নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ২৮ ফেব্রুয়ারি: ধান আর গানের ভাল ফলনের জন্য বীজই হল আসল। বীজ সংরক্ষণ করতে না পারলে বেশি ফলনের আশা করা বাতুলতা মাত্র। আজকাল অনেক দেশীয় ধানের বীজ যেমন হারিয়ে গেছে। তেমনি লোকসংস্কৃতির ভান্ডার থেকেও অনেক গান, অনেক সুর হারিয়ে গেছে। শাইল, চম্পাকলি, ইরি, সুগন্ধী, সোনামুখী এসব ধান আজ বিলুপ্ত। তেমনি ক্ষণ গান, ছাদ পেটার গান, মাঘ স্নানের গানের মতো অসংখ্য লোকগান আজ কালের অতল গর্ভে তলিয়ে গেছে।
তাই লোকগানের সংরক্ষন, চর্চা, লোকগানের পরিশুদ্ধতা বজায় রাখার উদ্যোগ গ্রহন করেছে ত্রিপুরা লোকসংস্কৃতি সংসদ। ছ’বছর আগে এ সংসদের পথচলা শুরু করেছে।
লোকসংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে প্রতি বছর সংসদ রাজ্য ভিত্তিক লোকসংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন করে। এবারও সংস্কৃতির শহর ধর্মনগর টাউন হলে গত ২৪-২৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্য ভিত্তিক লোকসংস্কৃতি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
ধর্মনগর থেকে সাক্রম পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৫০ জন বাছাই করা শিল্পী এই অনুষ্ঠানে লোকসঙ্গীত পরিবেশন করেন। লালন, হাছন, রাধারমন, ভব্য পাগলা প্রমুখ মহাজনী গানের পাশাপাশি বাউল, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, চটকা, ধামাইল ইত্যাদি লোকগান শিল্পীরা দু’দিন ধরে উৎসবে পরিবেশন করেন। অবহেলিত ভিক্ষুকদের গান পরিবেশন করে সকলকে তাক লাগিয়ে দেন প্রবীন শিল্পী মনোরঞ্জন দাস।
লিলেন দেবের বিচ্ছেদী গান সকলের হৃদয় স্পর্শ করে। ছোটদের মধ্যে ধর্মনগরের সৌম্যদীপ্ত দাস ভবা পাগলার গান গেয়ে সকলের নজর কাড়ে। ধর্মনগর কলামন্ডলের শিল্পীরা ওঝা নৃত্য পরিবেশন করে দর্শক-শ্রোতার প্রশংসা অর্জন করে।
এই অনুষ্ঠানে সবচেয়ে উল্লেখ করার মতো বিষয় ছিল ধর্মনগরের ছেলেদের ধামাইল। ছেলেদের ধামাইল নৃত্য আজকাল তেমন দেখা যায় না।