গুয়াহাটি, ২৩ এপ্রিল (হি.স.) : কালবৈশাখীর তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গেছে অসমের বিভিন্ন প্রান্ত। প্ৰচণ্ড ঘূর্ণিঝড়, শিলাবৃষ্টি, ব্ৰজ্ৰপাতে অসমের বিভিন্ন প্রান্তে তিনজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জানা গেছে, আপার আসামের তিনসুকিয়া জেলায় দুজন এবং নগাঁও জেলার কলিয়াবরে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, তিনসুকিয়া জেলার অন্তর্গত ডুমডুমার বরহাপজান এলাকার মোলানপথার গ্রামে গাছের চাপায় মৃত্যু হয়েছে বছর ৫৮-এর জনৈক বিজয় মানকির। গতকাল রাতে প্রচণ্ড বেগে ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসলে গৃহকর্তা দিনমজুর বিজয় মানকি স্ত্রী, ছেলে, ছেলেবউ, নাতি সহ ছয়জন ঘর থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেরিয়েছিলেন। তখন একটি গাছের বিশাল ডাল বিজয় মানকির উপর আছড়ে পড়ে। গাছের চাপায় ঘটনাস্থলেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
প্রকৃতির তাণ্ডবে বড়ডুবি চা বাগানের ১ নম্বর লাইনের জনৈক দেবকুমার ঠাকুর (২৭)-এর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। জানা গেছে, জনৈক সতীৰ্থের সঙ্গে মোটর বাইকে ডুমডুমা থেকে স্বগৃহে যাচ্ছিলেন দেবকুমার। কিন্তু বাদলাবেটা চা বাগানের রাস্তায় আসার পর তাদের ওপর একটি গাছ উপড়ে পড়ে। দেবকুমার ঠাকুরের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু ঘটে এবং তাঁর সতীর্থ আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে নগাঁও জেলার কলিয়াবরে বামুনি ভাটাবাড়িতে ব্ৰজপাতে মৃত্যু হয়েছে নুর মহম্মদ আলি নামের এক ব্যক্তির। স্নান করে বৃষ্টির মধ্যে ঘরে যাওয়ার সময় বজ্রপাত হয় তার ওপর, তে ঝলসে যান তিনি। ঘটনা গতকাল ঈদের সন্ধ্যায় সংঘটিত হয়েছে বলে খবর।
এদিকে উজান থেকে নিম্ন এবং বরাক উপত্যকার বিস্তীৰ্ণ এলাকা গত দুদিন ধরে দফায় দফায় তুফান, ঘূর্ণিঝড়, শিলবর্ষণ সহ প্রবল বৃষ্টিপাতে তছনছ হয়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত। উজান থেকে নিম্ন অসমের শতাধিক বাসিন্দার বাড়িঘর উড়িয়ে নিয়ে গেছে প্রবল ঝড়। শতাধিক গাছগাছালি উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের ওপর গাছ কিংবা গাছের ডাল পড়ে যাওয়ায় অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি ধরাশায়ী হয়েছে। ফলে শতাধিক গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাস্তায় গাছ পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বহু এলাকা। এছাড়া কৃষকদের ঝিঙা, মিষ্টিকুমড়ো, কুমড়ো জাতীয় মরশুমি সবজি খেতেরও বিস্তর ক্ষতি হয়েছে৷
সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে নগাঁও জেলার ধিং রাজস্ব সার্কলের অন্তৰ্গত বটদ্ৰবা মৌজার টুকটুকি, ধনিয়াভেটি, আমলকি, চমকা, ভেরভেরি, শালনাবাড়ি প্রভৃতি গ্রাম। এছাড়া বঙাইগাঁও জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়ও আছড়ে পড়েছে কালবৈশাখী।
ডুমডুমা বঙ্গীয় বিদ্যালয় চত্বরে বিদ্যমান একটি বিশাল গাছ রোটারি রোডের ওপর উপড়ে পড়ে ওই রাস্তায় যাতায়ত ব্যাহত হয়ে পড়েছিল। তবে বন কর্মীরা গাছটি কেটে রাস্তা পরিষ্কার করেছেন।

