কলকাতা, ৪ মে (হি.স.) : তিনি অসুস্থ। তিনি গৃহবন্দি। তা-ও তাঁকেই ভোটের ময়দানে ‘উপস্থিত’ করাতে চায় সিপিএম। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০২১ সালের নির্বাচনে আসল তাঁর অডিয়ো বার্তা প্রচার করেছিল সিপিএম। সেই অডিয়োতে বোঝা গিয়েছিল, বুদ্ধদেবের গলা ভেঙে গিয়েছে। এ বার কোনও কাল্পনিক চরিত্র নয়। স্বয়ং এআই-নিয়ন্ত্রিত বুদ্ধদেবকেই হাজির করল তারা। সেই ঘটনায় রীতিমত উজ্জীবিত সিপিএম নেতা-কর্মীরা।
কয়েক মাস আগে এআই প্রযুক্তিতে সংবাদপাঠের সঞ্চালিকা ‘সমতা’কে হাজির করেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তা নিয়ে সিপিএম নেতৃত্বের কেউ কেউ আপত্তি তুলেছিলেন। শনিবার বুদ্ধদেবের ক্ষেত্রে এখনও তেমন কিছু জানা যায়নি। কৃত্রিম বু্দ্ধদেবের বার্তা সমাজমাধ্যমে নিয়ে গেল রাজ্য সিপিএম। ব্যবহার করা হল নতুন প্রযুক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স)।
শনিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন সমাজ মাধ্যমে রাজ্য সিপিএমের হ্যান্ডল থেকে বুদ্ধদেবের একটি দু’মিনিট চার সেকেন্ডের বার্তা পোস্ট করা হয়। যাতে কৃত্রিম বুদ্ধদেবকে সন্দেশখালি, নির্বাচনী বন্ড, দুর্নীতি-সহ বিবিধ বিষয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছেন।
তবে একটি বিষয়ে আসল বুদ্ধদেবের সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধদেবের ফারাক অনেকেরই নজর এড়ায়নি। তা হল, অতীতে তৃণমূলকে রাজনৈতিক আক্রমণ করলেও কখনওই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়ে তিনি কিছু বলতেন না। তবে এআই বুদ্ধদেব নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা— দু’জনেরই নাম নিয়েছেন। কৃত্রিম বুদ্ধদেব আবেদন জানিয়েছেন, তৃণমূল এবং বিজেপিকে পরাস্ত করে বাম, গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে জয়যুক্ত করা হোক। যদিও বুদ্ধকণ্ঠে কংগ্রেসের কথা শোনা যায়নি।
অবিকল না-হলেও বুদ্ধদেবের কণ্ঠস্বর অনেকটাই মেলাতে পেরেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কী ভাবে হল? সিপিএম আইটি সেলের সূত্রে জানা গিয়েছে, বুদ্ধদেবের পুরনো বক্তৃতা শুনিয়ে এআইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রথমে অডিয়ো, তার পর ভিডিয়ো।
সব মিলিয়ে প্রশিক্ষণ পর্ব চলেছে গত ১০ দিন ধরে। নেপথ্যে কাজ করেছে ১২ জনের একটি টিম। সিপিএম জানিয়েছে, কোনও বাইরের সংস্থার সাহায্য নেওয়া হয়নি। সবটাই দলের তরুণ কর্মীরাই করেছেন। বিভিন্ন ওয়েবাসাইট থেকে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে কোনও খরচও হয়নি বলে দাবি সিপিএমের।