BRAKING NEWS

(রাউন্ড আপ) ঝাড়গ্রাম ও তমলুকে আয়োজিত জনসভায় থেকে টিএমসি এবং ইন্ডি জোটের নেতাদের তীব্র আক্রমণ মোদীর

ঝাড়গ্রাম / তমলুক ২০ মে (হি.স.) : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, সোমবার পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রামে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময়, টিএমসি এবং ইন্ডি জোটের নেতাদের তীব্রভাবে আক্রমণ করেন এবং বিজেপি সরকারের শাসনকালে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন কাজের কথা উল্লেখ করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জি ভার্চুয়ালি এই মঞ্চ থেকেই তমলুকের বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন। ঝাড়গ্রামে এই বিশাল জনসভা চলাকালীন, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি রাজ্য সভাপতি শ্রী সুকান্ত মজুমদার এবং ঝাড়গ্রাম লোকসভা প্রার্থী ডঃ প্রাণনাথ টুডু এবং অন্যান্য নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে বাংলায় টিএমসি এবং সারা দেশে ইন্ডি জোট ইতিমধ্যেই পরাস্ত হয়েছে, এখন তারা পঞ্চম দফার নির্বাচনের পরেও পরাজিত হয়েছে এবং ৪ জুন তাদের শেষ হতে দেখা যাবে। ইন্ডি জোট ভেঙে যাওয়ার কাউন্টডাউন এখন শুরু হয়েছে। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম স্পষ্টই বলে দিচ্ছে ফের একবার মোদী সরকার। সামনে পরাজয় দেখে গোটা তৃণমূলের ক্ষোভ চরমে। বাংলার মানুষ টিএমসিকে ভোট দিচ্ছে না, এই কারণেই এই লোকেরা কখনও বিজেপিকে গালিগালাজ করছে, আবার কখনও বাংলার মানুষকে হুমকি দিচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত টিএমসি কংগ্রেসকে গালিগালজ দিচ্ছিল, কিন্তু এখন বলছে টিএমসি ইন্ডি জোটের অংশ। বাংলার মানুষ ভালো করেই জানে কংগ্রেস একটা ডুবে যাওয়া জাহাজ আর তৃণমূলের জাহাজও ফুটো হয়ে গেছে। এই দুই দল একে অপরের সঙ্গী হলেও এদের ডুবে যাওয়া চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত। এই নির্বাচন ভারতের ভবিষ্যতের নির্বাচন। কংগ্রেস এবং ইন্ডি জোট ভারতকে কয়েক দশক পিছনে ঠেলে দিয়েছে, দেশ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশ ভুলে যায়নি যে বিশ্ব যখন দ্রুত বিকাশ করছিল, তখন কংগ্রেস দুর্নীতি এবং কেলেঙ্কারির রেকর্ড তৈরি করেছিল। বিশ্বের সব দেশ এগিয়ে গেলেও কংগ্রেস তরুণ প্রজন্মকে পিছনে ঠেলে দিতে ব্যস্ত ছিল। কংগ্রেস ৬০ বছর ধরে দারিদ্রতা দূর করার স্লোগান তুলেছিল, কিন্তু দারিদ্র্তা দূর করার জন্য কিছুই করেনি। দেশ জানে যে মোদীই ভারতকে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করেছেন, ১০ বছরে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্রতা থেকে বের করে এনেছেন এবং ৩৭০ ধারার মতো কয়েক দশকের পুরনো সমস্যার সমাধান করেছেন। কাশ্মীরে সন্ত্রাস এখন শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে। মোদীই পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছিলেন, নকশালবাদের কোমড় ভেঙে দিয়েছিলেন এবং দুর্নীতি দমন করেছিলেন। মোদী একজন গরিবের সন্তান, তাই সে গরিবের সুখ-দুঃখ নিয়ে চিন্তিত। এখন দরিদ্ররা বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্প থেকে সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পেতে শুরু করেছে কোনো কাট বা কমিশন ছাড়াই। প্রথমবারের মতো ৪ কোটি গরিব মানুষ স্থায়ী ঘর পেয়েছে, ৫০ কোটির বেশি গরিব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, মা-বোনেরা শৌচাগার পেয়েছে, উজ্জ্বল সিলিন্ডার পেয়ে, ধোঁয়া থেকে মুক্তি পেয়েছে, এই সবই হয়েছে প্রতিটি ভোটে। এবারও আপনার ভোট হোক বিকশিত বাংলা ও বিকশিত ভারতের জন্য।

শ্রী মোদী বলেছেন, যখন উদ্দেশ্য সঠিক হয় তখন একজন ব্যক্তি নিজের কাজের হিসাব দেয়। কিন্তু যখন উদ্দেশ্য ভুল হয় তখন সে অজুহাত খোঁজে। এখন দেশ দেখছে, একদিকে কেন্দ্রে কাজ করা মোদী সরকার, দেশের মানুষের কাছে নিজের রিপোর্ট কার্ড পেশ করছে, অন্যদিকে টিএমসির কাছে রিপোর্ট কার্ডের পরিবর্তে কেবল একটি রেট কার্ড রয়েছে। টিএমসি সমগ্র বাংলায় প্রতিটি কাজের জন্য একটি রেট কার্ড রেখেছে, টাকা দিন এবং চাকরি নিন। এই লোকেরা আমাদের শিক্ষার মন্দিরগুলিকে ছাড়েনি। টিএমসি মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে চাকরি নিলাম করেছে। টিএমসি আমাদের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ ঝুঁকিতে ফেলেছে। টিএমসি বাংলা ও রাজ্যের মানুষের পরিচয়কে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে এখন সারা দেশ খুবই চিন্তিত। বাংলায় প্রতিদিন হিংসা হচ্ছে, বিজেপি কর্মীরা খুন হচ্ছে। দাঙ্গা বাংলায় সাধারণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আদিবাসী ভাই-বোনদের পরিচয় নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু টিএমসি শুধুমাত্র নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে চিন্তিত। এই লোকজন অনুপ্রবেশকারীদের ডেকে বসিয়ে দিচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় বাংলার জনতার জনসংখ্যা কমছে। অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের দেশে এসে আমাদের দলিত, পিছিয়ে পড়া মানুষ ও আদিবাসীদের জমি দখল করে। টিএমসি এবং কংগ্রেস একসঙ্গে অনুপ্রবেশকারীদের দখলকে বৈধ করতে চায়। কংগ্রেস দল বলছে, তারা প্রত্যেকের সম্পত্তির তদন্ত করবে এবং তারপর তাদের ভোট ব্যাঙ্কে আপনাদের অর্থ দেবে। মাননীয় মোদীজি বলেন, বাবা সাহেব ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে ছিলেন এবং এটি আমাদের সংবিধানের মূল চেতনা কিন্তু ইন্ডি জোটের নেতা এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের সংরক্ষণকে বিশেষ শ্রেণিতে বিতরণ করতে চায়। কংগ্রেসও কর্ণাটকের ওবিসি সংরক্ষণ ছিনিয়ে নিয়েছে এবং মুসলিম সম্প্রদায়কে দিয়েও দিয়েছে এবং ২৩ এপ্রিল আমি কংগ্রেসকে লিখিতভাবে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলাম, যে তারা কখনই এসসি, এসটি এবং ওবিসি থেকে সংরক্ষণ ছিনিয়ে নিয়ে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণিকে দেবে না। কিন্তু সমগ্র ইন্ডি জোট কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে এবং ২৭ দিন পরেও কংগ্রেস কোনও উত্তর দেয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ১০-১২ বছরের পুরনো ভিডিওতে কংগ্রেসের শেহজাদাকে প্রকাশ্যে বলতে দেখা যায় যে কংগ্রেস দল মুসলিম সম্প্রদায়কে সংরক্ষণ দেবে। উগ্র সাম্প্রদায়িকতাবাদী মিডিয়া ব্যক্তিদেরও এ দিকে নজর দেওয়া উচিত। একদিকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলতেন, দেশের সম্পদের ওপর প্রথম অধিকার মুসলিম সম্প্রদায়ের, অন্যদিকে যে শেহজাদারা রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সরকার চালাতেন, তারা মুসলিম সম্প্রদায়কে সংরক্ষণের কথা বলছেন। এই বক্তব্য কংগ্রেসের আসল চরিত্রকে উন্মোচিত করে, যা কংগ্রেস এবং তার বাস্তুতন্ত্র বছরের পর বছর ধরে দেশবাসীর কাছে প্রকাশ করতে দেয়নি।

শ্রী মোদী বলেছেন, সম্প্রতি প্রতিটি টিভি সাক্ষাত্কারে আমাকে কংগ্রেসের ইস্তেহার সম্পর্কে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। এখন শেহজাদে নিজেই বলছেন, তিনি মুসলিম সম্প্রদায়কে রিজার্ভেশন দেবেন এবং এটি কংগ্রেসের ইস্তেহার সম্পর্কে বিজেপি যা বলেছে তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ। কংগ্রেসের মধ্যে তিনটি খারাপ দিক স্পষ্ট, প্রথমত, ইন্ডি জোটের মিত্ররা সম্পূর্ণ সাম্প্রদায়িক, দ্বিতীয়ত, তারা চরম বর্ণবাদী এবং তৃতীয়ত, তারা চরম পরিবারবাদী। মিডিয়া ইকোসিস্টেম যা এই লোকদের রক্ষা করে, তারা দেশের সংবিধানের অবমাননার দিকে অন্ধ হয়ে গেছে। এই সাম্প্রদায়িক, বর্ণবাদী এবং পরিবারবাদী লোকেদের মোদীকে জবাবদিহি করার কোনও অধিকার নেই। ২০২৪ সালের এই নির্বাচনে, মোদী কংগ্রেসের এই “মুসলিম লীগ” চিন্তাভাবনাকে উন্মোচিত করেছেন এবং সেই কারণেই এই লোকেরা রাগান্বিত। তাদের সমগ্র বাস্তুতন্ত্র এটি এড়ানোর উপায় খুঁজছে। এবারের নির্বাচনে ইন্ডি জোটকে কঠোর শাস্তি দিতে যাচ্ছে গোটা দেশ। সাধারণ, এসসি, এসটি এবং ওবিসি বিভাগের লোকেরা ইন্ডি জোটকে তাদের সংরক্ষণ কেড়ে নিতে দেবে না।

যশস্বী প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, টিএমসি পশ্চিমবঙ্গের জনগণের আস্থায় আঘাত করেছে এবং টিএমসি নেতারা রাম মন্দিরকে অপবিত্র বলেছেন। রাম মন্দির নয়, তৃণমূলের উদ্দেশ্য হল অপবিত্র। টিএমসি সরকার স্বয়ং রাম মন্দির নিষিদ্ধ করার ফরমান জারি করে, রাম নবমী মিছিলে আক্রমণ করার জন্য নিজেদের গুন্ডাদের ব্যবস্থা করে এবং এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই সাধুদের হুমকি দিচ্ছেন। বাংলার আধ্যাত্মিক পরিচয় হিসেবে বিবেচিত রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জলপাইগুড়ির রাম মিশন কৃষ্ণ আশ্রমে ভাঙচুর ও সেবকদের মারধর করা হয়। বাংলার রাম কৃষ্ণ মিশন আশ্রমে হামলা হবে এমনটা কোনও দেশবাসী কখনও ভাবেনি, কিন্তু ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে তৃণমূল সরকার সব সীমা অতিক্রম করেছে। সারা দেশ জানে আমার জীবন গঠনে রাম কৃষ্ণ মিশনের বিরাট অবদান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও যখনই সুযোগ পেয়েছি রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের সঙ্গে রাতভর থেকেছি। কংগ্রেস এবং তৃণমূলের লোকেরা সর্বদা আদিবাসীদের এগিয়ে যেতে বাধা দিয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো, বিজেপি সরকার একজন আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি করেছে, কিন্তু এই সমস্ত কংগ্রেস, বাম এবং টিএমসি নেতারা একজোট হয়ে আদিবাসী মহিলাকে নির্বাচনে পরাজিত করেছে। টিএমসি নিজস্ব দলের নেতাকে তার বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছিল, যারা একজন আদিবাদী মহিলাকে মহিলা রাষ্ট্রপতি হতে দিতে চায় না, তাদের জনগণের কাছে ভোট চাওয়ার অধিকার নেই। কারণ তারা জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।

শ্রী মোদী বলেন, মোদী বাংলার উন্নয়নে কাজ করছেন। বিজেপি সরকার ঝাড়গ্রামে একটি নতুন মেডিকেল কলেজ খুলেছে, বাংলার রেল যোগাযোগ উন্নত করেছে এবং রেলওয়ে স্টেশনগুলিকে আধুনিকীকরণ করেছে, কিন্তু যেখানে আইনশৃঙ্খলা নষ্ট হয়, সেখানে বিনিয়োগের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এবং শিল্পের বিকাশ হয় না। মেদিনীপুর এবং তমলুক শিল্প সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ কিন্তু এত বছর ধরে বাংলার তৃণমূল সরকার এখানে শিল্প বিকাশের অনুমতি দেয়নি। এটা শুধু তমলুকের দুর্ভাগ্য নয়, সমগ্র বাংলার দুর্ভাগ্য। জনগণের একটি ভোট টিএমসির পুরো সিন্ডিকেটের উপর ভারী হবে। মানুষের স্বপ্ন পূরণে দিনরাত কাজ করবেন মোদী। মাননীয় শ্রী মোদীজি তমলুক থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, কাঁথি থেকে শ্রী সৌমেন্দু অধিকারী এবং ঝাড়গ্রাম থেকে ডঃ প্রাণনাথ টুডুকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী করে দেশে আবারও মোদী সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *