ঝাড়গ্রাম, ১৯ মার্চ (হি. স.) : জঙ্গলে কাঠ, পাতা সংগ্রহ করতে গিয়ে আবারও হাতির হানায় মৃত্যু হল এক গৃহবধূর।রবিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়্গ্রাম জেলার ওড়িশা সীমান্তবর্তী নয়াগ্রাম রেঞ্জের পাঁচকাহানিয়া বীটের ছোটোনেগুই এলাকায়।
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত গৃহবধূর নাম দৈমন্তি মাহাত (২৫) বাড়ি বড়নেগুই গ্রামে।স্থানীয় ও বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে এদিন দুপুরে বড়নেগুই গ্রামের পাশে জঙ্গলে কাঠ, পাতা সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন গ্রামের বেশ কয়েকজন মহিলারা। গ্রামের ওই মহিলাদের সাথেই দৈয়ন্তী মাহাতোও জঙ্গলে গিয়েছিলেন। কাঠ, পাতা সংগ্রহ করার সময় দৈমন্তী মাহাতো একটি হাতির মুখোমুখি হয়ে যায়। এরপর হাতিটি দেখতে পেয়ে তিনি পিছন ফিরে পালানোর সময় শুঁড় দিয়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর। পরে ওই গৃহবধূর চিৎকারে শুনে জঙ্গলে থাকা পাশাপাশি মানুষজনেরা এসে দেখেন একটি হাতি ওই গৃহবধূর উপর আক্রমণ চালিয়েছে। এরপর হাতিটিকে তাড়ানোর পর গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে নয়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষনা করেন। এরপর মৃত ওই গৃহবধূর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঝাড়্গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেন। এদিকে মৃত মহিলার খবর গ্রামে পৌছানোর পরেই গোটা এলাকা জুড়ে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে ওড়িশা সীমান্তবর্তী চাঁদাবিলা রেঞ্জ এলাকায় সাত থেকে আটটি হাতি রয়েছে। এই হাতি গুলি ওড়িশার দিক থেকে এসেছে বলে বনদফতর সুত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ওডিশা সীমান্তবর্তী নয়াগ্রাম ব্লকের কেশররেখা রেঞ্জের বালিমুন্ডি এলাকায় হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে আটান্ন বছরের ধানী হেম্ব্রম নামে এক মহিলার। এদিকে একের পর এক হাতির হানায় মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঘটতে থাকায় উদ্বেগ বাড়ছে বনদফতরের। হাতির দলকে সামাল দিতে নাজেহাল অবস্থা বনকর্মীদের।
গত চার ফেব্রুয়ারি কেশররেখা রেঞ্জের জামডহরা গ্রামে হাতির আক্রমণে গুরুতর ভাবে জখম হয়েছিলেন ক্ষুদিরাম মুর্মু নামে এক ব্যক্তি। তার আগে গত ২৮ জানুয়ারি রাতে গিধনী রেঞ্জের বড়রাজগ্রামে হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। এবং ১৭ জানুয়ারি নিজের বাড়ির সামনে আগুন পোহানোর হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। এবিষয়ে খড়্গপুর বন বিভাগের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন,” ওই এলাকায় সাত থেকে আটটি হাতি রয়েছে। এদিন ওই গৃহবধূ জঙ্গলে কাঠ, পাতা সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় একটি হাতির সামনে পড়ে গেলে তাঁকে শুঁড়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পাবেন।”