“মুখ্যমন্ত্রী ফন্দি এঁটে দলীয় লোকজনদের পাইয়ে না দেন“, হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

কলকাতা, ১৭ নভেম্বর (হি.স.): কেন্দ্রীয় সামাজিক সহায়তা প্রকল্পের বার্ধক্য ভাতা যাতে কেবল রাজ্যের শাসক দলের সমর্থকরা না পান, সে কারণে সতর্কতা দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

শুক্রবার তিনি এক্স হ্যাণ্ডেলে লিখেছেন, “ভারত সরকার জাতীয় সামাজিক সহায়তা প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থিক ভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের বার্ধক্য ভাতা প্রদান করে থাকেন। নিয়মানুসারে এই প্রকল্পের আওতায় থাকা ব্যক্তিদের বছরে একবার সশরীরে যাচাই করতে হয়।

বিগত বছরের নিরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে আরও ২,১৭, ৫১০ (দু’লক্ষ সতেরো হাজার পাঁচশো দশ) জনকে এই প্রকল্পের অধীনে এনে বার্ধক্য ভাতা প্রধান করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

রাজ্যে বিগত বেশ কয়েকটি “দুয়ারে সরকার” শিবিরে কয়েক লক্ষ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে আবেদনপত্র পূরণ করেছেন এই ভাতা পাওয়ার জন্য। অথচ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বঞ্চিত করে, শুধুমাত্র নিজে কৃতিত্ব অর্জন করার লক্ষ্যে প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দেন যে একমাত্র যাঁরা ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে নাম অথবা আবেদন নথিভুক্ত করবেন শুধু তাঁরাই যেন এই ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হন।

বিষয়টি আমি কয়েকদিন আগে টুইট (অধুনা X পোস্ট) করেছিলাম। পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে ১২, ৬৫, ০০০ (বারো লক্ষ পঁয়ষট্টি হাজার) বার্ধক্য ভাতার আবেদনকারী অপেক্ষারত রয়েছেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী উপলব্ধি করতে পারেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দকৃত সংখ্যা থেকে একজনও বর্ধিত উপভোক্তাকে সহায়তা দেওয়ার ক্ষমতা ওনার নেই। তাই যাঁরা ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে লাইন দিয়েছিলেন তাঁদের ভাগ্যের সিকে কবে ছিঁড়বে কেউ জানে না, কারণ এখন ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ হেল্পলাইন নম্বরে যারা আবেদন করেছেন তাঁরাই অগ্রাধিকার পাবেন।

এই কথাটা শুধু আমি বলছি তা নয়। এগরার বিধায়ক তরুণ কুমার মাইতির এই বিষয়ে একটা বার্তা সমাজ মাধ্যমে ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে (এই পোস্টে সংযুক্ত করলাম)।

অতএব আমিও সবাইকে অর্থাৎ যে সকল প্রবীণ ব্যক্তিগণ বার্ধক্য ভাতা পাওয়ার আবেদন করে বসে রয়েছেন অপেক্ষায়, তাঁদের পরামর্শ দেবো যে আপনারা সবাই অপেক্ষায় বসে না থেকে ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে নতুন করে আবেদন নথিভুক্ত করুন। কারণ এই প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী চেষ্টায় আছেন চুপিসারে নিজেদের দলীয় লোকেদের ফোন করিয়ে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসতে।

তাই আপনারাও আবার নাম নথিভুক্ত করান, যদি নিজেরা না পারেন, খোঁজ নিয়ে দেখুন এলাকায় অনেক শিক্ষিত অথচ বেকার যুবক যুবতী রয়েছেন, তাঁদের অনুরোধ করুন। তাঁরা নিশ্চয়ই আপনাদের সাহায্য করবেন।

মনে রাখবেন এই সুযোগে হাতছাড়া করলে আগামীতে যতই দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে লাইন দিন কিংবা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করুন, যতক্ষণ না কেন্দ্রীয় সরকার আবার সুযোগ প্রদান করবেন ততক্ষণ ভাতা মিলবে না। তখনও আবার সেই সুযোগ মুখ্যমন্ত্রী ফন্দি এঁটে দলীয় লোকজনদের পাইয়ে না দেন!”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *