আপডেট :মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হল বাগবাসা পুলিশ স্টেশন পূর্ণাঙ্গ থানা রূপে

আগরতলা , ২৮ সেপ্টেম্বর : আজ উত্তর জেলায় আরেকটি পুলিশ ফাঁড়ি পূর্ণাঙ্গ থানা রূপে পরিণত হয়েছে। এই পূর্ণাঙ্গ পুলিশ স্টেশনের উদ্বোধন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রী অধ্যাপক (ডঃ) মানিক সাহা।

১৩৯৫৭ জন লোক বসতি পূর্ণ এ পুলিশ স্টেশন এলাকা যার ১৯ শতাংশ জনজাতি মোট এলাকায় রয়েছে ২২ বর্গ কিলোমিটার। এই এলাকার মধ্যে দুটি ক্যাম্প রয়েছে। যার মধ্যে একটি হল অসম রাইফেল ট্রানজিট ক্যাম্প ,অপরটি আর্মি ট্রানজিট ক্যাম্প। বারোটি স্কুল এবং দুটি কলেজ এ পুলিশের আওতায়। ৫৫ বাগবাসা এবং ৫৮ পানিসাগর দুটি বিধানসভায় এলাকার কিছু কিছু অংশ নিয়ে এই পুলিশ স্টেশন এলাকাটি গড়ে উঠেছে। দুইটি এডিসি ভিলেজ এবং একটি ভিলেজ কাউন্সিল রয়েছে। আজকের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রী অধ্যাপক ডঃ মানিক সাহা, বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক যাদব-লাল দেবনাথ, পানিসাগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস, রাজ্যের ল অ্যান্ড অর্ডারের আইজি সৌমিত্র ধর, উত্তর জেলা শাসক নাগেশ কুমার বি উপজেলা পুলিশ সুপার ভানু পদ চক্রবর্তী সহ পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।

উদ্বোধক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন , ভারতবর্ষের যে ২৮ টি রাজ্য রয়েছে তার মধ্যে আইন-শৃঙ্খলার দিক দিয়ে ভালো পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে ত্রিপুরা স্থান করে নিয়েছে।

তাঁর কথায় , ২০২৩ এর নির্বাচন থেকে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা প্রভুত উন্নতি হয়েছে। আইন শৃঙ্খলার অবনতি করে এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় না। তাই উপনির্বাচনে বিরোধীরা ভেবেছিল আইনশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি হবে কিন্তু কোন ধরনের গন্ডগোল, কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এ নিয়ে উত্তর জেলায় ১১ টি পুলিশ স্টেশন হয়েছে।

পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী বাগবাসা পুলিশ স্টেশন এর জন্য ব্যক্তিগতভাবে এলাকার বিধায়ক যাদব লাল দেবনাথ এর প্রশংসা করেন। উল্লেখ্য সরকারের কাজ ত্বরান্বিত হওয়ার জন্য যাদব লাল দেবনাথ নিজ খরচে এই পুলিশ স্টেশন কে সেভেন সিটার একটি ইকো গাড়ি প্রদান করেছেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এ পুলিশ স্টেশনের এলাকাটি দিয়ে মানব পাচার করছে তা বন্ধ করার জন্য স্টেশনটি সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারায় পুলিশ আরো বহু বড় ভূমিকা নেয়। তাছাড়া মাদকদ্রব্য আটক এবং ধ্বংসের ক্ষেত্রে এই রাজ্য ইতিমধ্যে উত্তরপ্রবন অঞ্চলে সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করেছে। সরকার চায় জিরো টলারেন্স অর্থাৎ মাদকদ্রব্য পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়া। ছাত্র সমাজকে মাদকদ্রব্যের হাত থেকে রক্ষা করতে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এদিন তিনি আরো বলেন , দীর্ঘ তিন থেকে চার দশক ধরে এ রাজ্যের মা-বোনেরা কান্নাকাটি করছে তাদের ঘরের ছেলেদের নেশার হাত থেকে বাঁচাতে। শুধুমাত্র পুলিশকর্মীদের দ্বারা একা এই কাজ করা সম্ভব হবে না যদি না সবাই এগিয়ে না আসে। প্রয়াস কর্মসূচির মাধ্যমে পুলিশের সাথে সাধারণ মানুষের ভাবের আদান-প্রদান হচ্ছে তাতে সমাজের ক্ষেত্রে লাভই হচ্ছে। সম্প্রতি ১৩৭ জন টি এস আর মহিলা জোয়ান নিয়োগ করা হয়েছে এবং তাদের প্রশিক্ষণ চলছে। থানার অফিসাররা যদি মহিলা অফিসার হয় তাহলে অনেক ক্ষেত্রে যেসব মহিলারা অভিযোগ নিয়ে আসে তাদের বলতে সুবিধা হয়। এই বছর জুন মাস পর্যন্ত ৫৬৫ টি এন ডি পি এস মামলায় ৭৫০জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ৫১কোটি টাকার নেশা সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রাজ্যে দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেকটা কমেছে এবং মৃত্যুর পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। ট্রাফিকে অত্যাধুনিক ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যে আরও দুটি টি এস আর ব্যাটেলিনের জন্য ১২ কোটি৬৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করে কাজ চলছে। সবই রাজ্যের মানুষের কথা ভেবে রাজ্যের মানুষের সুবিধার্থে ভালো পরিষেবার জন্য সরকার বদ্ধপরিকর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *