বিচ্ছিন বরাক উপত্যার তিন জেলা সহ ত্ৰিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুর
সোনাপুর (মেঘালয়), ১৭ জুন (হি.স.) : কাদা-মাটির স্তূর সরানোর পর প্রায় আধঘণ্টার মধ্যে আবারও মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়াপাহাড় জেলার সোনাপুরের বুক চিরে ধাবিত গুয়াহাটি-বরাক উপত্যকা ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে লাগোয়া পাহাড় থেকে ধসের স্রোত বইছে।
গতকাল শুক্রবার ভোর, বিকাল সাড়ে তিনটার পর আজ শণিবার ভোররাতে সোনাপুর টানেলের সম্মুখবর্তী জাতীয় সড়কের ওপর পাহাড় থেকে আবারও জল-মিশ্রিত কাদামাটি ও বড় বড় পাথরের ধস পড়ায় হাজার হাজার ভারী পণ্যবাহী লরি এবং যাত্রীবাহী ছোট ও বড় গাড়ি রাস্তার দু পাশে আটকে পড়েছে। বেশ কয়েকটি পণ্যবাহী লরি কাদার স্রোতে বিপদসংকুল অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।
তবে নতুন করে সংঘটিত বিপর্যয়ে প্রাণহানীর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে ইস্ট জয়ন্তিয়াপাহাড়ের জেলাশাসক ওই সড়কে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সবধরনের যানবাহনকে সাময়িকভাবে যাতায়াত করতে বারণ করেছেন। অতি প্রয়োজনে বিকল্প পথে যাতায়াত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
কয়েকদিন থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যজুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে ভূমিধসের একাধিক খবর পাওয়া গেছে। গত ২৭ মের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই পাহাড় থেকে কাদা–মাটির প্রবল স্রোত বয়ে চলেছে জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে। গতকাল শুক্ৰবার দিনে দুবার, প্রথম ভোরের দিকে ও পরে বিকেল প্রায় সাড়ে তিনটে নাগাদ কাদামাটির ধস পড়ে জাতীয় সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়ে পড়েছিল। প্ৰতিবারই বিআরও-র জওয়ানরা অক্লান্ত পরিশ্ৰম প্ৰায় আট থেকে দশ ঘণ্টার মধ্যে সড়কটি সম্পূৰ্ণ সচল করে তুলেন। এর পর ওই সড়কে ফের যানবাহন চলাচল শুরু হয়। গত বুধবার অসমের পরিবহণ, আবগারি ও মৎস্য দফতরের মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যও ধসে আটকা পড়েছিলেন। মন্ত্রী শুক্লবৈদ্যও অন্যদের সঙ্গে পা মিলিয়ে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে কাদা-মাটির স্তূপ পায়ে হেঁটে পার হয়েছিলেন।
গতকালের মতো আজও ধসের স্রোতের সঙ্গে লড়াই করছেন বিআরও-এর জওয়ান এবং মেঘালয়ের পূর্ত দফতরের কর্মীরা। তাঁরা কয়েকটি এসকেভেটরের সাহায্যে পণ্যবাহী ট্রাক সহ অন্য যানবাহনকে কাদার স্তূপ থেকে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়াপাহাড় জেলার সোনাপুরের একই স্থানে ঘন-ঘন ধস পড়ে জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের অন্য অংশের সঙ্গে যাতায়াত ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে বরাক উপত্যার তিন জেলা কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি এবং ত্ৰিপুরা, মিজোরাম ও মণিপুরের একাংশ৷