হুগলী, ৯ এপ্রিল(হি.স.) : হুগলীর পোলবা থানা এলাকায় মুখে মাদক জাতীয় পদার্থ ছিটিয়ে এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ । শনিবার রাতের এই ঘটনায় রবিবার তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
স্থানীয় ও পারিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা নাবালিকা স্থানীয় একটি স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। শনিবার বিকেলে টিউশন যাওয়ার জন্য সে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেনি। সন্দেহ হওয়ায় পরিবারের লোকজন মেয়েটির খোঁজ শুরু করেন। প্রথমেই নাবালিকার মা-বাবা ফোনে গৃহ শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান এদিন পড়াননি। এরপরই নাবালিকার পরিবার মৌখিকভাবে বিষয়টি পোলবা থানায় জানান। শনিবার সারারাত আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি খোঁজাখুঁজি করেও নাবালিকার সন্ধান পাননি বাবা ও মা। রবিবার ভোরে বিধ্বস্ত অবস্থায় ওই নাবালিকা বাড়ি ফেরে। ফিরেই রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়ে। জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিবার জানতে পারে, এলাকারই এক পরিচিত যুবক ও তার পাঁচ বন্ধু নাবালিকার উপর নৃশংস যৌন নির্যাতন চালিয়েছে।
জানা গিয়েছে, টিউশন বন্ধ জেনে বন্ধুদের সঙ্গে স্থানীয় একটি হাটে যায় নাবালিকা। ফেরার পথে বন্ধুরা যে যার মত বাড়ি চলে গেলে ওই নাবালিকা একা বাড়ি ফিরছিল। নাবালিকার অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার একটি ছেলে বিজন রায় তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে নানা রকম ভাবে উত্যক্ত করছিল। এদিন ওই যুবক বিজন রায় ও তার বন্ধুরা দুটি স্কুটিতে করে এসে নাবালিকার পথ আটকায়। অভিযোগ, নাবালিকাকে ফের বিয়ের প্রস্তাব দেয় বিজন। কিন্তু নাবালিকা তা প্রত্যাখ্যান করায় বন্ধুরা তার দুই হাত চেপে ধরে মুখের মধ্যে গ্যাস জাতীয় পদার্থ দিয়ে অচৈতন্য করে দেয়।
ভোররাতে যখন ওই নাবালিকার জ্ঞান ফেরে তখন দেখে যে সে একটি আমবাগানের মধ্যে পড়ে রয়েছে, জামা কাপড় ছেঁড়া। পেটে অসহ্য যন্ত্রণা। এরকম পরিস্থিতিতে কোনওরকমে বাড়ি ফিরে যায় নাবালিকা। পুরো ঘটনার কথা বাবা মাকে জানানোর পর তাঁরা স্থানীয় বিজেপি নেতা সুবীর ঘোষ ও বিমল রায়ের কাছে সাহায্যের জন্য ছুটে যান। এরপর সুবীরবাবু রবিবার দুপুরে নির্যাতিতার বাবা-মাকে পোলবা থানায় নিয়ে যান। নাবালিকার মা অভিযুক্ত বিজন রায় ও তার পাঁচ বন্ধু বিরুদ্ধে গণধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পোলবা থানার পুলিশ তদন্ত নেমে তিন জনকে গণধর্ষণের এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে। বিজেপি নেতা সুবীর বাবু জানান, এর সঙ্গে কোনও রাজনীতি জড়িয়ে নেই।