BRAKING NEWS

জলজীবন মিশন অধরা, এখনো পানীয় জলের জন্য একমাত্র ভরসা ঝর্ণা কিংবা ছড়ার জল

আগরতলা, ৪ মে : ছোট্ট পার্বত্য রাজ্য ত্রিপুরা। আর এখানকার আদিবাসী জনগােষ্ঠীর মানুষেরা সাধারণত পাহাড়, বন ও প্রকৃতিকে আঁকড়ে ধরে বসবাস করে।যার কারণে এ জনগােষ্ঠীর লােকেরা আধুনিক সুযােগ-সুবিধা থেকে বহু দূরে অবস্থান করে। জীবন-জীবিকার তাগিদে, পেশাগত ও অন্যান্য কারণে আদিবাসী জাতির মানুষেরা দুর্গম পাহাড় বনাঞ্চলে বসবাস করে থাকে। ভারতের স্বাধীনতার প্রায় ৭৭ বৎসর আর ছোট্ট পার্বত্য ত্রিপুরার পূর্ণ রাজ্যের প্রায় ৫০ বৎসরের অধিক হলেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার আদিবাসী জনগােষ্ঠীর জন্য সরকারী বহু স্কিম চালু করলেও এখনো যেন উন্নয়নের ছোঁয়া তাদের কাছ থেকে বহু দুর। কোথাও পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ তো কোথাও পৌঁছয়নি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর। প্রতিদিন একটু বিশুদ্ধ পানিও জলের জন্য হাটতে হয় কয়েক কিলোমিটার পথ। তবে কয়েক কিলোমিটার পথ হাটলেও সরকারী জলের সুবিধা এখনো অধরা। তাই ঝরনা কিংবা ছড়ার জলের ওপর আজও নির্ভর করতে হয় তাদের। লাউড্স্পীকারে উন্নয়নের বুলি উনারাও শোনেন তবে উন্নয়নের ছোঁয়া যেন তাদের পাশকাটিয়ে বেড়িয়ে যায়।

সরকার আসে সরকার যায় আবার নতুন সরকার তৈরী হয়। কিন্তু আদিবাসী জনগােষ্ঠীদের কথা এবং তাদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের কথা মাইক যোগে অনেকে বললেও সিংহাসনে বসেই কোথায় যেন হারিয়ে যায় সেই প্রতিশ্রুতি।ঠিক এমনই একটি চিত্র ধরা পড়লো আমাদের প্রতিনিধির ক্যামেরায়। ঝা চকচকে শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত ঊনকোটি এ.ডি.সি ভিলেজের অন্তর্গত শিববাড়ী গ্রাম। ঊনকোটি জেলার জেলাসদর কৈলাসরের গৌরনগর ব্লকের অধীনে ঊনকোটি এ.ডি.সি ভিলেজের শিববাড়ী গ্রামে রয়েছে রিয়াং সম্প্রদায়ের বসবাস। প্রায় ৬০ পরিবারের দুইশতের অধিক রিয়াং জনজাতিতর বসবাস রয়েছে। বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছলেও ২৪ ঘন্টায় পরিষেবার নামে ৬ থেকে ৭ ঘন্টার বেশী বিদ্যুৎ পরিষেবা যেন স্বপ্নের মত। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৬০ পরিবারের অধিকাংশ পরিবার ঘর পেলেও কয়েকজন এখনো ঘর পাননি বলে জানা যায় স্থানীয়দের কাছ থেকে। তবে জল জীবন মিশনের নামে সরকারের আরম্ভরের সহিত প্রচার থাকলেও এখনো পরিচ্ছন্ন জল পৌঁছয়নি রিয়াং বস্তিতে। মাঝে মধ্যে সরকারের তরফ থেকে গাড়ি দিয়ে রিয়াং বস্তিতে জল পৌঁছে দিলেও বিগত একমাস ধরে জলের গাড়িও তাদের বস্তিতে যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ। আর এই অবস্থায় একমাত্র ছড়ার জলের ওপরই নির্ভর করতে হয় এখানকার জনজাতিদের। টিলাভূমির উপর থেকে নিচে ছড়া থেকে জল আনতে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় লাগে বলে জানান সেখানকার এক স্থানীয় বাসিন্দা। তবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় ছড়ায় তেমন একটা জল না থাকায় অসুবিধায় পড়েছেন সেখানকার মানুষ। তাই সরকারের কাছে তাদের দাবী প্রতিদিন যদি জলের গাড়ি দিয়ে অন্তত এক গাড়ি জল দেওয়া যায় তবে তারা পরিশোধ্য জল পান করতে পারেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, দুর্গম এসব পাহাড়ি টিলার পল্লীতে ঝর্ণা ও ছড়ার জল থাকলেও সবসময় সেখানে পর্যাপ্ত নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর জল পাওয়া যায় না। ফলে, ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। এছাড়া,এ ধরনের জল পান করার ফলে বিভিন্ন রকম জলবাহিত রোগ দেখা দেয় বলেও জানান স্থানীয় এক বাসিন্দা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *