নিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া, ১২ মে: বন্য দাঁতাল হাতির আক্রমণে অতিষ্ঠ তেলিয়ামুড়া মহকুমার ঘন জনবসতি পূর্ণ এলাকার সাধারণ নাগরিকেরা। এবারে বন্য হাতি মতিকে রেডিও কলার পরানোর অভিযানে নামল বনদপ্তর। আদৌ এই অভিযান কতটা সফলতা আনবে সেটা সময় সাপেক্ষ প্রমাণিত হবে।
তেলিয়ামুড়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য দাবী চলে আসছে দীর্ঘদিন যাবৎ। বিগত দিনে তেলিয়ামুড়া মহকুমার উত্তর মহারানী, কপালি বস্তি সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছে। নষ্ট হয়েছে মানুষের বাড়িঘর সহ ফসল ইত্যাদি। এর থেকে স্থায়ী সমাধানের জন্য বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন রাস্তা অবরোধ, ডেপুটেশন দেওয়া হয় এলাকাবাসীর তরফ থেকে। সরকারিভাবেও প্রতিবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এর বিরুদ্ধে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
শেষে রবিবার হাতির আক্রমণ থেকে মানুষকে নিস্তার দিতে প্রায় বছর পুরনো ব্যর্থ উদ্যোগ পুনরায় নিতে দেখা গেল দপ্তরকে। হাতির দলের মধ্যে বেশি আক্রমনাত্মক মতি নামের একটি হাতি রয়েছে। এই মতির আক্রমণের স্বীকার হয়ে প্রাণহানীও হয়েছে বলে খবর। এই আক্রমণাত্মক মতিকে রেডিও কলার পরানোর অভিযানে নামে বনদপ্তরের এক বিশাল টিম। আঠারমুড়া জংগল থেকে শুরু করে, ডি এম কলোনি, উত্তর মহারাণীপুর সহ বিস্তির্ণ এলাকায় এই টিম চসে বেরাচ্ছে মতিকে রেডিও কলার পরানোর জন্য।
রবিবার ভোর থেকেই শুরু হয় এই অভিযান। যতক্ষন না পর্যন্ত এ কাজ সফল হয় ততক্ষন চলবে তাদের এই অভিযান বলে জানান বন দপ্তরের আধিকারিক সহ অভিযানের প্রতিনিধিগন। এদিনের এই অভিযানে রয়েছেন ডাঃ কৌশল কানওয়ার শর্মা/ পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত, ডিন, ভেটেরিনারি কলেজ, আসম,ডাঃ আর কে সামল,আইএফএস প্রধান বন্যপ্রাণী ওয়ার্ডেন, ত্রিপুরা বনদপ্তর, ডঃ অক্ষয় বোরদে আই এফ এস, খোয়াই জেলা বন আধিকারিক সহ অন্যান্যরা।
তবে প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে আজ থেকে প্রায় ২৫-৩০ বছর ধরে বন্য দাঁতাল হাতির তাণ্ডবে অতিষ্ঠ গ্রামবাসীরা। প্রতিনিয়তই কোথাও না কোথাও অন্য জাতের হাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করছে গ্রামবাসীদের এমনকি মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে অনেক। হাতির তাণ্ডবের শুরু থেকে তেলিয়ামুড়া বনদপ্তর অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার মত কাজ করে যাচ্ছে। সরকারি অর্থভান্ডার থেকে কোটি কোটি টাকা খরচা করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কাজের কাজ অশ্বদিম্ব ছাড়া আর কিছুই নয়। একাংশ সাধারণ জনগণদের অভিমত হাতি তাড়ানো তো দূরের কথা বরং দিনের পর দিন হাতির উৎপাত বেড়েই চলেছে। কারণ বনদপ্তর দীর্ঘ ২৫-৩০ বছর ধরে কোন ধরনের সূরাহা বের করতে পারেনি। বলতে গেলে হাতির তান্ডব থেকে গ্রামবাসীদের রক্ষা জন্য অসফল তেলিয়ামুড়া বনদপ্তর। এখন দেখার বিষয়, বনদপ্তর বন্য দাতাল হাতির তাণ্ডব থেকে এলাকাবাসীদের রক্ষার জন্য গৃহীত এবারের উদ্যোগ কতটা সফল হয়।