নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ এপ্রিল: জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ১২৭ক ধারায় ভারতের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রচার পুস্তিকা-পোস্টার ছাপানোর বিষয়ে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
এই বিধিনিষেধগুলির মধ্যে উল্লেখ্য রয়েছে:
১) প্রচার পুস্তিকা বা পোস্টারের সামনের পাতায় মুদ্রণ সংস্থা ও প্রকাশকের নাম ও ঠিকানা থাকতে হবে।
২) কোনও ব্যক্তি কোনও নির্বাচনী প্রচার পুস্তিকাদি ছাপাতে কিংবা ছাপানোর জন্য নির্দেশ দিতে পারবে না যদি না প্রকাশক মুদ্রণ সংস্থার কাছে তার স্বাক্ষরিত দুই কপি ঘোষণাপত্র জমা করে। তার পরিচিতির স্বপক্ষে দুই জন ব্যক্তির স্বাক্ষরও থাকতে হবে ঘোষণাপত্রে। ছাপানোর কিছুদিনের মধ্যে মুদ্রণ সংস্থাকে সেই ঘোষণাপত্র ও ছাপানো প্রচার পুস্তিকাটি পাঠাতে হবে কমিশনের কাছে। রাজ্যের রাজধানীর ক্ষেত্রে তা জমা দিতে হবে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে। জেলার ক্ষেত্রে তা জমা পড়বে যে জেলায় মুদ্রিত হয়েছে সেই জেলার জেলাশাসকের কাছে।
৩) একমাত্র হাতে লেখা বাদ দিয়ে অন্য যেকোনওভাবে সেই প্রচার পুস্তিকার একাধিক প্রতিলিপি প্রকাশ করলেও তা মুদ্রক বা মুদ্রণ বলে বিবেচিত হবে। এখানে ‘নির্বাচনী পুস্তিকা / পোস্টার’ বলতে যে কোনও দলিল যা নাকি নির্বাচনে ভোটারদের স্বপক্ষে টানার জন্য কোনও প্রার্থী বা দলের জন্য ছাপানো হয়েছে তাকে বোঝানো হয়েছে।
৪) যে কোনও ব্যক্তি এই আইনের উপধারা (১) বা উপধারা (২)-এর কোনও নিয়ম লঙ্ঘন করলেই তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ৬ মাস পর্যন্ত জেল কিংবা জরিমানা কিংবা উভয়ই হতে পারে।
৫) উপরোক্ত বিধিনিষেধ বলবৎ করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কিছু নির্দেশ জারি করেছে। যেমন (ক) সংসদীয় নির্বাচন কিংবা বিধানসভা নির্বাচন হোক নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই জেলাশাসকগণ সংশ্লিষ্ট জেলায় মুদ্রণ সংস্থাগুলিকে নির্বাচনী পুস্তিকা ছাপানো ও প্রকাশের বিষয়ে উপরোক্ত নিয়মগুলি সম্পর্কে লিখিতভাবে জানিয়ে দেবেন। (খ) রাজ্যের রাজধানীতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকও তাই করবেন। (গ) তাই কোনও নির্বাচনী প্রচার পুস্তিকাদি ছাপানোর আগে মুদ্রককে প্রকাশকের কাছ থেকে উল্লিখিত ঘোষণাপত্রটি নিয়ে নিতে হবে। (ঘ) প্রচার পুস্তিকাটি ছাপা হয়ে গেলে মুদ্রক মুদ্রিত দলিলের চার কপি সহ প্রকাশকের ঘোষণাপত্রটি তিনদিনের মধ্যে পাঠাতে হবে। তাছাড়া নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট ফরম্যাটে কত কপি ছাপানো হয়েছে এবং কত টাকা খরচ হয়েছে তাও জানাতে হবে। (ঙ) জেলার ক্ষেত্রে এরকম ঘোষণাপত্র ও যাবতীয় তথ্যাদি পাওয়ার পর জেলাশাসক খতিয়ে দেখবেন এতে নিয়মগুলি মানা হয়েছে কিনা এবং তার একটা কপি তার অফিসের একটা উপযুক্ত জায়গায় টাঙিয়ে দেবেন সর্বসাধারণের অবগতির জন্য।
৬) তাই এই মর্মে কমিশন সমস্ত রাজনৈতিক দল, প্রার্থীদের নিয়ম লঙ্ঘনের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে। এমনকি দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকগণও দায়িত্ব পালনে অসফল হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।