BRAKING NEWS

মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর হাত ধরে ৪০৪ ভোটার বিজেপিতে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ এপ্রিল: লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। সারাদেশের সাথে রাজ্যেও জোর কদমে চলছে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি। দলীয় প্রচারে ঝড় তুলছেন প্রত্যেকটি দল। রাজ্যও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তেও বিরোধী দলে ভাঙ্গন অব্যাহত রেখেছে শাসক দল বিজেপি। শুক্রবার সন্ধ্যায় মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরীর হাত ধরে ১১৭ টি পরিবারের ৪০৪ জন ভোটার বিজেপিতে যোগদান করেছেন। এদিন নবাগতদের দলে বরণ করে নিয়েছেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।

এদিনের যোগদান সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ৩৫ বছর বাম রাজত্বে মজলিশপুর সহ সারা রাজ্যে কয়েকশত কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছেন। বিরোধী দল করার অপরাধে বহু কর্মীর বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ব্যতিক্রম ছিলনা মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রও। প্রতিটি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বেছে বেছে সেই সময় কংগ্রেস কর্মীদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হতো। আজ সেইসব কথা ভুলে গিয়ে কংগ্রেস নেতারা সিপিএম’র সাথে মিশে গেছেন।

তারা এক সাথে মিলে ভোটে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন। এই অশুভ জোটকে প্রত্যাখ্যান করে আগামী দিনে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্র সহ সারা রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের প্রবাহ ধরে রাখতে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত করতে হবে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।

তাই ভারতীয় জনতা পার্টির প্রার্থীদের বিপুল ভোটে বিজয়ী করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতকে শক্তিশালী করতে গণদেবতার কাছে আহ্বান রাখলেন মজলিশপুর কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।

শুক্রবার বিকেলে নিজ বিধানসভা কেন্দ্রের জিরানীয়া বাজারে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত পশ্চিম ত্রিপুরা আসনের প্রার্থী বিপ্লব কুমার দেবের সমর্থনে আয়োজিত এক যোগদান সভায় একথা বলেন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। আর এই নির্বাচনী সভায় প্রধানমন্ত্রীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সিপিআইএম দল ছেড়ে আসা ১১৭ টি পরিবারের ৪০৪ জন ভোটারকে ভারতীয় জনতা পার্টিতে স্বাগত জানান মজলিশপুর কেন্দ্রের বিধায়ক।

সভায় মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী এদিন আরো বলেন, যেকোন রাজ্য বা দেশের উন্নয়ন তখনই সম্ভব যখন সর্বত্র শান্তির পরিবেশ বিরাজ করবে। ভারতীয় জনতা পার্টি রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর গ্রাম-পাহাড়ে আইন শৃঙ্খলার উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। এখন নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর কোন রাজনৈতিক খুনের ঘটনা ঘটে না। এখন মন্ত্রী বিধায়করা খুন হন না। অথচ এর আগে আমরা দেখেছি যে কীভাবে একটি অংশ রাজ্যের শান্তি বিনষ্ট করার জন্য কাজ করেছে। মানুষ এটা চায় না, তারা চায় শান্তিতে বসবাস করতে। ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বামেদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন বর্তমান সময়ে রাজ্যের চলমান উন্নয়নমূলক জনহিতকর কাজ বামপন্থী ও তাদের সহযোগী কংগ্রেসীদের একদমই সহ্য হচ্ছে না। বিগত বিধানসভা নির্বাচনে জোট বেঁধে এদের ভরাডুবির পর এরা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এরা এখন বলে বেড়াচ্ছে রাজ্যে নাকি গনতন্ত্র নেই। অথচ বামেদের  শাসনকালে গ্রামাঞ্চলে সিপিআইএম দলের ক্যাডারদের অত্যাচারে সাধারণ মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা লোপ পেয়েছিলো। সিপিআই(এম) পার্টির আশ্রয়ে সর্বব্যাপী দুর্নীতি ও অপরাধচক্র জাঁকিয়ে বসেছিলো। সিপিআই(এম) ক্যাডারদের তোলাবাজির ভয়ে ত্রিপুরায় বহিঃ রাজ্য থেকে এখানে কেউ বিনিয়োগ করতে আগ্রহ দেখাতেন না। রাজ্যের সাধারণ মানুষের পিছিয়ে পড়ার মূল কারণ ছিলো বামফ্রন্ট  সরকারের দেউলিয়াপনা। এক অকর্মণ্য প্রশাসন যন্ত্র বামফ্রন্ট সরকার বানিয়ে রেখেছিলো নিজেদের ক্যাডরদের কাজ পাইয়ে দেবার জন্য।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লক্ষ্য হচ্ছে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষের সার্বিক উন্নয়ন। প্রধানমন্ত্রী মোদি মানেই উন্নয়নের গ্যারান্টি। তিনি বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার সূচনা করেছেন। যাতে সকল অংশের মানুষ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জনমুখী প্রকল্প থেকে উপকৃত হতে পারেন। একইভাবে রাজ্য সরকারও মানুষের মৌলিক অধিকার পৌঁছে দিতে ‘প্রতি ঘরে সুশাসন’ অভিযান চালু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির কারণে ত্রিপুরা সহ অন্যান্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরার দুটি আসনেই বিজেপির জয় নিশ্চিত বলে দাবি করেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *