দুর্গাপুর, ১৭ সেপ্টেম্বর (হি. স.) : ‘প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা রূপায়িত না করলে, পশ্চিমবঙ্গবাসী রাজ্যের সরকারকে বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।’ রবিবার দুর্গাপুরে সিআরপিএফ ক্যাম্পে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনার ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে এভাবে তোপ দাগলেন কেন্দ্রীয় খাদ্য গনবন্টন, বন, আবহাওয়া ও পরিবেশ বিষয়ক (রাষ্ট্র) মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে। একইসঙ্গে নিজের কবর খুঁড়বে বলে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করলেন সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া।
প্রসঙ্গত, রবিবার ১৭ সেপ্টম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদীর জন্মদিন। পাশাপাশি এদিন বিশ্বকর্মা পূজা। দেশের নাপিত, ছুতোর, কামার, দরজি সহ ১৮ টি কুঠির শিল্প সম্প্রদায়ের বংশবৃত্তি পারিবারিক পেশার উন্নতিতে
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা প্রকল্প চালু করেছেন। এদিন দ্বারিকা থেকে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরাজ্যের কোলকাতা, শিলিগুড়ি ছাড়াও দুর্গাপুরে ওই প্রকল্পের ভার্চুয়াল মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন দুর্গাপুরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় খাদ্য গনবন্টন, বন, আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবেশ বিষয়ক (রাষ্ট্র) মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে। এছাড়াও ছিলেন সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, লক্ষন ঘড়ুই, অজয় পোদ্দার, দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, সিআরপিএফ আইজি বিদ্যৎ সেনগুপ্ত, ডিআইজি দেবব্রত ভট্টাচার্য প্রমুখ।
প্রকল্প প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় খাদ্য গনবন্টন, বন, আবহাওয়া ও পরিবেশ বিষয়ক (রাষ্ট্র) মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে বলেন,” এই যোজনায় ১৩ হাজার কোটি টাকা বিনোয়গ করা হয়েছে। তাতে কামার, কুমোর, ছুতোর, মুচি, দরজি সহ ১৮ টি কুঠির শিল্প সম্প্রদায়ের লক্ষাধিক পরিবার উপকৃত হবে। রেজিষ্ট্রেশন করার পর তাদের ৫ দিনের প্রশিক্ষন দেওয়া হবে। তাতে ৫০০ টাকা করে স্টাইপেন্ড পাবে। এছাড়াও প্রশিক্ষন শেষে পরিচয় পত্র। ১৫ হাজার টাকার নিজেদের পেশায় ব্যাবহৃত যন্ত্রপাতির সুবিধা পাবে। প্রশিক্ষণের পর নিজের ব্যাবসার জন্য ব্যাঙ্ক মাধ্যমে ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ৫ শতাংশ সহজ সুদে ঋণ নিতে পারবে। এমএসএমই বিভাগ এই প্রকল্পের দায়িত্বে রয়েছে।” আগামী ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে পশ্চিমবঙ্গে এসব সম্প্রদায়ের কাছে প্রশ্ন জাগছে, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মত এই প্রকল্প রাজ্যে রূপায়িত যদি না করে। তবে সেই প্রশ্নে কেন্দ্রীয় খাদ্য গনবন্টন, বন, আবহাওয়া ও পরিবেশ বিষয়ক (রাষ্ট্র) মন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে বলেন,” এরকম জনমুখী প্রকল্প রাজ্যে লাগু করতে না দিলে পশ্চিমবঙ্গবাসী রাজ্যের সরকারকে উপড়ে বঙ্গোপসাগরে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।’
সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া বলেন,” এই প্রকল্প ১০০ শতাংশ কেন্দ্রের অনুদান। রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত, পুরসভা গুলি উপভোক্তাদের শংসাপত্র যাচাই করে দেবে। তাতে বাধা দিলে অসহায় মানুষগুলো বঞ্চিত হবে। এর বিরোধিতা করা তৃণমূল নিজের কবর খুঁড়বে।”
আবার বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন,” যেভাবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় রাজ্যের তৃণমূল সরকার স্বজনপোষন করে প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত করেছিল। আশঙ্কা করছি, সেরকমই এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার গরিব অসহায় পরিবারগুলকে বঞ্চিত করতে পারে। এবং নিজের দলের লোকেদের ওইসব সম্প্রদায়ের সাজিয়ে প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সেটা হলে পশ্চিমবঙ্গবাসী তৃণমূলকে ক্ষমা করবে না। লোকসভা ভোটেই তৃণমূলকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।”