করিমগঞ্জ (অসম), ১১ নভেম্বর (হি.স.) : কৃষ্ণপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে মায়ের বাৎসরিক পূজাচর্না। এ উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে করিমগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান শ্রীশ্রী লাতু জয় কালীবাড়ি মন্দির। ভক্তদের দানকৃত সোনা-রূপার অলঙ্কারে সাজিয়ে তোলা হয়েছে জয় মাকে।
করিমগঞ্জ জেলা সদর শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরবৰ্তী লাতুতে অবস্থিত প্রায় ২০০ বছরের পুরনো জয় কালীবাড়ি। কোনও আধুনিকতা নেই, নেই তামসিকতা। সাত্বিকতাকে প্রাধান্য দিয়েই আয়োজন হয় এখানে শক্তির আরাধনা। তাই প্রতি বছরের মতো এ বছরও কালীপুজো উপলক্ষ্যে পরিচালন কমিটির পক্ষ থেকে নতুনভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণ।
জনশ্রুতি, প্রায় ২০০ বছর আগে অশ্বত্থ (বট) বৃক্ষের নীচে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন দেবী মা। এর পর স্বপ্নাদেশ পেয়ে শিলা পাথরকে স্থাপন করেন ভক্তরা। কালক্রমে বিশ্বাস আর ভক্তিতে এখানে গড়ে ওঠে মাতৃ মন্দির। বর্তমানে করিমগঞ্জ জেলার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম শ্রীশ্রী লাতু জয় কালীবাড়ি। এই মাতৃ মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত বলে জনবিশ্বাস। জাগ্রত মা অধিষ্ঠিত এখানে। ভক্তদের মনোবাসনা পূরণ করে দেন দেবী মা। যার জন্য শ্রীশ্রী মায়ের পূজার্চনা, আশীর্বাদ নিতে দূরদূরান্ত থেকে ভক্তরা ছুটে আসেন এখানকার জয় মা কালীর পূজা করতে।
তবে মায়ের বাৎসরিক বিশেষ পূজা বলে কথা। তাই আজ শনিবার থেকেই ভক্তদের ঢল নেমেছে মন্দিরে। অমাবস্যা প্রদ্যূষে জয়কালীর পূজাচর্না, হোম অনুষ্ঠিত হলে এদিন মন্দিরে অধিষ্ঠিত মহাদেব, শীতলা, হনুমান সহ শনিদেবের পূজাচর্না অনুষ্ঠিত হয় দিনের বেলা। প্রতিদিন মায়ের ভোগ দান এবং সন্ধ্যারতি হয় মন্দিরে। দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষ্যে রাতে বিশেষ পুজো এবং ভোগদানের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। রাতেই ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়ে থাকে মহাপ্রসাদ।
মহোৎসব উপলক্ষ্যে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, তার জন্য জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেয প্রহরার ব্যবস্থা করা হয় মন্দির ও পার্শ্ববর্তী এলাকায়।
মন্দির পরিচালন কমিটির সম্পাদক দেবতোষ রায় জানান, পূর্ণ প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে এবারও। রবিবার প্রদ্যূষে সম্পন্ন হবে জয় মা-এর বাৎসরিক বিশেষ পূজাচর্না। বলেন, প্রতিবছর অগণিত ভক্তের ঢল নামে মন্দিরে। ব্যতিক্রম হবে না এবারও। পাঁচ হাজার ভক্তের জন্য মহাপ্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাৎসরিক উৎসব সফল করতে সকল মাতৃভক্তের সহযোগিতা কামনা করেছেন সম্পাদক দেবতোষ রায়।