কলকাতা, ৯ নভেম্বর (হি.স.): মদন-অনুগামী এক নেতার প্রকাশ্য সমালোচনা করায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা সাংসদ সৌগত রায় কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের বেনজির তোপের মুখে পড়লেন।
বুধবার সন্ধেয় খোলা মঞ্চে দাঁড়িয়ে কামারহাটি পুরসভার সমালোচনা করেছিলেন। পুর চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছিলেন, ‘গোপাল (গোপাল সাহা) কামারহাটি পুরসভার কাজ ভাল হচ্ছে না। অনেক অভিযোগ পাচ্ছি।’ তার জেরে বৃহস্পতিবার ভর সন্ধেয় সৌগত রায়ের যা নয় তাই সমালোচনা করলেন মদন মিত্র।
এদিন মদন বলেন, সৌগত রায়কে এই কামারহাটির কর্মীরাই তিন বার জিতিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গোপালও ছিলেন। আজ গোপাল হয়ে গেল ভূত আর উনি হয়ে গেলেন রাজা! উনি তো সাংসদ। এমন যদি হয় যে কিছুদিন ওই সাংসদ পদ পাশে সরিয়ে রেখে পুরসভার চেয়ারম্যান করে দেওয়া যায়, দেখব উনি কেমন পুরসভা চালান।
সৌগত রায়ের দমদম লোকসভার মধ্যেই পড়ে কামারহাটি পুরসভা। অর্থাৎ দমদমে জেতার ব্যাপারে কামারহাটিতে মদন ও গোপালের উপর তাঁকে ভরসা করতেই হয়। সেই মদনই এদিন যেভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন প্রবীন নেতার জন্য ঘোর অপমানজনক বলেই মনে করছেন অনেকে।
১৯৭৭ সালের লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন সৌগত রায়। মদন মিত্র এদিন বলেন, সেবার সৌগত রায় ভোটে এমন রিগিং করেছিলেন যে স্থানীয় এসডিপিও-কে বদলি করে দিতে হয়েছিল। তাঁর সেই অপকর্মের জন্যই ৭৭ সাল থেকে ওখানে কংগ্রেস জিততে পারেনি। শেষমেশ বাঘের মতো লড়াই করে অর্জুন সিং তৃণমূলকে জিতিয়েছে।
সৌগত রায় কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে এদিন মদন বলেন, সৌগত রায়ের একটা গুণ রয়েছে। উনি হলেন পিসি সরকারের মতো যাদুকর। কখন পাল্টি খেতে হবে কখন গিরগিটির মতো রঙ বদলাতে হবে উনি ভালই জানেন। কে বলতে পারে এখন হয়তো তাঁর মনে অন্য কিছু ঘুরপাক খাচ্ছে। অনেকের ধারণা, এ কথা বলে মদন বোঝাতে চেয়েছেন, হতেই পারে সৌগত তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলে যাওয়ার কথা বলছেন।
মদন মিত্র এখানেই থামেননি। তাঁর কথায়, সৌগত রায় গত তিন বার ধরেই বলছেন, এটাই শেষ বার। এই বার আমাকে একটু মাটি দিও। চব্বিশ সালের লোকসভা ভোট আসছে। কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন যে শরিয়তে কি চারবার মাটি দেওয়ার কথা বলা আছে?
মদনের এহেন চাঁচাছোলা সমালোচনা নিয়ে সৌগতবাবু এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে দলের অনেকেই এই কাদা ছোড়াছুড়িতে খুশি নন। মদন নিজেও এদিন বলেন, আমি এ সব কথা বলার জন্য দল আমার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতেই পারে। তা মাথা পেতে নেব। কিন্তু দলের নিচুতলার কর্মী সমর্থকদের অপমান সহ্য করব না। তাঁদের জন্যই সৌগত রায় সাংসদ হয়েছেন, এটা যেন উনি ভুলে না যান।

