পাঁচগ্রাম (অসম), ১৬ এপ্রিল (হি.স.) : এক সঙ্গে ৩৫০টি রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার চুরি করে নববর্ষের প্রথম রাতে হালখাতা খুললো নিশিকুটুম্বের দল। ঘটনাটি ঘটেছে হাইলাকান্দির জেলার পাঁচগ্রামে।
পাঁচগ্রাম সদর থানার বিপরীতে বিদ্যমান ধলেশ্বর গ্যাস এজেন্সি থেকে শনিবার রাতে এই চুরির ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। রাতের অন্ধকারে লোহার শাটার ভেঙে একের পর এক সিলিন্ডার গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায় চোরের দল।
আজ রবিবার সকালে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসলে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকাজুড়ে। খবর পেয়ে উপস্থিত হয় পাঁচগ্রাম থানা থেকে পুলিশের দল। তাঁরা ঘটনার সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন। জাতীয় সড়কের পাশে বিদ্যমান গ্যাস এজেন্সির গোডাউনে এহেন দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় আতংকিত এলাকার মানুষ। থানার ওসির বিরুদ্ধে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে নালিশ জানিয়েছেন দুই বিধায়ক। পাশাপাশি ওসিকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন আমজনতা। পাঁচগ্রাম পুলিশ তদন্তে নামলেও প্রতিবেদন পাঠানো পর্যন্ত কোনও সাফল্যের খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সকালেই উপস্থিত হন আলগাপুরের বিধায়ক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী এবং কাটিগড়ায় বিধায়ক খলিল উদ্দিন মজুমদার। পুলিশের নাকের ডগায় এহেন দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা সংগঠিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুই বিধায়ক।
ক্ষুব্ধ বিধায়ক নিজাম বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে মোটেই চিন্তিত নয় পাঁচগ্রাম পুলিশ। তাঁরা ব্যস্ত সুপারির গাড়ি ধরতে আর তার হিসাব নিতে। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাঁচগ্রাম পুলিশের উপর জনগণের কোনও আস্থা নেই। কারণ এই কয়েকদিনের মধ্যেই পাঁচগ্রাম থেকে কাটাখাল অবধি প্রায় ১০০টি গাড়ির ব্যাটারি চুরি হয়েছে। তার ব্যক্তিগত গাড়ির তিনটি ব্যাটারিও চুরি করে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীর দল। কিন্তু পুলিশের তদন্ত কোনও সাফল্য লাভ করতে পারেনি। বিধায়ক বলেন, পাঁচগ্রাম থানার ওসিকে এ নিয়ে বার বার সতর্ক করে দেওয়া সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি।
নিজাম বলেন, চুরিকান্ডে জড়িত স্থানীয় মাদকাসক্ত যুবকরা। দিনের বেলা মাদক সেবন করে আর তারাই রাতে মাদকের টাকা জোগাড় করতে ছোট-বড় চুরিকাণ্ড ঘটায়। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি চুরি যাওয়া সিলিন্ডার উদ্ধার এবং এলাকার পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তা-হলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিধায়ক। প্রয়োজনে থানা ঘেরাও করা হবে, বলেন তিনি।
বিধায়ক খলিল উদ্দিন মজুমদার বলেন, পুলিশ প্রশাসন বর্তমানে লাইমস্টোন, কয়লা, বার্মিজ সুপারি নিয়ে ব্যস্ত। ছোট-বড় একাধিক চুরির ঘটনা ঘটে গেলেও এ সব ব্যাপারে কোনও খেয়ালই নেই পাঁচগ্রাম পুলিশের। বলেন, পুলিশ প্রশাসন যদি তদন্ত ক্রমে ঘটনার কোনও সুরাহা না করতে না পারে, তা-হলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।