ইমফল, ৮ মে (হি.স.) : মণিপুরে সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা ৩৭। দাবি রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিঙের। মণিপুরে সাম্প্রতিক সহিংসতার পর মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টে বলা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা ৬৫ ছুঁয়েছে। অথচ মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং আজ সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, প্রশাসনিক স্তরে যাচাই করে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্ৰাক্তন সিআরপিএফ-প্রধান সদ্য নিয়োজিত মণিপুর সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং এই তথ্য দিয়ে জানান, মৃত্যু সংক্রান্ত ঘটনাগুলির যাচাই প্রক্রিয়া সময় নিচ্ছে। কেননা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখনও মৃতদেহ উদ্ধার করছে নিরাপত্তা বাহিনী। গতকাল জঙ্গল থেকে আরও তিনটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি। এই যে তিন মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, তাদের মৃত্যু সহিংসতার ফলে, না-কি অন্য কারণে সংঘটিত হয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষ, বলেন কুলদীপ সিং।
তিনি বলেন, অনিশ্চিত পরিস্থিতি সত্ত্বেও সরকার দ্রুত সহিংসতা প্রতিরোধ করে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ এবং ফোর্স কমান্ডারদের মধ্যে ঘন ঘন সমন্বয় বৈঠক হচ্ছে।
সহিংসতার জন্য এ পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে ২০৮টি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। দুৰ্বৃত্তদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, স্থানীয় পুলিশের কাছ থেকে বিপুল সংখ্যক অস্ত্র লুট করা হয়েছে। সেগুলি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা সিং বলেন, ফ্ল্যাগমার্চ ও অবিরত টহলের মাধ্যমে জনগণের অভয় প্রদান করে আস্থা তৈরি করার আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। এলাকায় সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতা এবং বিবদমান গোষ্ঠীগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি কমিটির সভাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং জানান, সহিংসতার ফলে যাঁরা আটকে পড়েছেন তাঁদের সাহায্য করতে সরকারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ইমফল, চূড়াচাঁদপুর, মোরে এবং অন্যান্য স্থানে নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় পুলিশ কর্তৃক স্থাপিত ক্যাম্প সহ অন্যান্য জায়গায় ৩৫ হাজারের বেশি নাগরিক আশ্রয় নিয়েছেন। সেনা এবং আধা-সামরিক বাহিনীর প্রহরায় ওই সব লোকদের তাঁদের বাড়িতে ফিরে যেতে সাহায্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রায় ২০ হাজার মানুষ ইতিমধ্যেই তাঁদের ঘরে ফিরে গিয়েছেন। ১৫ হাজার এখনও শিবিরগুলিতে রয়েছেন। যাদের ফ্লাইট ধরতে হবে তাঁদের জন্য বিমানবন্দরে এসকর্টের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।