সনাতনী শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ধর্মনগরে  তৈরি হচ্ছে গুরুকুল, প্রয়োজন সরকারি সাহায্যের

নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ২৪ ডিসেম্বর : ধর্মনগর মহাকুমাধীন বাগবাসা বিধানসভা এলাকায় বালুছড়া এডিসি ভিলেজ সংলগ্ন এলাকায় সম্পূর্ণ নিজের আদলে গড়ে উঠছে ছেলেদের জন্য গুরুকুল। শহর থেকে দূরে অর্থাৎ যেখানে হৈচৈ হট্টগোল এইসবের কোন প্রভাব থাকবে না গাড়ির আওয়াজ পরিবেশকে ব্যতিব্যস্ত করবে না এমন একটা নির্জন পরিবেশে গড়ে উঠছে ছেলেদের জন্য গুরুকুল।
ভারতীয় বিদ্যাভারতীর সিস্টেমে পরিচালিত এই গুরুকুল শিক্ষাপদ্ধতি। বলা যায় শনিছড়া নদীয়াপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান রানা সিনহার একান্ত প্রয়াসে এই ছেলেদের গুরুকুল গড়ে তোলার আয়োজন। ইতিমধ্যে মেয়েদের জন্য এই শনি ছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি গুরুকুল রয়েছে। সেই সনাতনী ভারতের আদি শিক্ষা ব্যবস্থার অনুকরণে এখন শহর থেকে কিছুটা দূরে, জনজীবন থেকে খানিক বিচ্ছিন্ন হয়ে গড়ে উঠছে ছেলেদের জন্য এই গুরুকুল।

প্রায় সাড়ে নয় কানি জায়গা বন্দোবস্ত করা হয়েছে এই গুরুকুল আশ্রমের জন্য। এখনো বলা যায় গভীর জঙ্গল যাতায়াতের রাস্তার সঠিকভাবে তৈরি হয়নি। উঁচু-নিচু পাহাড়ে উপত্যকা তারই মধ্যে আধুনিক চিন্তাধারাকে কাজে লাগিয়ে রাস্তা বানানোর কাজ এবং মাটি কেটে সমান করে গুরুকুল আশ্রম গঠনের কাজ চলছে। সম্পূর্ণ ব্যবস্থা হচ্ছে শুধুমাত্র এই রানা সিনহা এবং কিছু সংখ্যক দানের উপর ভিত্তি করে।

সবাই তাকিয়ে আছে অন্য কিছু হোক না হোক অন্ততপক্ষে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যদি রাস্তাটি গড়ে দেওয়া হয় তাহলে গুরুকুল নির্মাণের ক্ষেত্রে আর কোনো অন্তরায় থাকবে না। স্বশাসিত জেলা পরিষদের আওতাধীন হওয়ায় রাজ্য সরকারের তেমন একটা নজর পড়ছে না এই রাস্তাটি নির্মাণের ক্ষেত্রে।

 কিন্তু স্বশাসিত জেলা পরিষদ এলাকায় যেভাবে উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ হয়ে পড়ে আছে সেখানে রাজ্য সরকারের একান্ত প্রয়াস না থাকলে এই রাস্তার কাজ কখনো সম্ভব হবে না। কারণ একদিকে গুরুকুল আশ্রম বানানোর ক্ষেত্রে প্রচুর খরচ রয়েছে, জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। এখন রাস্তা বানানোর চাপ এই আশ্রম কর্তৃপক্ষের উপর থাকলে আগামী ১৫ বছরের এই আশ্রম তৈরি করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।

কিন্তু এই আশ্রমটি তৈরি হলে ভারতীয় বৈদিক ও সনাতনী শিক্ষার একটি মহান প্রতিষ্ঠান হিসেবে পর্যবেশিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতীয় বৈদিক ও সনাতনী শিক্ষা সংস্কৃতির দিকে তাকিয়ে সারা বিশ্ব। ভারতের বেশকিছু জায়গায় বৈদিক ও সনাতনী শিক্ষা সংস্কৃতির প্রসার ঘটলেও উত্তর পূর্বাঞ্চলে এর প্রসার প্রায় ঘটেনি বলা যায়। কারণ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পাশ্চাত্যের শিক্ষা নীতি চরণ ধরন এই ভারতের বৈদিক সংস্কৃতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

 তাই সার্বিকভাবে চিন্তা করলে ভারতের বৈদিক সনাতনী শিক্ষা সংস্কৃতি এবং ঐক্যকে ধরে রাখতে হলে এই ধরনের গুরুকুল জাতীয় আশ্রমের একান্ত প্রয়োজনীয়তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে এই গুরুকুল নির্মাণের প্রয়াস এক নতুন গতি পাবে।