১১ জুন ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারী সমন্বয় সমিতির কনভেনশন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ মে৷৷   রাজ্য সরকারি কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষের উপর ক্রমাগত হামলা নির্যাতনের প্রতিবাদে আগামী ১১ জুন আগরতলায় কনভেনশনের ডাক দিয়েছে ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারী সমন্বয়ে সমিতি৷ মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়৷ সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়েছে, , বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই শাসক দলের মদত স্পষ্ট একদল সমাজ বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাস করছে৷ এই সন্ত্রাসের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা ত্রিপুরা রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীরা৷ অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না৷ গোটা রাজ্যে চলছে এক জঙ্গলের রাজত্ব৷মঙ্গলবার মেলারমাঠস্থিত সমন্বয় ভবনে ত্রিপুরা কর্মচারী সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানান সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বল৷ তিনি বলেন, নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর ত্রিপুরা কর্মচারী সমন্বয় কমিটি কল্যাণপুর শাখা অফিসটি শাসক দলের দুর্বৃত্তরা জবরদখল করে নেয়৷  উদয়পুর বিভাগীয় অফিসটিও শাসক দলের দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে পুড়ে ফেলার চেষ্টা করে৷ ছৈলেংটা শাখা অফিসটি আগুন লাগিয়ে পুড়ে ফেলে  ৷ ধর্মনগর জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লিজ নেওয়া জমির উপর ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারী সমিতি নিজেদের অর্থ ব্যয় করে পাকা বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল৷ বিধানসভা নির্বাচনের পর গত ২২ এপ্রিল অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন, জেলা শাসক ও কালেক্টরের উপস্থিতিতে অবৈধভাবে দখল করে প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্র সরকারিভাবে চালু করা হয়৷ ফলে সরকারি প্রশাসনের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্ণের মুখে এনে দাঁড় করিয়েছে৷ দিকে দিকে এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার জন্য প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে৷ তিনি আরো বলেন ,রেহাই পাচ্ছে না সরকারি কর্মচারীরা৷ ধর্মনগরেই নিজ অফিসে আক্রান্ত হন একজন পুর কর্মচারি, একজন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, একজন মহিলা করনিক৷ কৃষি দপ্তরের উদ্যান ও ভূমি সংরক্ষণ বিভাগের উত্তর জেলা অফিসের করনিক, ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারি সমিতির কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য জয়দীপ দেবনাথ অসুস্থতা নিয়ে ছুটি কাটিয়ে গত ২ মে মঙ্গলবার কাজে যোগ দিলে শাসক দল আশ্রিত দুষৃকতিকারীরা তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় চন্দ্রপুরের একটি ক্লাবে৷ সেখানে তাকে প্রচণ্ড ভাবে মারপিট করে মারাত্মক ভাবে আহত করে৷আহত অবস্থায় অফিসে ফিরে এলে ঐ সমাজদ্রোহীরা এসে তাকে হুমকি দেয়, ১ লক্ষ টাকা না দিলে তাকে ধর্মনগরে অফিস করতে দেওয়া হবে না৷ বেসরকারি বিদ্যালয়ের দুইজন শিক্ষককে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়৷ কমলপুরে একজন শিক্ষিকার বাড়িতে আগুন ধরানোর চেষ্টা হয়৷ উদয়পুরে ৩ জন শিক্ষক-কর্মচারি নেতৃত্বের বাড়িতে ভাঙচুর ও বোমা নিক্ষেপ করা হয়৷ মোহনপুরে শিক্ষক কর্মচারি নেতৃত্বের রাবার বাগান পুড়িয়ে দেওয়া, বাড়িতে আগুন লাগানোর মত ঘটনা ঘটেছে৷ বিশালগড়ে ২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নেতৃত্ব দৈহিকভাবে আক্রান্ত হয়েছে৷ আরো ৫ জন নেতৃত্বের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে৷এছাড়া সোনামুড়া, বিলোনিয়া, শান্তিরবাজার সহ বিবিন্ন মহকুমায় বিশাল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারি নেতৃত্ব দৈহিক ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন৷ বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে৷ অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন৷ মানসিক নির্যাতন চলছে রাজ্য জুড়ে৷ চলছে প্রচণ্ড চাঁদার জুলুম৷ প্রতিটি ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান ত্রিপুরা কর্মচারি সমন্বয় কমিটি৷ প্রতিটি ক্ষেত্রে সমাজ বিরোধীদের শাস্তি দাবি করছে সংগঠন৷  এই ঘটনাগুলির প্রতিবাদে আগামী ১১ জুন আগরতলায় ৮ দফা দাবি নিয়ে যৌথ কনভেনশন করা হবে৷ তারপর ধারাবাহিক ভাবে লড়াই আন্দোলন চলবে বলে জানান স্বপন বল৷ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মহুয়া রায় সহ অন্যান্যরা৷