কলকাতা, ২৬ ডিসেম্বর (হি.স.) : মঙ্গলবারের কলকাতা সফরের ফাঁকে বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট করেই বুঝিয়ে দিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বা কোনও তদন্তকারী সংস্থার উপরে নির্ভর করে নির্বাচনে লড়ার কথা ভাবলে চলবে না। রাজ্য নেতৃত্বকে নিজেদের জোরেই ভোট লড়তে হবে! তৃণমূলের মোকাবিলায় সংগঠন মজবুত করেই ভোটে নামতে হবে! কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পাশে আছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার নয়।
দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মধ্যাহ্নভোজ এবং বৈঠক চলে নিউ টাউনের হোটেলে। সেখানে মূলত ডাকা হয়েছিল রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক বিষয় যাঁরা দেখেন তাঁদের। সুকান্ত, শুভেন্দু ছাড়াও ছিলেন পাঁচ সাধারণ সম্পাদক। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্দ। অনেকের মতে, শাহের এই বার্তা রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কাছে হতাশাজনক। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরেই তৃণমূলকে দুর্বল করতে কেন্দ্র ‘কড়া পদক্ষেপ’ করবে বলে আশা করছিলেন তাঁরা। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ‘তারিখ’ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হলেও সবুরে মেওয়া ফলেনি।
বিজেপি সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সেই বার্তাই আবার স্পষ্ট ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন শাহ। যার মর্মার্থ— সংগঠন শক্তপোক্ত করে তৃণমূলকে রাজনৈতিক ভাবে হারাতে হবে।জানা গিয়েছে, বৈঠকে উপস্থিত সকলেরই মতামত শুনেছেন শাহ ও নড্ডা। লোকসভা নির্বাচনে কী কী করা দরকার, তা নিয়ে সকলের পরামর্শও শুনতে চান তাঁরা। তবে এটাও স্পষ্ট করে দেন যে, শুধু পরামর্শ দিলেই হবে না। কাজ করে দেখাতে হবে সবাইকে। নেতারা কাজ না করলে কর্মীরা পথে নামবেন না বলেও বুঝিয়ে দেন শাহ।
বর্তমানে কোনও সাংগঠনিক দায়িত্বে না থাকলেও ডাক পেয়েছিলেন দুই প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এবং দিলীপ ঘোষ। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে এই বৈঠকে কারা আসবেন, তা শাহ-নড্ডাই ঠিক করে দিয়েছিলেন। রাহুল এবং দিলীপবাবুকে ডাকার মধ্যে দিয়ে তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছে, দলের খারাপ সময়ে লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতাদেরও গুরুত্ব দেওয়া হবে লোকসভা নির্বাচনে।
প্রসঙ্গত, রাহুল রাজ্য সভাপতি থাকার সময়ে ২০১৪ সালে বাংলা থেকে দু’টি আসনে জেতে বিজেপি। আর দিলীপবাবুর জমানায় ১৮টি আসন পায়। বিধানসভা নির্বাচনেও ৭৭ আসনে জয় এসেছিল তাঁর সময়ে।