ঝাড়গ্রাম, ২১ মার্চ ( হি. স.) : পরপর হাতির হানায় নিহত ও আহতের ঘটনা ঘটতে থাকায় ব্যাপক আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা। গত তিন দিনে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের এবং আহত হয়েছেন এক জন। যার মধ্যে সোমবার রাতে দুটি পৃথক ব্লকে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। মঙ্গলবার সকালে নয়াগ্রাম ব্লকের চাঁদাবিলা রেঞ্জের চাঁদাবিলা এলাকায় হাতির হানায় জখম হয়েছেন কার্তিক রানা নামে এক ব্যক্তি। আহত ব্যক্তিকে স্থানীয় মানুষজনেরা উদ্ধার করে নয়াগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান।
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে নমিতা মাহাত (৬৫)। বাড়ি মাণিকপাড়া রেঞ্জের বালিয়া গ্রামে। ও সাঁকরাইল ব্লকের চুনপাড়া এলাকায় হাতির হানায় মৃত্যু হয় সুজিত মাহাত (৩৪)। এর বাড়ি মাণিকপাড়া ফাঁড়ি থানার ইন্দখাড়া গ্রামে। বনদফতর ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে সোমবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর থেকে বাইকে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন সুজিত সহ তিন বন্ধু। সেই সময় চুনপাড়া এলাকায় একটি হাতির মুখোমুখি হয়ে যায়। রাস্তা বেহাল অবস্থা হওয়ার কারণে বাইক জোর চালাতে পারনি। যার বাইক ছেড়ে পালানোর সময় সুজিত মাহাতকে শুঁড় দিয়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। অন্যদিকে মাণিকপাড়া রেঞ্জের বালিয়া গ্রামে ঢুকে খাবারের সন্ধানে বাড়িঘর ভাঙ্গচুর চালায় ৬ থেকে ৭ টি হাতির দল। হাতি ঘর ভাঙছে দেখে প্রাণ বাঁচাতে ঘরে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। ওই সময় একটি নমিতা মাহাতকে শুঁড়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পরে নিহত মহিলা ও যুবককে এদিন রাতেই ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। অন্যদিকে রবিবার দুপুরে নায়াগ্রাম ব্লকের বড় নেগুই গ্রামের এক গৃহবধূ দৈমন্তি মাহাত (২৫) জঙ্গলে কাঠ পাতা সংগ্রহ করতে গিয়ে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে। গত তিনদিনে পর পর হাতির হানায় মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঘটতে থাকায় উদাসিনতার অভিযোগ তুলেছে বাসিন্দারা। দ্রুত হাতি তাড়ানোর দাবি তুলছেন বাসিন্দারা। যদিও বনদফতরের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে বারে বারে মানুষজনকে সচেতন করা হচ্ছে। যে এলাকায় হাতি রয়েছে সমস্ত এলাকায় মাইকিং করে সচেতন করা হয়, সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে বাইরে হতে নিষেধ করা হয়। তা সত্ত্বেও মানুষজন বন দফতরের নির্দেশকে অমান্য করে বাইরে ঘোরাঘুরি করেন। মানুষ সচেতন না হলে হাতির হানায় মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঠেকানো সম্ভব হবে না। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে নয়াগ্রাম ব্লকের কেশররেখা রেঞ্জ এলাকায় ১২ টি, সাঁকরাইল ব্লকের ৬ থেকে ৭ টি হাতি রয়েছে। এবিষয়ে খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, ” হাতির হানায় মৃত ব্যক্তির পরিবারের হাতে চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে পাঁচ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হচ্ছে।এদিন হাতির হানায় আহত ব্যক্তি চিকিৎসার পর বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। আমরা হাতি গুলিকে দ্রুততার সাথে নিরাপদ স্থানে সরানোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। “

