নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ জানুয়ারী৷৷ কৈলাসহরের চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে বামেদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত রাজ্যবাসীর কাছে৷ কারণ, চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে লাগাতার পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে সি.পি.আই.এম তথা বামপন্থী দলের পক্ষ থেকে বিধায়ক ভোটে জয়লাভ করে আসছে৷ পঁয়তাল্লিশ বছরের এই লাল দূর্গে ২০২৩সালের বিধানসভা ভোটে লাল দূর্গ চুরমার হতে যাচ্ছে কি? এটাই এখন গোটা চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অলিতে গলিতে জোর চর্চা চলছে সাধারণ মানুষের মধ্যে৷ কারণ, চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে ছোট বড় মিলিয়ে মোট নয়টি চা বাগান রয়েছে৷ এই চা বাগান গুলোর বাগান শ্রমিকরাই ছিলো বামেদের মূল ভোট ব্যাংক৷ বিভিন্ন ভোটের সময়ে চা বাগান এলাকায় বামেরা প্রচুর ভোটে এগিয়ে থাকতেন৷ আর, বামেদের এই ভোট ব্যাংক এবার ভাংগতে শুরু হলো কি? কারন, দীর্ঘ কুড়ি পঁচিশ বছর ধরে চা বাগানের শ্রমিকদের প্রকৃত উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের ন্যায্য বিভিন্ন অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাগান শ্রমিকদের নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছে ত্রিপুরা চা শ্রমিক উন্নয়ন সমিতি৷ চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দের অধীনে থাকা চা বাগান শ্রমিকরাও বিভিন্ন সময়ে ত্রিপুরা চা শ্রমিক উন্নয়ন সমিতির সাথে আন্দোলন করে বিভিন্ন কিছু আদায় করায় চা বাগান শ্রমিকরাও ধারাবাহিক ভাবে ত্রিপুরা চা শ্রমিক উন্নয়ন সমিতির হয়ে প্রায়ই বিভিন্ন লড়াই আন্দোলনে প্রকাশ্যেই সামিল হয়৷ চা বাগান শ্রমিকদের আরও বেশি করে উন্নয়ন এবং তাদের প্রকৃত মর্যাদা পাইয়ে দেবার জন্য ত্রিপুরা রাজ্যের বিধানসভার ভিতরে চা বাগান শ্রমিকদের মুখের কথা তোলে ধরার জন্য ২০২৩সালের বিধানসভা ভোটে চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ত্রিপুরা চা বাগান উন্নয়ন সমিতির পক্ষ থেকে ভোটে লড়তে চাইছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়৷ তবে, ত্রিপুরা চা শ্রমিক উন্নয়ন সমিতির প্রার্থী বিধানসভা ভোটে দাঁড়ালে চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৪৫বছরের বামেদের ঘাঁটিতে শক্ত আঘাত আসবে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত৷ তাছাড়া, করোনা মহামারী চলাকালীন চা বাগান এলাকায় ত্রিপুরা চা শ্রমিক উন্নয়ন সমিতির সদস্যরা প্রতিদিন তাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন৷ এমনকি চা বাগান বন্ধ থাকলেও ত্রিপুরা চা বাগান উন্নয়ন সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী, কাপড়, ঔষধ পত্র বাগান শ্রমিকদের দেওয়া হয়েছিলো৷ এছাড়াও, শেষ দুই বছর চা বাগান শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবী আদায় করার জন্য ত্রিপুরা চা বাগান উন্নয়ন সমিতির আন্দোলনে প্রচুর সংখ্যক বাগান শ্রমিকদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছিলো৷ তবে, এব্যাপারে ত্রিপুরা চা শ্রমিক উন্নয়ন সমিতির এক সক্রিয় কর্মকর্তা জয়দ্বীপ রায়কে জিজ্ঞেস করলে উনিও প্রকাশ্যেই জানান যে, চা বাগান শ্রমিকদের আর্থিক ভাবে এবং সামাজিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠার জন্য ত্রিপুরা চা বাগান উন্নয়ন সমিতির পক্ষ থেকে চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিধানসভা ভোটে প্রার্থী দেওয়া হবে৷ এবং খুব শীঘ্রই নোমিনেশন পত্রও তোলা হবে বলে জানান
আসন্ন বিধানসভা ভোটে চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বাম কংগ্রেস মিলে বাম প্রার্থী দেওয়া হবে বলে জানা যায়৷ একই সাথে বিজেপি দলের রাজ্য কমিটির এক প্রথম শ্রেনীর দাপুটে নেতা নাকি চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি দলের প্রার্থী হবেন বলেও শোনা যাচ্ছে৷ এরই মধ্যে ত্রিপুরা চা শ্রমিক উন্নয়ন সমিতির পক্ষ থেকে চন্ডীপুর বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হবার খবর সামাজিক মাধ্যমে চাউর হতেই চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে লাগাতার ৪৫বছরের লাল দূর্গ ধরে রাখতে পারবে কি? নাকি লাল দূর্গ চুরমার হতে যাচ্ছে? নাকি বামেদের লাল ঘাটি অটুট থাকবে? নোমিনেশন পত্র জমা দেওয়ায় শেষ তারিখ হলো ত্রিশ জানুয়ারি৷ আপাতত ত্রিশ জানুয়ারি অব্দি অপেক্ষা করতে হবে, চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াই নাকি দুমুখো লড়াই হবে৷ প্রাথমিকভাবে ত্রিশ জানুয়ারির অপেক্ষা সবার করতেই হবে৷