বীরভূম, ১১ জুলাই (হি. স.) : ব্যবধান যাই হোক, শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোটে জিতে খবর হলেন বিজেপির এককালের দাপুটে নেতা দুধকুমার মণ্ডল। বীরভূমের ময়ুরেশ্বরে গ্রাম পঞ্চায়েতে লড়ে জয়ী হলেন দুধকুমার। এর আগে চার বার গ্রাম পঞ্চায়েত এবং এক বার পঞ্চায়েত সমিতিতে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। এবারও জিতে পরপর ছয়বার জিতলেন দুধকুমার।
কোনওরকম দেওয়াল লিখন না পোস্টার ব্যানার লিখে নয়, শুধুমাত্র মৌখিক প্রচারের মাধ্যমেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি। জয়ের পরে খুব স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত বিজেপির এই নেতা। একটা সময় বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের কার্যত ‘চোখে চোখ রেখে’ কথা বলতেন দুধকুমার মণ্ডল। দীর্ঘদিন ধরেই জেলায় বিজেপির অন্যতম মুখ তিনি। এর আগেও নেমেছেন নির্বাচনী লড়াইতে। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৮ এবং ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৪ বার গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন দুধকুমার। এর মধ্যে ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ এবং ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত প্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০০৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন দুধকুমার। আর ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ছিলেন জেলা পরিষদে।
এছাড়া বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের লড়াইতেও নামেন বিজেপির এই নেতা। ২০১১ সালে ময়ূরেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে এবং ২০১৬ সালে রামপুরহাট বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়েন তিনি। যদিও জয়ী হতে পারেননি। এরপর ২০১৯ সালে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকেও ভোটে লড়েন তিনি। যদিও শতাব্দী রায়ের বিরুদ্ধে ৮৫,০০০ ভোটে পরাজিত হন দুধকুমার।নির্বাচনী লড়াইয়ের পাশাপাশি জেলায় দলের সংগঠনের দায়িত্বেও ছিলেন দুধকুমার মণ্ডল। একসময় জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। জেলা সভাপতি থাকাকালীন তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন দুধকুমার।
২০২২ সালে তাঁকে শোকজ করেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁকে কোনওরকম রাজনৈতিক বক্তব্য রাখতেও নিষেধ করা হয়।এই বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন দুধকুমার। একটা সময় শোনা গিয়েছিল দল প্রতীক না দিলে নির্দল প্রার্থী হিসেবেও ভোটে লড়তে পারেন তিনি। যদিও পরবর্তী ক্ষেত্রে তাঁকে টিকিট দেয় বিজেপি। তার প্রেক্ষিতে নির্বাচনী লড়াইতে নামেন দুধকুমার।
তবে লক্ষ্য করার মতো বিষয় হল, এবারের নির্বাচনে কোনওরকম দেওয়াল লিখন, বা ব্যানার পোস্টারের সাহায্য নেননি তিনি। গোটা প্রচারটাই চলেছে মৌখিকভাবে। আর তাতেই এসেছে সাফল্য। ব্যালট বাক্স খোলার পর গণনা শেষে দেখা যায়, কম ব্যবধানে (২০০, মতান্তরে ১৪৫) জয় পেয়েছেন দুধকুমার মণ্ডল। তাতেই খুশির হাওয়া জেলা বিজেপির অন্দরের একাংশে।
অন্যদিকে কীর্নাহার ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জয়ী বিজেপির বোলপুর জেলার সাংগঠনিক সভাপতি সন্ন্যাসী চরণ মণ্ডল। ৯০ টি ভোটে জয়ী তিনি। নানুর ব্লকের ১৪৮ নম্বর বুথ থেকে দাঁড়িয়েছিল। মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার দিন তাঁর গাড়ি আটকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরে তাঁকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল।