BRAKING NEWS

সাদা শাড়ি, হাওয়ায় চটি দুর্নীতির প্রতিক,মমতাকে খোঁচা দিলীপের

দুর্গাপুর, ৬ মে (হি. স.) : “এতদিন পিসি, দিদি বলে ভোটটা নিয়েছেন। এখন নামটা বদনাম হয়েছে, বলে ভয় করছেন। লোক ঠিক নাম দিয়ে দেয়, লোক সব জানে। সারা সমাজ, সারা সমাজিক মাধ্যম বলছে। নাম পাল্টাবেন কেন? দলের নামও পাল্টাতে হবে। সততার প্রতিক আজ কলিমার প্রতিক। সাদা শাড়ি, হাওয়ায় চটি দুর্নীতির প্রতিক হয়ে গেছে।” সোমবার কাঁকসার গোপালপুরে চা- চক্র থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবে খোঁচা দিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।

হাতে গোনা আর ক’টা দিন পরই বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে নির্বাচন। তার আগে রাজনৈতিক প্রচারে জমে উঠেছে শিল্পশহর দুর্গাপুর-বর্ধমান। গত প্রায় এক মাস ধরে দুর্গাপরের বেসরকারি হোটেলে ঘাঁটি গেঁড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হোটেলের পাশে গান্ধীমোড় ময়দানে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার ‘স্ট্যান্ডবাই’ করে রাখা হয়েছে। তার ওপর রবিবার রাতে শহরে পা রেখেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাতে রাঢ়বঙ্গ জোনের দলের সমস্ত কার্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অমিতা শাহ। হেভিওয়েট প্রচারে কার্যত হাইপ্রোফাইল জোন হয়ে গেছে দুর্গাপুর সিটি সেন্টার।

এদিন সকলা রোজগার মতই কাঁকসার গোপালপুরে প্রাতঃভ্রমণ সারেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তারপর চা- চক্রে যোগ দেন তিনি। রবিবার লাভপুরের জনসভা থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন পিসি ভাইপো নয়, সাহস থাকলে আমাদের নাম বলুন। যদিও সে প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ পাল্টা জবাবে খোঁচা দিয়ে বলেন,”এতদিন পিসি দিদি বলে ভোটটা নিয়েছেন। এখন নামটা বদনাম হয়েছে বলে ভয় পাচ্ছেন! লোক ঠিক নাম দিয়ে দেয়, লোক সব জানে। সারা সমাজ, সারা সমাজমাধ্যম বলছে। আজ নাম পাল্টাবেন কেন? দলের নামও পাল্টাতে হবে।”

তিনি আরও বলেন,” হোর্ডিংয়ে কোথাও তৃণমূলের নাম দেওয়া হচ্ছে না। খালি ঘাস ফুলের ছবি দেওয়া হচ্ছে। কারণ তৃণমূল দলটাই বদনাম হয়ে গিয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেছেন আমাদের ভোট চাইতেও লজ্জা করছে। এমন কাজ করেন কেন? যাতে লজ্জিত হতে হয়।” তিনি আরও বলেন,” সততার প্রতীক আজ কালিমার প্রতিক হয়ে গিয়েছে। দুর্নীতির প্রতীক হয়ে গিয়েছে। হাওয়াই চটি, সাদা শাড়ি আজ দুর্নীতির প্রতীক।”

মুখ্যমন্ত্রী বীরভুমের মাটিতে পা রেখে বারবারই কেষ্ট মন্ডলের অনুপস্থিতিটা উপলব্ধি করেছেন। গতকাল লাভপুরের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,” কেষ্ট ছেলেটা উন্নয়ন করত।” মুখমন্ত্রীর কেষ্ট আবেগকে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ বলেন,” ভোটে জেতাবার লোক নেই তাই কেষ্টর কথা মনে পড়ছে।” গত ছ’ মাস ধরে সন্দেশখালি নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ। অথচ মুখ্যমন্ত্রী সেখানে এখনও পা রাখেননি। সেপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন,” আগে কুকুরে কামড়ে দিলেও উনি ছুটে যেতেন। আর সিবিআই ডাকতেন। এখন মহিলাদের সম্মানহানি, খুন ধর্ষন নিয়ে কোন আওয়াজ নেই। ভাইপোর স্বার্থরক্ষা ছাড়া কিছুই করেন না।”

রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির তদন্তে পুলিশকে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশকে অস্বীকার করেছেন রাজ্যপাল। যদি সেপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন,” পুলিশকে আমারও অস্বীকার করি। কারন পুলিশ ‘ক্যাডারের’ অভিনয় করে।” তিনি আরও বলেন,”পুলিশ যদি চক্রান্তে যুক্ত থাকে করতেই পারেন। রাজভবনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিরাপত্তা দিচ্ছে। এবার বুঝুন, পুলিশের কি যোগ্যতা আছে।”

তৃণমূল বলছে রাজ্যপালের পদকে কলঙ্কিত করেছে। সেপ্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন,” সর্বোচ্চ পদকে বদনাম করার জন্য চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র চরিত্রহননের চেষ্টা। তাতে কি পশ্চিমবঙ্গের সম্মান বাড়ছে?” তিনি বলেন,” মহিলাদের অসম্মানজনক কাজে লাগিয়ে, মহিলাদের ব্যাবহার করে ক্ষমতা ধরে রাখছে তৃণমূল। এধরনের নোংরা রাজনীতি কেউ কখনই দেখেনি। রাজ্যপালকেও ছাড়েনি। কারন, উনি বশ্যতা স্বীকার করেনি। সাংবিধানিক পদের কাজ করেন রাজ্যপাল। অত্যন্ত স্বজন ভদ্রলোক। উজ্জ্বল অতীত আছে। তৃণমূল আজ সাংবিধানিক পদের গরিমা নষ্ট করেছে। সন্দেশখালির ঘটনায় দুঃখিত হয়েছে, আর এই ঘটনায় মানুষ লজ্জিত। তবে সমাজ এর জবাব দেবে। এধরনের ‘ছোটলোকের’ রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *