নিজস্ব প্রতিনিধি, কল্যাণপুর, ১৩ জুন: লক্ষ্যে অবিচল থাকলে, আর কোন কিছু করার অভিপ্রায় নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করলে যে সফলতা আসতে বাধ্য, তার দৃষ্টান্ত আরও একবার স্থাপিত হয়েছে খোয়াই জেলার কল্যাণপুর আর ডি ব্লকের অন্তর্গত দ্বারিকাপুর এলাকাতে।
এ বছরের ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় দ্বারিকাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রমজীবী পরিবারের মেধাবী দীপিকা ঘোষ নজর কারা ফলাফল করেছে, প্রত্যেকটা বিষয়ে লেটার মার্কস সহ দীপিকার প্রাপ্ত নম্বর ৪৫৬ । পেশায় দিনমজুর অজিত ঘোষ এবং সাধারণ গৃহিণী মঞ্জু ঘোষের সুযোগ্য সন্তান দীপিকা সম্ভবত এ বছর কল্যাণপুর আর .ডি. ব্লক এলাকায় সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েছে। দীপিকার এই সাফল্যে খুশি সবাই।
ছোট থেকেই প্রচন্ড দারিদ্রতার মধ্যে অতিবাহিত করেই লক্ষ্যে অবিচল থেকে দীপিকার এই সফলতা। মেয়ের এই সাফল্যে বাবা-মা প্রচন্ড খুশী হলেও আশঙ্কা করছেন আগামী দিনে দীপিকার পড়াশোনা ঠিকমত চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন তো? তবে তিনি আশাবাদী যেভাবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিভিন্ন অংশ দীপিকার পাশে দাঁড়িয়েছে , দীপিকাকে উৎসাহিত করেছে অনুপ্রাণিত করেছে ,আগামী দিনেও সবার সাহায্য আর সহযোগিতায় দীপিকা এগিয়ে যাবে।
নিজের ফলাফল নিয়ে লাজুক প্রকৃতির দীপিকা খুশি, তবে সে জানিয়েছে তার এই সফলতার পেছনে মা বাবার অবদান ছাড়াও গৃহশিক্ষক রাজেশ সরকার, বিশ্বজিৎ দেবনাথ প্রমূখরা তাকে দারুন ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছে। অস্বীকার করার উপায় নেই দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে দীপিকাদের গোটা পরিবার, তারপরেও অনেকটা দু:সাহস করেই দীপিকা চেবরি দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে ভর্তি হতে চলেছে। দীপিকার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আমরা কামনা করছি। সার্বিক বিষয় বিশ্লেষণ করে এটুকু লেখা যায় অন্তত বর্তমানে দিনমজুর দীপিকার বাবা অর্থনৈতিকভাবে প্রচণ্ড সমস্যায় রয়েছেন, এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আগামী দিনে মেধাবী দীপিকা তার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে তো? এই আশঙ্কার মাঝে দীপিকার শুধু একটাই বক্তব্য, “সবার সাহায্য সহযোগিতায় আগামী দিনে মানুষের মতো মানুষ হয়ে সমাজের জন্য কিছু করতে চাই”।
আমরা জানি আমাদের সমাজে অনেক মহানুভবরা রয়েছেন যারা প্রতিনিয়ত সমাজের রত্ন, সভ্যতার অহংকার এই দীপিকাদের ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করে থাকেন। মেধাবী দীপিকার পরিবারের মতো আমরাও চাইছি সমাজের আশীর্বাদ আর সহযোগিতায় আগামী দিনে দীপিকা আমাদের গর্ব এবং পথপ্রদর্শক হয়ে উঠুক।