হাফলং (অসম) ২৬ মার্চ (হি স) : ডিমা হাসাও জেলার হাফলং থানার অন্তর্গত লোয়ার হাফলঙে ছেলেধরা সন্দেহে এক মহিলাকে বেধরক প্রহার উত্তেজিত জনতার। এই ঘটনাটি সংগঠিত হয় সোমবার দোল পূর্ণিমার সন্ধ্যায়। জানাগেছে নেপাল থেকে নিজের মায়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে এই ঘটনার সন্মুখীন হন কমলা দাহাল নামের ওই মহিলা। সোমবার ছিল দোল পূর্ণিমা এদিন বিকেলে ওই মহিলা নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাফলং শম্ভুধন রাজি নিজের দিদির বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা হলে রাস্তায় একটি শিশুকে পেয়ে চকলেট ও একশো টাকা দেয় এবং সে সময় ওই শিশুটির বাবা সেখানে উপস্থিত হয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই তার ছেলেকে ছেলেধরা ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে চিৎকার শুরু করে আর তখনই এলাকার বহু লোক জরো হয়ে ওই মহিলাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে আক্রমন করে। উত্তেজিত জনতার প্রহারে তখন ওই মহিলা অচেতন হয়ে পড়ে কিন্তু সে সময় সেখানে থাকা কেউ মহিলাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। এতে ওই মহিলা গুরুতর ভাবে আহত হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে আক্রমন করে এতে টিএসআই লক্ষীধর শইকীয়া সহ বেশ কিছু পুলিশ কর্মী গুরুতর ভাবে আহত হয়। এমনকি উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ীতে ও আক্রমন করে এতে পুলিশের গাড়ীটি ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিক ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে গুরুতর আহত মহিলাকে হাফলং সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। তাছাড়া গুরুতর ভাবে আহত এক পুলিশ কর্মীকে হাফলং সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই পুলিশ লোয়ার হাফলঙে এক অভিযান চালিয়ে ওই মহিলা ও পুলিশ কর্মীকে আক্রমনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বেশ কিছু লোককে গ্রেফতার করে।
এদিকে হাফলং সরকারি হাসপাতালে ওই মহিলার দিদি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন কিছু দিন তার ছোট বোন কমলা দাহাল নেপাল থেকে হাফলং আসে বেড়াতে এবং সোমবার বিকেলে শম্ভুধন রাজিতে তার বাড়িতে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হয়। এবং রাস্তায় একটি শিশুকে পেয়ে শিশুটিকে একটি চকলেট কিনে দেয় এবং একশো টাকার একটি নোট ও দেয় কিন্তু সে সময় শিশুটির বাবা সেখানে উপস্থিত হয়ে বাচ্চা তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে চিৎকার শুরু করলে আশপাশ এলাকার পুরুষ মহিলারা এক জোট হয়ে ওই মহিলাকে বেধরক মারপিট শুরু করে এতে ওই মহিলা গুরুতর ভাবে আহত হয়। বর্তমানে আশঙ্কা জনক অবস্থায় ওই মহিলার চিকিৎসা চলছে হাফলং সরকারি হাসপাতালে। এদিকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ডিমা হাসাও জেলার পুলিশসুপার ময়ঙ্ক কুমার এক সাংবাদিক সন্মেলন করে বলেন সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ লোয়ার হাফলঙে এই ঘটনা সংগঠিত হয়। তিনি বলেন সোমবার পুলিশের কাছে খবর আসে যে লোয়ার হাফলং বাজারের কাছে নেপাল থেকে আসা এক মহিলাকে ছেলেধরা সন্দেহ করে উত্তেজিত জনতা প্রানঘাতি হামলা চালায় এতে ওই মহিলা গুরুতর ভাবে আহত হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে উত্তেজিত জনতা পুলিশের উপর আক্রমন চালায় এতে তিন পুলিশ কর্মী আহত হয় এদের মধ্যে এক পুলিশ কর্মীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়ে দেয়। পুলিশসুপার জানিয়েছেন এই ঘটনায় জড়িত চার মহিলা তিন জন পুরুষকে আটক করে এক মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশসুপার ময়ঙ্ক কুমার।