দুর্গাপুর, ২২ জানুয়ারি (হি. স.) এ যেন অকাল দীপাবলি। পাঁচ’শ বছর পর অযোধ্যায় নব নির্মিত রাম মন্দিরে যখন প্রাণ প্রতিষ্ঠা চলছে। সারা দেশ যখন সেই উৎসবে মাতোয়ারা। সোমবার ঠিক তখনই প্রায় সাড়ে ছ’শ কিলোমিটার দূরে পানাগড়ে আর এক রাম মন্দির নির্মাণের ভিত পূজা করল রামনবমী সেবা সমিতি। পানাগড় বাজার রনডিহা মোড় এলাকায় আরও একটি রাম মন্দির নির্মাণের সূচনা হল।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরে রাম ভক্তিতে উৎফুল্ল গোটা দেশ। পাঁচ’শ বছর পর আবারও অযোধ্যায় রামজন্মভূমিতে রামলালার প্রা্ণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সোমবার সেই মহেন্দ্রক্ষণের দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব। আর সেই শুভদিন শুভমুহুর্ত আধ্যাত্মিক আবেগ ভক্তি, প্রেম দিয়ে উৎসব পালন করেছে সনাতনী হিন্দুরা। এদিন সারা দেশের সঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুর, পানাগড়, বুদবুদেও পালিত রামলালার প্রান প্রতিষ্ঠার উৎসব। এদিন সকালে কাঁকসার সিলামপুরে দামদোর থেকে শতাধিক মহিলা কলসযাত্রায় সামিল হয়। সেখানে হুনুমান মন্দিরে সকাল থেকে পূজার্চনা, নরনারায়ন সেবা, লাড্ডু বিলি করা হয়। একইরকমভাবে পানাগড়- মোরগ্রাম সড়কেরও ওপর বসুধায় সকাল থেকে ছিল উৎসব মুখর। অজয় সেতু থেকে এগারো মাইল মোড় প্রায় ৫ কিলোমিটার ১৬ দল মিলিত ভাবে হরিনাম সংকির্তনের সহকারে শোভাযাত্রা করে। তার সঙ্গে বসুধা হাটতলায় হোম যোজ্ঞ হয়। প্রসাদ বিতরনের পাশাপাশি নরনারায়ন সেবা করানো হয়। আবার দুর্গাপুর ভারতী শিব মন্দিরে একইরকমভাবে সকাল থেকে পূজার্চনার পাশাপাশি আড়াই হাজার লাড্ডু বিলি, তার সঙ্গে ছিল লুচি, পায়েসের প্রসাদ বিতরন। তবে পানাগড়ের উৎসব ছিল একেবারে অন্যরকম। পানাগড় বাজারের রাম নবমী উৎসব পালন মানুষের নজরকাড়া। এবার রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার উৎসব ছিল। আর তাই গত কয়েকদিন ধরে গোটা পানাগড় বাজার সেজে উঠেছিল। গতকাল পানাগড় রনডিহা মোড়ে রাম ভক্তদের ছিল রক্তদিন শিবির। সোমবার সকালে প্রায় শ’পাঁচেক রামভক্তর মোটরবাইক র্যাালি। জয় শ্রীরাম ধ্বনিতে গোটা বাজার ছিল মুখরিত। বেলা গড়াতেই শুরু হয় হোম যজ্ঞ। তার সঙ্গে মাতৃশক্তির ভজন। একই সঙ্গে প্রায় দেড় টন লাড্ডু বিতরণ, হুনুমান চল্লিশা, সুন্দরকান্ড পুস্তিকা বিতরণ। দুপুর ১২ টা ২২ মিনিট নাগাদ অযোধ্যায় নব নির্মিত রামমন্দির যখন রামলালার প্রতিষ্ঠা চলেছে। ঠিক সেই মহেন্দ্রক্ষণে রনডিহা মোড়ে পুর্ব নির্ধারিত জায়গায় রাম মন্দির তৈরীর ভিত পূজা শুরু হয়। একই সঙ্গে সেখানে গৈরিক ধ্বজ টাঙানো হয়। তারপর দুপুরে ১০৮ জন পূণ্যর্থী দ্বারা সুন্দরকান্ড পাঠ। সন্ধ্যা গড়াতেই গোটা বাজার দীপাবলির মতই আলোর উৎসবে মেতে ওঠে। বাড়ি বাড়ি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন হয়।
পানাগড় রামনবমী সেবা সমিতির সম্পাদক পবন আগরওয়াল জানান,” প্রভু শ্রীরামচন্দ্র আমাদের আবেগ। পাঁচ’শ বছর পর সনাতনী হিন্দুদের স্বপ্নপুরণ হচ্ছে। আমাদের এখানেও রাম মন্দির তৈরীর পরিকল্পনা ছিল। তাই আজকের এই শুভক্ষণে রামমন্দির নির্মানের ভিতপূজা করা হল। এবার মন্দির নির্মাণ করা হবে।” একইরকম ভাবে এদিন বুদবুদেও রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা উৎসব পালিত হয়।