BRAKING NEWS

ইউটিউবে ড্রাগন ফলের চাষ দেখেই বাজিমাত করলেন আব্দুল জোহাদ

মহঃবাজার, ৯ সেপ্টেম্বর (হি. স.) ইউটিউবে ড্রাগন ফলের চাষ দেখেই আগ্রহ তৈরি হয়। আজ বাড়িতে বসেই ড্রাগন ফল বিক্রি করে বাজি মাত করছেন আব্দুল জোহাদ। শুধু কি তাই ড্রাগন চারা কিনতে আসছে বহু মানুষ। ইতিমধ্যেই ড্রাগন ফল চাষের পদ্ধতি জানাতে নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলে হাজার হাজার ভিউয়ার তৈরি করে ফেলেছেন বীরভূমের মহঃবাজারের এই প্রবীন ।

ইউটিউব এ ড্রাগন চাষের পদ্ধতি ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানার পর থেকেই আগ্রহ বাড়তে থাকে।বিদেশে এই ক্যাকটাস জাতীয় গাছ চাষ হলে বীরভূমের রাঙামাটিতে কেন চাষ হবে না?

তাই শুরু চ্যালেঞ্জ নিয়ে পরীক্ষা মূলক চাষ।
বাড়ির ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ করে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন আব্দুল জোহাদ।

আজ থেকে দুবছর আগে নদীয়া এক বাগানীর কাছ থেকে চার টি ড্রাগন চারা কিনে বাড়ির ছাদে চাষ শুরু করেন। এখন দেড় হাজার স্কোয়ার ফিট বাড়ির ছাদ জুড়ে শুধু ড্রাগন ফলের চাষ। ফলের চাষ করে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন মহঃবাজারের কাঁইজুলির বাসিন্দা আব্দুল জোহাদ ।
দোতলা বাড়ির নীচ থেকে উপর পর্যন্ত শুধুই ড্রাগন গাছ। সিমেন্টের পোলের উপর সাইকেলের টায়ার দিয়ে তৈরি মাচাতে ফুটে রয়েছে ড্রাগল ফুল।আর মাচার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে গোলাপি লাল রঙের ড্রাগন ফল। এই ছাদ বাগানে কয়েকবছর ধরে ড্রাগন ফলের চাষ করে চলেছেন মহঃ বাজার বাস স্ট্যান্ড লাগোয়া হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী আব্দুল জোহাদ।আব্দুল জোহাদ এর আদিবাড়ি মহঃবাজার ব্লকের সাহানগরে।১৯৮০সাল থেকে বসবাস মহঃ বাজারে থাকেন ।

চ্যালেঞ্জ নিয়েই শুরু করেন ক্যাকটাস জাতীয় এই ড্রাগনের চাষ।প্রথমে নিজের হাতে সিমেন্টের বড় বড় গামলার মতো টব বানিয়ে ও সিমেন্টের পোল দিয়ে মাচা করে শুরু করেন নিজের ছাদ বাগানে ড্রাগন ফলের চাষ।এই চাষে সফলতা আসতেই বাড়তে থাকে গাছের সংখ্যা।বাড়তে থাকে চাষের জমির পরিমাণ ও।বর্তমানে গ্রামের বাড়িতে তিন বিঘা জমিতে ১০০ বেশি সিমেন্টের খুটি পুঁতে চাষ শুরু করেছেন।
আব্দুল জোহাদ জানান, ইউটিউব দেখে প্রথম আগ্রহ তৈরি হয়। কাঁটা গাছ লাগানো নিয়ে প্রথম বাড়ির লোকজন খুবই আপত্তি করেছিল। তবুও জেদ ছাডি নি। বিদেশি এই ক্যাকটাস জাতীয় গাছে ফল ফলানোর চ্যালেঞ্জ নিয়েই এই চাষের শুরু।এই গাছ ছাদবাগানে সহজেই লাগানো যায় ও অল্প পরিচর্যা করে ভালো ফলন পাওয়া যায়।এই ফলের পুষ্টিগুণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব বেশি ।এই ফল ক্যানসার, থাইরয়েড প্রতিরোধ করে, হার্টকে সুস্থ রাখে,ওজন কমায়, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে,ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে।এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম থাকে।এই ফলের পুষ্টিগুণের জন্য চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।
আব্দুল জোহাদ এর স্ত্রী ওয়াহিদা বেগম বলেন,উনি একেবারে গাছ পাগল মানুষ।ভোর পাঁচটা থেকে শুরু করেন গাছের পরিচর্যা।বাড়ি ছাড়া ও রামপুর, গোপালনগরেও বাগান বানিয়েছেন।

শুধু বাগান করেই থেমে থাকেন নি তিনি। ইতিমধ্যেই ড্রাগন গাছের চারা তৈরি করে বিক্রি শুরু করেছেন। মহঃবাজারের বহু বাড়িতে এখন তার দেখানো পথে হচ্ছে ড্রাগন চাষ। ৫০/১০০ টাকা দামে বিক্রি করছেন চারা।

আব্দুল জোহাদ এর মেয়ে জাহানারা খাতুন বলেন,বাবা গাছ ভালোবাসেন।এটা বাবার শখের বাগান।বাবা যখন এই ক্যাকটাস জাতীয় গাছ লাগান তখন বারণ করেছিলাম তবুও শোনেন নি।তারপর যখন দেখলাম গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরে উঠলো আর লাল লাল ড্রাগন ফল ধরতে লাগলো তখন কিভাবে যে এই ফলের প্রেমে পড়ে গেলাম জানি না। ফলগুলো খুব সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।
বাড়িতে বসেই ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন ড্রাগন ফল।

আব্দুল জোহাদ তার নিজের ছাদ বাগানের নাম দিয়েছেন জোহাদ কৃষি উদ্যোগ । সেই নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে ড্রাগন চাষের খুঁটিনাটি পরামর্শ দিচ্ছেন আব্দুল জোহাদ সাহেব । ভোরে উঠে গাছের পরিচর্যার পাশাপাশি শরীর চর্চা ও হচ্ছে।শরীর সুস্থ, নিরোগ রাখতে তিনি ব্যবসার থেকে ও এখন বেশি মনোনিবেশ করেছেন ড্রাগন ফলের চাষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *