সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের উদ্যোগে প্রখ্যাত তবলচি  গোপাল চন্দ্র পালের সংবর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান

আগরতলা, ১ জুন: সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের উদ্যোগে শনিবার খোয়াই জেলার প্রবীনতম , প্রখ্যাত তবলচি  গোপাল চন্দ্র পালের সংবর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।

খোয়াইয়ের অতীত দিনের প্রখ্যাত তবলাবাদক, প্রবীণ তবলাশিল্পী।নতুন প্রজন্মের অনেকেই চেনেন না গোপাল পালকে। কিন্তু অতীতে রাজ্য ও বহিঃর্রাজ্যের অনেক জ্ঞানী গুণী শিল্পী চেনেন এই গোপাল চন্দ্র পালকে।প্রচারের অন্তরালে থাকা এক নিরলস যন্ত্রশিল্পী।অনেক বিশিষ্ট শিল্পীর সাথেই তবলায় সঙ্গতদান করেছেন তিনি।দীর্ঘ সময়ের সাধনায় হয়েছেন তবলার শিল্পী।খোয়াই তথা সারা রাজ্যের জন্য বিভিন্ন সময়ে কুড়িয়ে এনেছেন দুর্লভ সম্মান।অনেকেই বলেন যে, গোপাল চন্দ্র পালের হাতের যাদুতে তবলা যেন কথা বলতো।তার হাতের স্পর্শে তবলায় যেন ফুটে উঠতো গানের কলি।

গোপাল পালের তবলার বোলে অনেক ছোট বড় অনুষ্ঠানে মানুষ মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসে থাকতেন দীর্ঘক্ষণ।গোপাল চন্দ্র পাল বর্তমানে অসুস্থ।দুরারোগ্য ব্যাধি বাসা বেঁধেছে এই প্রবীণ শিল্পীর শরীরে।আজ তিনি গৃহবন্দি।অনেকটাই যেন লোকচক্ষুর অন্তরালে।বিছানাই তার সর্বক্ষণের সঙ্গী।আর শিয়রে এক জোড়া তবলা।অসুস্থ তিনি।তবু অশক্ত শরীরেও প্রতিদিন সকাল বিকেল নিয়ম করে তবলা দুটোতে হাত বোলান।বাজাতে পারেন না।হাতের আঙুল আর এখন সেরকম সায় দেয়না।তবু তবলাজোড়ায় এতটুকু ধূলোবালি জমতে দেন না।সন্তানের মতোই তবলাজোড়ায় স্নেহের পরশ বুলিয়ে দেন নিজের হাতে।প্রথমে বঙ্কু গোস্বামী ও পরে যুগল সরকারের কাছে তালিম নিয়েছেন তবলায়। শনিবার সকালে জেলা শহরের সুভাষপার্কে প্রবীণ ও অসুস্থ এই তবলাশিল্পীর বাড়ীতে গিয়ে তাকে দেখে আসেন ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের খোয়াই বিভাগীয় কমিটির নেতবৃন্দ সহ সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য সদস্যা।সবাই শিল্পীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।সবাই চান , শিল্পের এই সাধক যেন আবার তার হাতের যাদুতে তবলার বোল থেকে ফুটে উঠা কথায় মাতিয়ে তুলতে পারেন সমবেত দর্শক শ্রোতাদের।সংগঠনের সদস্যরা বলেন , সংস্কৃতি আবার আপনাকে চায় এই গুণী শিল্পীকে।প্রবীণ তবলাশিল্পীর হাতে এদিন সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে ফুলের তোড়া তুলে দেন বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস।

শিল্পীর গলায় উত্তরীয় জড়িয়ে দেন সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের প্রবীণ বিভাগীয় সংগঠক উত্তম সিনহা।শিল্পীর হাতে মানপত্র তুলে দেন সংগঠনের বিভাগীয় সভাপতি শচীন্দ্র দেববর্মা।তার আগে মানপত্রটি পাঠ করে শোনান সংস্কৃতি সমন্বয় কেন্দ্রের বিভাগীয় সহ সম্পাদক অতনু দত্ত।অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের বিভাগীয় সদস্য অসীম দেব, ভূপাল ঘোষ প্রমুখ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন । উনারা প্রত্যেকেই শিল্পীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *