‘বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা’র অধীনে ত্রিপুরাতেও এই প্রথমবারের মতো শুরু হলো কৃষিকাজে সহায়তায় ড্রোন ব্যবহারে সম্পর্কে প্রদর্শনী
আগরতলা, ১৮ নভেম্বর: একটি দেশের অর্থনীতিতে কৃষিক্ষেত্রের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কৃষির উন্নতি হলে দেশের অর্থনীতির সার্বিক উন্নতি সম্ভব। ভারত মূলত কৃষিপ্রধান দেশ। অর্থনীতির একটি বড় অংশের আয় কৃষি ক্ষেত্র থেকে আসে। ২০২২-২৩ বাজেট অধিবেশনে কৃষিক্ষেত্রে নয়া প্রযুক্তির ব্যবহার কথা ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সেই সূত্রেই কিষান ড্রোনের ব্যবহারের কথা বলা হয়। কৃষি জমি এবং ফসলের পুষ্টি বিশ্লেষণ করতে ড্রোনের ব্যবহার করা হবে।
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী কৃষির বিকাশে ১০০ টি কিষান ড্রোন চালু করেছিলেন। এর আগে ড্রোনের ব্যবহার শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণে শুরু হলো ড্রোনের ব্যবহার।
বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রার অধীনে এবার ত্রিপুরাতেও শুরু হল কৃষিক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহারের প্রদর্শন। রাজ্যের ধলাই জেলার আমবাসায় কৃষকদের নিয়ে তাদের কৃষিজমিতে প্রদর্শিত হয়েছিল রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক প্রয়োগ কিভাবে ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে সময়, শ্রম এবং অর্থ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায়। উপস্থিত কৃষক পরিবারের সদস্য এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে প্রত্যক্ষ করা যায় ব্যপক উৎসাহ। প্রত্যেকেই উৎসাহের সহিত গোটা প্রক্রিয়াটি দেখেন। এই প্রদর্শনের মূল প্রক্রিয়াটির তত্বাবধানে ছিল ব্রহ্মপুত্র ভ্যালি ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন লিমিটেড। এই সংস্থার এক আধিকারিক দেবাশীষ গোগই জানান, ‘কৃষকদের ড্রোন ব্যবহারের মাধ্যমে সঠিক রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে তথ্য প্রদান করতেই এই প্রদর্শনী। কৃষকরা অত্যন্ত খুশী এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতে পেরে।
ধলাই জেলার পাশাপাশি পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার মান্দাই ব্লকের বিভিন্ন জায়গায়ও কৃষকদের মধ্যে কৃষি ক্ষেত্রে ড্রোন ব্যবহার সম্পর্কে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। মান্দাই ব্লকের বাসিন্দা রত্না দেব্বর্মা বলেন, ‘ ড্রোনের এই প্রদর্শনী দেখে আমি অত্যন্ত খুশি। আগামী দিনে আমরাও চেষ্টা করবো আমাদের কৃষিতে এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করে সাফল্য অর্জন করতে, কারন আমরা এখানে এসে জানতে পেরেছি সরকার আমাদের জন্য বিভিন্ন সহায়ক মূল্যে কৃষি কাজের সুবিধার জন্য ড্রোন প্রদান করছে ‘।
ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদ দেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে পরীক্ষামূলক ভাবে ড্রোনের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক প্রয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ড্রোন হল এমনই একটি প্রযুক্তি যা প্রয়োজন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট পরিমাণে এবং সঠিকভাবে ফসলের বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষি শিল্পের ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাতে পারে, যা সরাসরি উপকরণ ব্যবহারের দক্ষতা এবং কৃষকের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি চাষাবাদের সামগ্রিক খরচও কমাবে।
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চের(Indian Councilof Agriculture research) মাধ্যমে একটি গবেষণা প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়। যার অধীনে সেন্সর ভিত্তিক স্মার্ট এগ্রিকালচারাল প্রকল্পটি গৃহীত হয়। চলে বিস্তর গবেষণা। মূলত হাইপেরস্পেক্ট্রাল রিমোট ব্যবহার করে যার মাধ্যমেই এবং মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা কীটনাশক প্রয়োগ এবং কৃষি ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ প্রভৃতি কাজ সম্পন্ন করা ছিল ভারত সরকারের মূল উদ্দেশ্য। পাশাপাশি ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কৃষক শ্রেণী ও উপকৃত হবে বলে আশাবাদী সরকার।