আগরতলা, ১১ সেপ্টেম্বর।। রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় অন্ধকার নেমে এসেছে বলে অভিযোগ তুলে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস সাহা। তার কথায়, বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের অভাব, পরিকাঠামোর অভাব প্রভৃতি ইতিমধ্যেই নজিরবিহীন রূপ নিয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষার অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয় বলে উল্লেখ করেছেন কংগ্রেস নেতারা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক বিদ্যালয়ে মাত্র এক দু’জন শিক্ষক দিয়ে সব ক্লাস চালাতে হচ্ছে। তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের পদ খালি পরে রয়েছে। তাছাড়া ১০৩২৩ এর চাকুরী অবসানের পর তাদের পদগুলিও পূরণ করা হচ্ছে না। অন্যদিকে হাই এবং হায়ার সেকেন্ডারি বিদ্যালয়গুলিতে অবস্থা আরো শোচনীয়। কারণ গ্র্যাজুয়েট এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকের পদগুলি প্রয়োজন অনুযায়ী পূরণ করা হচ্ছে না। শিক্ষা ব্যবস্থার এই বিপর্যয়ের মধ্যেই বাংলা মাধ্যম বিদ্যাজ্যোতি স্কুলগুলিতে সি. বি.এস.সি-র ফরমান শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ এবং চরম হতাশার সৃষ্টি করেছে। ফরমান অনুযায়ী এই স্কুলগুলিতে বাংলা মাধ্যমে বোর্ড পরীক্ষা দেওয়া যাবে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ বর্তমানে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরত সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের এখন থেকেই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করতে হবে। তারা আর সি.বি.এস.সি – র ছাত্র বলে গণ্য হবে না। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর অজ্ঞতার কারণেই যে রাজ্যের ৮৩ টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উনার এই অজ্ঞতা রাজ্যের শিক্ষার ইতিহাসে এক নজিরবিহীন অচলাবস্থা ডেকে এনেছে বলে মনে করে কংগ্রেস। বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেও কম অপরাধী নন এই অচলাবস্থার সৃষ্টির পেছনে যেহেতু প্রায় ছ-মাস ধরে এই শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। নিজেকে স্বচ্ছ ও শিক্ষিত বলে প্রমান করতে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী কিভাবে অর্বাচীনের মতো শিক্ষা দপ্তর চালাচ্ছেন তা নিয়ে বিস্মিত প্রদেশ কংগ্রেস। বাংলা মাধ্যমে সি.বি.এস.সি চালুর পেছনে অর্থনৈতিক লাভালাভের দুর্গন্ধও পাচ্ছে দল। ঘটনা যা-ই হোক বাংলা মাধ্যমে বিদ্যাজ্যোতি স্কুলের বর্তমান এই অচলাবস্থার জন্য বর্তমানের ডবল ইঞ্জিন সরকার যে দায়ী এ নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই বলে মনে করে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস। অন্যদিকে এই সি.বি.এস.সি ঝক্কি সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে রাজ্যের গরীব অংশের অভিভাবকরা। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের যে ‘ ফি ‘ ধার্য করা হয়েছে (মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে প্রায় ২০০০ টাকা এবং উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে প্রায় ৩০০০ টাকা) তা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে তারা। সব মিলিয়ে স্মরণাতীতকালে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় এ ধরনের হতাশাজনক পরিস্থিতি আর কখনো এসেছে বলে মনে করতে পারছেনা রাজ্যের মানুষ। ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিষ কুমার সাহা বলেছেন অবিলম্বে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার এই হতাশাজনক অবস্থা দূর করতে সরকার সচেষ্ট না হলে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস তার সমস্ত শাখা সংগঠনকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।