নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ অক্টোবর:
লক্ষ্মীপূজায় রাতে গৃহবধূকে প্রদীপের আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার করেছে শাশুড়ি। এমনই গুরুতর অভিযোগে গোটা রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। আহত গৃহবধূ দীপা দাস বর্তমানে জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অভিযোগমূলে জানা যায়, ওইদিন তার শাশুড়ি প্রদীপ দিয়ে তার শরীরের সুতির শাড়িতে আগুন ধরিয়ে প্রানে মারার চেষ্টা করেছে। কোনক্রমে বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে সে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও তার শরীরের বেশ কিছু জায়গা আগুনে পুড়ে গেছে। এমনকি ঘটনার সময় ওই গৃহবধূর স্বামী বাড়িতে না থাকলেও পরবর্তী সময় বাড়িতে এসে আবার ঘরের দরজা বন্ধ করে তাকে বেধড়ক মারধর করেছে। অভিযুক্ত স্বামীর নাম সুশান্ত দাস।
অভিযোগ গত মার্চ মাসে তাদের পালিয়ে বিয়ে হওয়ার পর গৃহবধূর মা মেয়ের শশুর বাড়িতে না যাওয়ার কারণে এভাবে নির্যাতন চালাত স্বামী এবং শাশুড়ি যমুনা দাস সহ বাড়ির অন্যান্য লোকজনেরা। প্রতিদিন তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন চালাত তারা।
বাপের বাড়ির লোকজনদের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইল ফোন পর্যন্ত দিত না বলে অভিযোগ। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো সেদিন আগুনে পুড়ে যাওয়ার পরেও গৃহবধূকে ঘরবন্দী করে ফেলে রাখা হয়েছিল।
দুদিন পর বাপের বাড়ির লোকজনেরা খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে উদ্ধার করে গৃহবধূকে। নিয়ে আসা তাকে জিবিপি হাসপাতালে। গৃহবধূ আরও জানিয়েছেন, তার স্বামীর বাড়ি উদয়পুর রাধা কিশোরপুর থানাধীন তোতাবাড়ি এলাকায়।
এদিকে অভিযুক্ত শাশুড়ি যমুনা দাসের বক্তব্য, লক্ষী পূজার দিন তিনি রান্নাঘরে কাজ করার সময় গৃহবধূর চিৎকার শুনে বসত ঘরে গিয়ে দেখেন তার শরীরে আগুন। সাথে সাথে আগুন নিভিয়ে গৃহবধূকে রক্ষা করেছেন তিনি। গৃহবধূর তোলা অভিযোগ খন্ডন করে বলেন তিনি আগুন লাগাননি গৃহবধূর শরীরে। বর্তমানে জিবি হাসপাতাল মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে গৃহবধূ। অভিযুক্ত শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন গৃহবধূর।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার জিবিপি হাসপাতালে ওই মহিলাকে দেখতে গেছেন ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ঝর্না দেববর্মা সহ মহিলা কমিশনের অন্যান্য আধিকারিকেরা। গৃহবধূর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, রাজ্যে নারী নির্যাতন কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সে যে দলেরই হোক না কেন, যত প্রভাবশালী হোক তাকে শাস্তি প্রদান করবে প্রশাসন। এই গৃহবধূ যেন ন্যায্য বিচার পায় সেই বিষয়টি রাজ্য মহিলা কমিশন সুনিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে।