সন্ত্রাস বন্ধ করতেই হবে, এক ফোঁটা রক্তও যেন না ঝড়ে : রাজ্যপাল

ক্যানিং, ৩ জুলাই (হি.স.) : আরও একবার সন্ত্রাস মুক্ত বাংলার কথা বললেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। সোমবার উত্তরবঙ্গ সফর থেকে ফিরে বাসন্তীর সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শণ করেন রাজ্যপাল। সেখান থেকে ক্যানিংয়ের সেচ দফতরের বাংলোয় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি আবারও শান্তিপূর্ণ, রক্তপাতহীন অবাধ নির্বাচন করানোর জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেন।

এদিন তিনি বলেন, “ মানুষের রক্ত নিয়ে রাজনৈতিক হোলি বন্ধ হওয়া উচিৎ। আমি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছি যেখানে সন্ত্রাস হয়েছে। তবে আমি পরিস্কার করে বলতে চাই, আমি কোন ফাঁক ফোঁকর খুঁজতে বাংলার বিভিন্ন সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় যাচ্ছি না, আমি যাচ্ছি কেন এই সন্ত্রাস হচ্ছে সেটা জানতে, সেটা বুঝতে। আমি দেশের সংবিধান মেনে এবং রাজ্যপালের এক্তিয়ার মেনেই এই কাজ করছি।” তিনি আরও বলেন, “ আমার সহকর্মী রাজ্য নির্বাচন কমিশন আমাকে জানিয়েছেন রাজ্যের কিছু কিছু মুষ্টিমেয় জায়গায় এই অশান্তি হচ্ছে। আমিও সেই সমস্ত সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় যাচ্ছি, কেন এই অশান্তি হচ্ছে তা বোঝার জন্য। রাজনৈতিক অশান্তি কেন হচ্ছে, কারা আছে এই অশান্তির পিছনে, সেগুলি খুঁজে বের করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।” তিনি বলেন, “ এই রাজনৈতিক সন্ত্রাসের মধ্যে পড়ে সাধারন মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে। ভোটের জন্য আর এক বিন্দু রক্ত যাতে না পড়ে সেটা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। আমি ইতিমধ্যেই ক্যানিং, ভাঙড়, বাসন্তী, কোচবিহার, দিনহাটা, সিতাই, শিলিগুড়ির মত সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় আমি গিয়েছি। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলেছি। যাতে এলাকার সাধারন মানুষ নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন সেই আশ্বাস দিয়েছি। তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করেছি।” রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সন্ত্রাসের আগুন জ্বলছে, কিন্তু সেই আগুন যাতে আরও ছড়িয়ে না পড়তে পারে সেই চেষ্টা করার কথা বলেন রাজ্য পাল।

তিনি বলেন, “ আমরা হয়তো এই মুহূর্তে সেই আগুন সম্পূর্ণ নিভিয়ে ফেলতে পারবো না, তবে আগুন যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেই চেষ্টা করা সম্ভব।” ভারতের সংবিধানে রয়েছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। সেই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের বলেও এদিন আরও একবার বলেন তিনি। হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে এই অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের। কোর্টের সেই নির্দেশকে পালন করতে হবে কমিশনকে। তিনি আরও বলেন, “ আমি বিশ্বাস করি নির্বাচন কমিশন আদালতের এই নির্দেশ পালন করবেন।” তিনি আরও বলেন, “ আমি আমার উপলব্ধি জানিয়েছি আমার সহকর্মী নির্বাচন কমিশনকে। আমি এও বলেছি এই অশান্তির পিছনে মূল মাথা কে সেটা তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করে বের করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আগামি ৪৮ ঘন্টা আমিও দেখতে চাই হাইকোর্টের নির্দেশ কতটা পালন করা হল। আমি বুঝতে পারছি কারা এই অশান্তির পিছনে রয়েছে। ৪৫ বছর প্রশাসনের বিভিন্ন পদে কাজ করার সুবাদে এটা আমার বুঝতে অসুবিধা হয় নি। আমি সেই রিপোর্ট কার্ডও নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেব। সংবিধানের আওতায় থেকে আমি এই কাজ করবো।” একজন রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর দায়িত্ব মানুষকে নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া, একথা তিনি আরও একবার এদিন বলেন।