জোড়া খুনের ঘটনায় দুদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিনিধি, গন্ডাছড়া, ২২ নভেম্বর : জোড়া খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত স্বামী-স্ত্রীকে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। বর্তমানে তারা গন্ডাছড়া থানার হেফাজতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন রইস্যাবাড়ী থানার পুলিশ আধিকারিক। গ্রেপ্তারকৃত স্বামী – স্ত্রীর নাম যথাক্রমে বিজয় জমাতিয়া এবং চৈত্রমণি জমাতিয়া।
ঘটনায় গন্ডাছড়া এসডিপিও বাপি দেববর্মা জানিয়েছেন, প্রথমে জেলেরা মাছ ধরতে গিয়ে এক মৃতদেহ দেখতে পায় ডম্বুর জলাশয়। তার দুদিন পরেই মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ স্বামী – স্ত্রী যথাক্রমে বিজয় জমাতিয়া এবং চৈত্রমণি জমাতিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে রইস্যাবাড়ি থানায় ৩০২, ২০১ ধারায় খুনের মামলা লিপিবদ্ধ হয়েছে। যার নাম্বার ৯/২৩। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে শীঘ্রই এই হত্যাকাণ্ডের কিনারা হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর থেকে গোমতী জেলার বীরগঞ্জ মহকুমার তিনঘরিয়া এলাকা থেকে মা ও মেয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। গত ৩১ অক্টোবর ডুম্বুর জলাশয় থেকে মা রূপাশ্বরী জমতিয়ার বস্তাবন্দী মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। তার ঠিক ২ দিন পরে ২ নভেম্বর ডম্বুর জলাশয় থেকে তাঁর ১২ বছরের নাবালিকার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল।
ঘটনার তদন্তে নেমে স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পারে  এক ব্যক্তির সাথে বাইকে চেপে অমরপুর নতুন বাজার পাহাড়পুর এলাকা দিয়ে যেতে দেখেছিল মা ও মেয়েকে।
ওই ঘটনায় পুলিশ তদন্তে নেমে নতুন বাজার রাস্তার পাহাড়পুর এলাকা থেকে টিআর০৩এল৮৮৮৫ নম্বরের বাইকটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল। অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার অভিযুক্ত স্বামী স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিকে, ওই খবর পেয়ে স্থানীয় মানুষ থানার সামনে জড়ো হয়ে অপরাধীদের চরম শাস্তির দেওয়ার জন্য তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আবদার করতে থাকেন গতকাল দুপুরে। ওই আবদার মেনে নেওয়া সম্ভব নয়, পুলিশ তাঁদের অনেকবার বুঝিয়েছে এবং ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু, তাঁরা পুলিশের কথায় ফিরে যাওয়ার বদলে থানা ঘেরাও করেন এবং বিক্ষোভ দেখায়। এদিকে ঘটনায় গতকাল বীরগঞ্জ থানা এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে পুলিশকে  ৬-৭ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে হয়েছে। তবে স্থানীয়দের তরফে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে। যদিও অমরপুর এসডিপিও দেবাঞ্জলি রায় লাঠিচার্জের অভিযোগ নাকচ করেছেন। তাঁর দাবি, লাঠি চার্জের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কাঁদানে গ্যাস ছুড়ার ফলে কেউ আহত হননি। যদিও গতকাল সন্ধ্যার মধ্যেই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সফল হয়েছেন।

পুলিশ রিমান্ডে অভিযুক্তদের থেকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসা  তথ্যে এই হত্যাকাণ্ড কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।