নয়াদিল্লি, ১৪ এপ্রিল (হি.স.): বিকশিত ভারতের ৪টি শক্তিশালী স্তম্ভকে মজবুত করবে বিজেপির সংকল্প পত্র। এই ৪টি স্তম্ভ হল – যুবশক্তি, নারী শক্তি, দরিদ্র ও কৃষক। বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, আমাদের লক্ষ্য জীবনের মর্যাদা, জীবনের গুণমান এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের উপর! বিজেপি রবিবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী ইস্তেহার – সংকল্প পত্র প্রকাশ করেছে। নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “বিজেপির সংকল্প পত্রের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে গোটা দেশ। এর একটা বড় কারণও আছে! গত ১০ বছরে বিজেপি প্রতিটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “মোদীর গ্যারান্টি হল বিনামূল্যে রেশন প্রকল্প আগামী ৫ বছর অব্যাহত থাকবে। আমরা নিশ্চিত করব, দরিদ্রদের দেওয়া খাবার যেন পুষ্টিকর, সন্তোষজনক এবং সাশ্রয়ী হয়। এখন বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৭০ বছরের বেশি বয়সী প্রত্যেক বয়স্ক ব্যক্তিকে আয়ুষ্মান প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেক বয়স্ক ব্যক্তি, তা সে দরিদ্র, মধ্যবিত্ত অথবা উচ্চ মধ্যবিত্ত হোক, ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাবেন।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেছেন, “বিজেপি সরকার গরিবদের জন্য ৪ কোটি পাকা বাড়ি তৈরি করেছে। এখন রাজ্য সরকারগুলির কাছ থেকে আমরা যে অতিরিক্ত তথ্য পাচ্ছি, তা বিবেচনা করে, আমরা সেই পরিবারের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি আরও ৩ কোটি বাড়ি তৈরির প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে যাব। এখনও পর্যন্ত আমরা প্রতিটি বাড়িতে সস্তা সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়েছি, এখন আমরা পাইপের মাধ্যমে সস্তা রান্নার গ্যাস প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দ্রুত কাজ করব।” প্রধানমন্ত্রী মোদী জোর দিয়ে বলেছেন, ভারতীয় জনতা পার্টি দেশের সামাজিক, বাস্তবিক এবং ডিজিটাল পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করতে থাকবে। বিজেপি ঐতিহ্যের পাশাপাশি উন্নয়নের মন্ত্রে বিশ্বাসী বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, “আমরা সারা বিশ্বে তিরুভাল্লুভার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করব। বিশ্বের প্রাচীনতম ভাষা তামিল আমাদের গর্ব। তামিল ভাষার বৈশ্বিক মর্যাদা বাড়ানোর জন্য বিজেপি সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।”
বিজেপি ঐতিহ্যের পাশাপাশি উন্নয়নের মন্ত্রে বিশ্বাসী : প্রধানমন্ত্রী
বিজেপি ঐতিহ্যের পাশাপাশি উন্নয়নের মন্ত্রে বিশ্বাসী। জোর দিয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “আমরা সারা বিশ্বে তিরুভাল্লুভার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তৈরি করব। বিশ্বের প্রাচীনতম ভাষা তামিল আমাদের গর্ব। তামিল ভাষার বৈশ্বিক মর্যাদা বাড়ানোর জন্য বিজেপি সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।” রবিবার বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহার – সংকল্প পত্র প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “বিজেপির সংকল্প ভারতকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের কেন্দ্রে পরিণত করা। এতে মূল্য সংযোজন হবে, কৃষকের মুনাফা বাড়বে এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “বিজেপি প্রকৃত অর্থে সামাজিক উন্নয়ন এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে। আমরা আয়ুষ্মান ভারত যোজনার আওতায় প্রবীণ নাগরিক এবং ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়কে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” নারী ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “এখন ভারত নারী নেতৃত্বে উন্নয়নে বিশ্বকে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। গত ১০ বছর নারীর মর্যাদা এবং নারীদের জন্য নতুন সুযোগের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। আগামী ৫ বছর হবে নারী শক্তির নতুন অংশগ্রহণ!”
সমবায়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধির স্বপ্ন অনুসরণে বিজেপি জাতীয় সমবায় নীতি আনবে : প্রধানমন্ত্রী
সমবায়ের মাধ্যমে সমৃদ্ধির স্বপ্ন অনুসরণ করে, বিজেপি জাতীয় সমবায় নীতি আনবে। রবিবারব বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশিত হওয়ার পর বললেন বিজেপি নেতা তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, “সমগ্র দেশে দুগ্ধ ও সমবায় সমিতির সংখ্যাও অনেকাংশে বাড়ানো হবে।” সংকল্প পত্র প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, “আমাদের সংকল্প পত্র যুব ভারতের তরুণ আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন! গত ১০ বছরে ভারতের প্রায় ২৫ কোটি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছেন। এটি ভারতীয় জনতা পার্টির কাজ করার ফলাফল-ভিত্তিক পদ্ধতির দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রমাণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে।”
প্রথম দফায় লোকসভা ভোট হবে আগামী শুক্রবার। তার চার দিন আগে ইস্তাহার প্রকাশ করল বিজেপি। ‘সংকল্প পত্রে’ ‘মোদীর গ্যারান্টি’র উপর জোর দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, মোদী দলের ইস্তাহারে মহিলা, যুব সম্প্রদায়, কৃষক এবং গরিব মানুষকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। হিন্দিতে এই চারটি শ্রেণির আদ্যক্ষরকে জুড়লে হয় ‘জ্ঞান’। দলের ইস্তাহার প্রকাশ হওয়ার পর বক্তব্য রাখতে উঠে মোদী বলেন, “মোদীর গ্যারান্টি এই যে, বিনামূল্যে রেশন বণ্টনের প্রকল্প আগামী ৫ বছরের জন্য চালু থাকবে।”
রবিবার সকালে ইস্তাহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, ইস্তাহার কমিটির প্রধান তথা কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন-সহ বিজেপির অন্য শীর্ষনেতারা।