবে। এবং প্রস্তাবিত গলগলিয়া-ভদ্রপুর-কাজলি বাজার সেকশনে ১২.৫ কিমিঃ নতুন রেলওয়ে লাইন নির্মাণের প্রয়োজন হবে। নতুন প্রস্তাবিত ওই রেলওয়ে লাইনগুলি চিকেন-নেক অংশের মাধ্যমে রেল সংযোগকে আরও শক্তিশালী করবে।

তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, ভারত সরকার ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির অধীনে নিজের সমস্ত প্রতিবেশীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ ও পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই নীতি বর্ধিত রেলপথ সংযোগ, পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং মানুষের সাথে মানুষের যোগাযোগকে অগ্রাধিকার দেবে। প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে উন্নত যোগাযোগ গড়ে তুলবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন কার্যকলাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।