ফের বন্ধ হয়ে গেল জলপাইগুড়ির দেবপাড়া চা বাগান, কর্মহীন ১২০০ জন

বানারহাট, ২৩ জানুয়ারি (হি.স.) : কোনও রকম নোটিস ছাড়াই কার্যত বাগান ছেড়ে পালিয়ে গেলেন মালিক পক্ষ । ফলে ফের বন্ধ হয়ে গেল জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের দেবপাড়া চা বাগান । কর্মহীন প্রায় ১ হাজার ২০০ জন শ্রমিক। মঙ্গলবার সকালে ফ্যাক্টরির গেটে তালা ঝুলতে দেখে শোরগোল পড়ে যায় শ্রমিকদের মধ্যে।

মঙ্গলবার সকালবেলা যথারীতি কাজে যোগ দিতে আসেন বাগানের শ্রমিকরা। প্রথমে তাঁদের নজরে আসে বাগানের অফিস বন্ধ। দেখা মেলেনি কারোর। এমনকী উপস্থিত ছিলেন না ম্যানেজারও। আসেনি অফিস অন্যান্য আধিকারিকরা। দীর্ঘক্ষণ বাগান গেটে এভাবে দাঁড়িয়ে থেকে খোঁজাখুঁজি করার পর তাঁদের সন্ধান না মেলায় বুঝতে পারেন বাগান ছেড়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে গিয়েছেন বাগান কর্তৃপক্ষ। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

এক কর্মহীন চা শ্রমিক বলেন, “আমরা ৪৫ দিন কাজ করেছি। তার টাকা দেয়নি। আজ এসে দেখি সব অফিস বন্ধ। কোথাও কেউ নেই। আমরা প্রথমে বুঝতে পারিনি। বেলা বাড়ার পর সবটা পরিষ্কার হয়ে গেল। আসলে ওরা পালিয়ে গিয়েছে। চা বাগান বন্ধ করে চলে গিয়েছে।”

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত বছর ২০ জুন খোলে এই বাগান। এরপর বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে গত নভেম্বর মাসে থানা ঘেরাও এবং সড়ক অবরোধ করেছিলেন শ্রমিকরা। অভিযোগ, শ্রমিকদের নিয়মিত পারিশ্রমিক দিচ্ছে না বাগান কর্তৃপক্ষ। প্রায় চার মাসের বেশি সময় ধরে হাজিরা পাচ্ছেন না তাঁরা। পাশাপাশি, দীর্ঘ এক বছর ধরে বাগানের কর্মীরাও বেতন পাচ্ছেন না। গতকাল বাগানের কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের বকেয়া টাকা মেটানোর দাবি জানিয়েছিলেন শ্রমিকরা। বাগান কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে আশ্বাসও দিয়েছিল। গতকাল বিকেলের মধ্যে প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে বলে জানানো হয়েছিল। তবে রাতেই বাগান ছেড়ে চলে যায় বাগান কর্তৃপক্ষ।

উল্লেখ্য, এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, বন্ধ হওয়া ছটি চা বাগান সরকার নিয়ে নেবে। এছড়াও বন্ধ হওয়া চা বাগানের শ্রমিকদের দেড় হাজার টাকা দেওয়া হবে। মমতা একদিকে যখন জনমুখী প্রকল্প করছেন সেই সময় আবার চা বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় কার্যত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *