শিলচর (অসম), ১৮ মার্চ (হি.স.) : কাছাড় জেলার সদর শিলচর মধুরবন্ধ ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের আট বছরের শিশু আয়ান মঞ্জুর বরভুইয়া খুনের ঘটনায় গ্রেফতার আরো এক । গত ১১ মার্চ মর্মান্তিক লোমহর্ষক ঘটনার পর আয়ানের পিতা মঞ্জুরুল হক বরভুইয়ার দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ গতকাল রাতে কাছাড় জেলার শালচাপড়া এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত সজীব উদ্দিন মজুমদারকে পুলিশ গ্রেফতার করে । তবে মামলায় অভিযুক্ত হাসান লস্কর, বাপ্পু মজুমদার, পাপ্পু মজুমদার এখনো পলাতক বলে জানা গেছে ।
উল্লেখ্য, মর্মান্তিক লোমহর্ষক ঘটনাটি গত শনিবার বেলা একটা নাগাদ মধুরবন্দের ওয়াটার ওয়ার্কস রোডে সংগঠিত হয় । মধুরবন্দের মঞ্জুরুল বড়ভুইয়াঁ এবং আলাউদ্দিন মজুমদাররে মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এক জমি বিবাদ চলছিল। আর সেই জমি বিবাদই রক্তাক্ত রূপ নেয় শনিবার মধুরবন্দে। বিতর্কিত জমিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে ঝগড়া শুরু হলে একসময় রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। ওয়াটার ওয়ার্কস রোডে বাড়ির সামনে আচমকা দৌড়ে এসে আয়ানমঞ্জুর বড়ভুইয়াঁর গলা টিঁপে ধরে ছুরি দিয়ে আঘাত করে আলাউদ্দিন মজুমদারের ছেলে অপু মজুমদার। এর পর স্থানীয়দের সাহায্য নিয়ে পরিবারের সদস্যরা রক্তাক্ত আয়ানকে উদ্ধার করে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিকাল তিনটা নাগাদ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে আট বছরের আয়ানমঞ্জুর।
এদিকে, প্রকাশ্য দিবালোকে ছুরিকাঘাত করে শিশু খুনের ঘটনা ধরা পড়ে ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের এক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে সংস্থাপিত সিসিটিভি ক্যামেরায়। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে খুনিকে শনাক্ত করে। এর পর ঘটনার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে শিলচর শহরের এক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় শিশু-খুনি অপু মজুমদারকে।
ওইদিন মঞ্জুরুল হক বড়ভুইয়াঁ অভিযোগ করে বলেন, অপু, পাপ্পু সহ আলাউদ্দিন মজুমদারের তিন ছেলে এবং সাজান, হাসান, সজীবরা তাঁর ওপর প্রায়ই হামলা চালাত। একাধিকবার প্রাণে মারার হুমকিও দিয়েছিল। বাড়িতে আক্রমণ করলে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও ধরনের তত্পরতা না দেখানোয় ছেলেকে খুন হতে হয় ।
ঘটনার পর শিলচরে এর প্রতিবাদে নামে বিভিন্ন দল সংঘটন । মোমবাতি মিছিল করে ঘটনার সঠিক তদন্ত ক্রমে বিহীত ব্যবস্থা নিতে স্মারকপত্র প্রদান করা হয় কাছাড় জেলার পুলিশ সুপারকে । ঘটনায় হতভাগ্য আয়ানের পিতার এজাহারের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে দুইজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ।

