অসমের সাফাই কর্মীদের জন্য দু হাজার নতুন গৃহ নির্মাণ, গুয়াহাটিতে সাফাই কার্যক্রমে যোগদান করে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

গুয়াহাটি, ১ অক্টোবর (হি.স.) : অসমের সাফাই কর্মীদের জন্য ২০০০ হাজার নতুন গৃহ নির্মাণের এক সুদূরপ্রসারী প্রকল্প ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আহূত ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে সাফাই কর্মী সংশ্লিষ্ট এ ছাড়া আরও কিছু প্রকল্প ঘোষণা করেছেন তিনি।

নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ রবিবার সকালে পরিষদীয় মন্ত্রী অশোক সিংঘল, রাজ্যসভার সদস্য পবিত্র মার্ঘেরিটা, গুয়াহাটির মেয়র মৃগেণ শরণিয়াদের সঙ্গে নিয়ে গান্ধীমণ্ডপে জাতির জনক মহাত্মার পূ্র্ণাবয়ব মূর্তি পরিষ্কার করে সংলগ্ন এলাকায় সাফাই কার্যক্রমে যোগদান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আহূত ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’ কর্মসূচির অঙ্গ স্বরূপ গুয়াহাটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন আজ ‘এক তারিখ এক ঘণ্টা এক সাথ’ শীর্ষক এক কার্যসূচির আয়োজন করেছিল। এতে অংশগ্রহণ করে সাফাই অভিযানের ফাঁকে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে বার্তালাপে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন ২ অক্টোবরের আগের দিন আজ ১ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা দেশবাসীকে শ্রমদান করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানের সাড়া দিয়ে আজ গোটা অসমে ‘স্বচ্ছতা হি সেবা’ কর্মসূচির অধীনে মোট ২২,৪৪২টি স্থানে স্বচ্ছতা অভিযান চলছে। এর মধ্যে ১৮,৪৫৫টি গ্রামীণ এবং ৩,৯৮৭টি শহুরে এলাকা রয়েছে।

অসমের সাফাই কর্মীদের জন্য ২০০০ (দুই হাজার) নতুন গৃহ নির্মাণের এক সুদূরপ্রসারী প্রকল্পের পাশাপাশি ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষে গুয়াহাটি পুর নিগমের অধীন ২০০০ থেকে ২২০০টি গৃহ পুনর্নির্মাণ করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব। এছাড়া সাফাই কর্মীদের সন্তান যারা মাধ্যমিক পাশ করবে তাদের বছরে ১০ হাজার, উচ্চমাধ্যমিকে যারা পড়বে বা পরীক্ষায় পাশ করবে তাদের ১৫ হাজার টাকা করে স্কলারশিপ প্রদান করবে রাজ্য সরকার। কেবল তা-ই নয়, যাঁরা মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিং সহ যে সব প্রফেশনাল কোর্সে পড়বেন তাঁদের বছরে ৫০ হাজার টাকার বৃত্তি দেওয়ার কথাও মুখ্যমন্ত্রী আজ ঘোষণা করেছেন। আগামী ১ এপ্রিল থেকে এই প্রকল্প কার্যকর হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজকের এক ঘণ্টার কর্মসূচির বলে স্বচ্ছতার কতটা প্রয়োজন সে সম্পর্কে মানুষ অবগত হবেন এবং এলাকা স্বচ্ছ রাখতে সাফাইকর্মীদের কতটুকু কষ্ট সহ্য করতে হয় সে সম্পর্কেও একটা ধারণার সৃষ্টি হবে। নিজের অনুভব ব্যক্ত করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা বলেন, নির্ধারিত কর্মসূচিতে আসতে ট্র্যাফিক জ্যামের দরুন তাঁর তিন মিনিট বিলম্ব হয়েছে। এক ঘণ্টার পরিবর্তে টানা ৫৭ মিনিট সাফাইকার্য করেছেন। এই সময়কালে তাঁর কতটা কষ্ট হয়েছে, তা তিনি নিজে টের পেয়েছেন। অতএব যে সকল সাফাইকর্মী আট-নয় ঘণ্টা কাজ করেন, তাঁরা কতটা শ্রমদান করেন, কতটা কষ্ট করেন তা অনুভব করতে পারবেন সাধারণ জনতা। এক ঘণ্টার সাফাই কার্যক্রম সকলকে বাস্তব সত্য উপলব্ধি করতে সহায়তা করবে বলে বিশ্বাস করেন ড. শর্মা।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাই প্রত্যেক নাগরিককে নিজেদের স্বচ্ছতা সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি। কোনও জায়গায় যদি একটি প্লাস্টিকের বোতল পড়ে থাকে, তার ফটো তুলে ফেসবুকে আপলোড করে কিংবা হুলস্থুল না করে সংশ্লিষ্ট দর্শক যদি নিজেই তা তুলে ডাস্টবিনে ফেলে দেন তাতে সকলের জন্য ভালো, সাফাইকর্মীদেরও কষ্ট লাঘব হবে।