পূর্ব বর্ধমান, ৬ নভেম্বর (হি.স.) : সোমবার ভাতারের এক বাসিন্দার ‘মৃত্যু’-কে ঘিরে এলাকায় হুলুস্থুলু কাণ্ড হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় বাউড়িপাড়ার বাসিন্দা ছোটন সর্দারকে (৩৪) ভাতার ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর পর বাড়িতে আনার পরেই নিস্তেজ হয়ে যান। গাড়ি ঘুরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন মৃত্যু হয়েছে যুবকের। মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসার পর চলছিল সৎকারের প্রস্তুতি। পাড়ায় তখন কান্নার রোল। প্রথা মেনে মৃতের মুখে দেওয়া হচ্ছিল গঙ্গাজল।
ঠিক সেসময় ‘মৃত’ যুবক জলপান করেন। নড়েচড়ে উঠল হাত পা। সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘিরে এলাকায় হুলুস্থুল কাণ্ড বেঁধে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয় পরিজন ও পাড়াপড়শিরা মিলে ছোটন সর্দারকে ফের নিয়ে আসেন ভাতার হাসপাতালে। ‘জীবিত’ থাকতেও পরীক্ষা না করেই কেন মৃত বলে ঘোষণা করা হয়? এই অভিযোগ তুলে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে আসে ভাতার থানার পুলিশবাহিনী। তারা উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে।
স্থানীয়দের চাপে ভাতার ব্লক হাসপাতালের চিকিৎসকরা ফের পরীক্ষা করেন। তাঁরা জবাব দেওয়ার পর মৃতের পরিবার পরিজন বর্ধমান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন।
পাড়ার লোকজন মিলে গাড়িতে চাপিয়ে বর্ধমান রওনা দেন। কিছুটা রাস্তা যাওয়ার পর ছোটন সর্দারের দেহ নিস্তেজ হয়ে গিয়েছে দেখে তাঁরা ঘুরেও আসেন।
পাড়াপড়শি ও আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে তখনও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। বাড়িতে দেহ আনার পর কখনও বসিয়ে দেওয়া হয়। কখনও মুখে জল দেওয়া হয়। আবার কেউ কেউ ফের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেন। যদিও ধীরে ধীরে শক্ত হতে শুরু করে দেহ। তখন সকলেই নিশ্চিত হন মারা গিয়েছেন ছোটন সর্দার।
জানা গিয়েছে, ভাতার বাজারে নাসিগ্রাম মোড়ে একটি চায়ের দোকান চালাতেন ছোটন। স্বাস্থ্য যথেষ্ট ভালো ছিল। ভাল ব্যবহারের জন্য তাকে সকলেই ভালবাসতেন । জানা গিয়েছে সোমবার ভোর তিনটে নাগাদ বাড়িতে হঠাৎ বুকের যন্ত্রণা শুরু হলে ছোটনকে সঙ্গে সঙ্গে ভাতার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মৃতের বাড়ির লোকদের বক্তব্য, “যদি গোড়াতেই ডাক্তারবাবুরা ঠিকমতো চিকিৎসা করতেন তাহলে ও বেঁচে যেত।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ নিয়ে অবশ্য কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।

